শিরোনাম: লামা উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড়ে বিধ্বস্ত শতশত বসতবাড়ি জেলা প্রশাসকের হুঁশিয়ারিঃ উপজেলা নির্বাচনে কোনো অনিয়ম বরদাস্ত করা হবেনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনঃ প্রিজাইডিং,সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ সর্বজনীন পেনশন স্কিম সুষ্ঠ ও সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেলা বাস্তবায়ন কমিটির প্রস্তুতি সভা কুকি-চিনের দুই সশস্ত্র সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত বান্দরবানে রহমতের বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় করলেন ধর্মপ্রান মুসল্লিরা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবার সর্বজনীন পেনশন স্কিম কার্যক্রম বাড়াতে চালু হলো হেল্প ডেস্ক কেএনএফ এর ৭ সদস্য কারাগারেঃ রুমা ছাত্রলীগ সভাপতি কে বহিষ্কার

শৈমাপ্রু’রা স্বপ্ন দেখে,দারিদ্রতা স্বপ্ন ভাঙ্গে বার বার


প্রকাশের সময় :১০ মে, ২০১৮ ৭:৫১ : অপরাহ্ণ 628 Views

উথোয়াই মার্মা (লামা) বান্দরবানঃ-শৈমাপ্রু মারমা। জুমিয়া বাবা ক্যঅংপ্রু মারমা। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মা চিংহ্লামা। ৫ ভাই-বোনের মধ্যে সে সবার ছোট। শৈমাপ্রু’র বাবা-মা প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ না পাওয়ায় নিরক্ষরতা অন্তঃজ্বালা বুঝতেন। তাই স্বপ্ন ছিলো সন্তানদের সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করবেন। ভূমিহীন এই জুমিয়া বাবা-মা সেই সার্মথ্য কই? প্রত্যন্ত রোয়াংছড়ি উপজেলার তারাছা ইউনিয়নের ছাংঔখ্যং পাড়ায় যেখানে পরিবার সদস্যদের দুই মুঠো অন্ন সংস্থানে অপরাগ, সেখানে নিরুপায় হয়ে বাবা-মা তাকে রুমা উপজেলায় অগ্রবংশ অনাথালয়ের ভান্তে উ নাইন্দায়া থের দায়িত্বে রেখে আসেন। শৈমাপ্রু পরিবারের আর্থিক অবস্থা বুঝতে পেরে ভান্তে তাকে রুমা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেণীতে ভর্তি করিয়ে দেই। এখানেই শৈমাপ্রু’র স্বপ্ন বুনুন আর স্বপ্ন পূরনের লক্ষ্যে দিন-রাত শত দুঃখ-কষ্টের মাঝেও পড়াশুনা চালিয়ে যায় সে।

এবারের এসএসসি পরীক্ষায় বান্দরবানের রুমা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৪৪ জন পরিক্ষার্থীর মধ্যে শুধু মাত্র শৈমাপ্রু’ই মানবিক বিভাগ থেকে ২.৭ গ্রেডে উত্তীর্ণ হয়। ৪৪জন পরীক্ষার্থীদের মাঝে যেখানে অকৃতকার্যই ৪৩ জন, সেখানে শৈমাপ্রু’র এই সাফল্যের খবর চা দোকান থেকে অফিস পাড়া পর্যন্ত সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়ে। খবরের গন্ধ পেয়ে যান পাহাড় বার্তার রুমা প্রতিনিধি। ছুটে যান শৈমাপ্রু ও তার পরিবাররের খোঁজে। আলাপ চারিতার এক পর্যায়ে পাহাড় বার্তার প্রতিনিধিকে শৈমাপ্রু জানান, পাস করেছি, সবাই খুশি কিন্তু আমি খুব খুশি হয়নি। আমার দরিদ্র বাবা-মা কিভাবে আমাকে কলেজে পড়ানোর খরচ যোগাবেন। কোথায় পাবে তারা টাকা-পয়সা। আমরা শুধু বড় হওয়ার স্বপ্নই দেখি আর দারিদ্রতা আমাদের স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার করে বার বার।

ফেসবুকে কল্যাণে বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় দেখছি শৈমাপ্রু লেখাপড়া খরচের দায়িত্ব অনেকে নিচ্ছে। এমন নিউজ দেখার পর আমার নিচে থেকে অনেক ভালো লাগছে। কিন্তু ভয় পাচ্ছি….। কারণ বোনটি স্বপ্ন উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বিচারক বা উকিল হওয়ার। আবার অন্যদিকে বাড়িতে অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা চলছে। রুমায় আমার এক পরিচিত ভাই আর অগ্রবংশ অনাথালয়ে ভান্তে সাথে যখন শৈমাপ্রু কথা বলিই তখন জানতে পারি, তার মা দীর্ঘ অনেক বছর ধরে চোখের সমস্যায় আছে। কোন এক ফ্রি চক্ষু শিবিরে চোখের অস্ত্রোপাচারও করেন। কিন্তু দৃষ্টি শক্তি আগের মতো আর ফিরে পায়নি। এমন চোখের সমস্যা নিয়ে দুই মুঠো অন্ন আশায় ক্ষেত খামারে কাজ করতে গেলেই আবার আছার খেয়ে কোমড়ের হাড়ে আঘাত পানা। এরপর থেকে টাকার অভাবে পাহাড়ি বন ঔষুধ চিকিৎসা রত আছে। তাই বলছি- আপনারা যারা শৈমাপ্রু লেখাপড়া দায়িত্ব নিয়েছেন বা নিবেন, আপনাদের প্রতি অনুরোধ থাকবে কয়েক মাসের লেখাপড়ার খরচ বহন না করে এইচএসসি পুরো ২টি বছরের দায়িত্ব নেওয়ার।

লেখাটি শেষ করার আগে আবার বলছি, অজ পাড়াগায়ে জন্ম নেওয়া অগ্রবংশ অনাথালয়ে বেড়ে ওঠা শৈমাপ্রু’র স্বপ্ন পূরণে আমরা কি পারি না তার লেখাপড়ার যাবতীয় খরচের একক দায়িত্ব নিয়ে পাশে দাঁড়াতে?

 

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2024
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!