শিরোনাম: বৈরী আবহাওয়াঃ ভোটকেন্দ্রে ভোটারের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি বান্দরবান সদর উপজেলা নির্বাচনঃ আলোচনায় চেয়ারম্যান প্রার্থীর ৭ কর্মপরিকল্পনা লামা উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড়ে বিধ্বস্ত শতশত বসতবাড়ি জেলা প্রশাসকের হুঁশিয়ারিঃ উপজেলা নির্বাচনে কোনো অনিয়ম বরদাস্ত করা হবেনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনঃ প্রিজাইডিং,সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ সর্বজনীন পেনশন স্কিম সুষ্ঠ ও সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেলা বাস্তবায়ন কমিটির প্রস্তুতি সভা কুকি-চিনের দুই সশস্ত্র সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত বান্দরবানে রহমতের বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় করলেন ধর্মপ্রান মুসল্লিরা

ভয়াবহ বন্যাঃ শপথ ও দায়িত্ব গ্রহন করেই চ্যালেঞ্জের মুখে নবাগত মেয়র মো.সামসুল


নিজস্ব সংবাদদাতা প্রকাশের সময় :২২ আগস্ট, ২০২৩ ১:৪৮ : পূর্বাহ্ণ 323 Views

সম্প্রতি টানা আট থেকে দশদিনের অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে সৃষ্ঠ বন্যায় ছবির মতো সুন্দর বান্দরবান পৌর শহরের ৯০ শতাংশ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যায়।পর্যটন এর কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত পৌর শহর ভয়াবহ এই বন্যায় অনেকটাই জৌলুস হারিয়েছে।বন্যা পরবর্তী সময়ে পৌর শহরটি ময়লা-আবর্জনায় বিদ্ধস্ত রুপ ধারন করে।

একটানা বৃষ্টি আর ভয়াবহ বন্যায় বান্দরবান পৌর শহর এর প্রতিটি এলাকা ও অলিগলি তে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ ও পাহা‌ড়ের কাঁদামা‌টি‌ জ‌মে দুঃসহ এক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।পাড়া মহল্লায় চলাচল এর অভ্যন্তরিণ সড়ক গুলো তে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা এবং দুর্গন্ধ জনজীবন কে অতিষ্ঠ করে তুলে।এ যেনো সর্বাঙ্গে ব্যাথা ওষুধ দিবো কোথা এমন এক পরিস্থিতিতে চ্যালেঞ্জের মুখে শপথ ও দায়িত্ব গ্রহন করেন নবাগত মেয়র সামসুল ইসলাম।জনগনের প্রত্যাশা মেটাতে দায়িত্ব গ্রহন করার পরপরই তিনি পৌরসভার এসব ময়লা আবর্জনা এবং কাঁদামাটি সরিয়ে শহরকে পরিচ্ছন্ন করার জন্য পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করেন।

নবাগত মেয়র সামসুল সীমিত জনবল ও সরঞ্জাম নিয়ে পরিস্থিত মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছেন এমন তথ্যও উঠে আসছে।পৌরসভায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্তরিকতা, অস্থায়ী জনবল নিয়োগ,বেসরকারি পর্যায়ে কয়েকজন কে অনুরোধের প্রেক্ষিতে পাওয়া বেশকিছু ভারি যানবাহন এবং জনসাধারনের সার্বিক সহযোগীতায় স্বল্প সময়ে তিনি অলিগলির সড়কগুলো অনেকটাই পরিচ্ছন্ন করতে সক্ষম হয়েছেন।এতে জনসাধারন এর চলাচলের পথগুলো অনেকটাই ব্যবহার উপযোগি হয়ে উঠেছে।জানা যায়,বন্যা শুরু হবার পর বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র গুলো তে রান্না করা খাবার বিতরন করে বান্দরবান পৌরসভা।এসময় প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ এই খাবার পেয়েছে।প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৮০ থেকে ১০০ টন ময়লা আবর্জনা শহরের বাইরে সরিয়ে নিচ্ছে পৌরসভার পরিচ্ছন্ন কর্মীরা।মেয়র নিজেই বিশাল এই কর্মযজ্ঞের তদারকি করছেন।রাস্তার পাশে যারা খালি জায়গায় অবৈধভাবে ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করতে গিয়ে মালামাল মজুদ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে তাদেরকেও নিজ দায়িত্বে এসব মালামাল সরিয়ে নিতে অনুরোধ জানাচ্ছেন।

এরইমধ্যে বান্দরবান পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড এর শিশু পরিবারের পার্শ্ববর্তী সড়কে পাহাড়ের মাটি পড়ে চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মাটি অপসারণ,৮ নং ওয়ার্ডের হাফেজঘোনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে প্রধান সড়ক,৯নং ওয়ার্ডের বনানী স-মিল ও লাঙ্গী পাড়া এলাকায় পাহাড় ধসে ও বন্যার পানিতে সড়কে জমা কাঁদামাটি অনেকাংশেই অপসারণ করা হয়েছে।

পাহাড় ধ্বসে বান্দরবান পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের ফজরআলী পাড়া হতে লেমুঝিড়ি সড়কটি যোগাযোগ দ্রুত চলাচল উপযোগী করে তোলার জন্য কাজ চলছে।বান্দরবান বাজার মসজিদের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে নদীতে নামার দুইটি সিঁড়ি কাঁদামাটিতে ভরে গেছে।রুমা ও থানচি নৌ যোগাযোগের জন্য এই ঘাট ব্যবহৃত হয়।এই ঘাট দুটি ব্যবহার উপযোগী করা হয়েছে।

এই সড়ক এবং অলিগলির নোংরা ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করাটা ছিলো সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।উল্লেখিত এসব সড়কের বাইরেও ছোট বড় কমপক্ষে আরও বিশ থেকে তিরিশটি সড়ক- নালা-নর্দমা-ড্রেন পরিষ্কার এর কাজ করতে হয়েছে এবং এই প্রতিবেদন লেখাকালীন সময় পর্যন্ত তা চলমান রয়েছে।দুর্যোগকালীন এমন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রতিদিন পৌরসভার নিজস্ব কর্মীর বাইরে চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

বান্দরবান পৌরসভা এর পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মঞ্জুর চৌধুরী বলেন, ১১ আগস্ট রাত থেকেই পৌর শহর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম শুরু হয়।বন্যার পানি সরে যাওয়ার পর পৌর শহর কে দ্রুত আবর্জনা মুক্ত করতে চুক্তি ভিত্তিক শ্রমিক নিয়োগ দিতে বাধ্য হয়েছি।চুক্তিতে এখন পর্যন্ত প্রায় ছয়শোর বেশি শ্রমিক কাজ করেছে।পরিচ্ছন্নতা অভিযান দ্রুত শেষ করতে পৌরসভার নিজস্ব পরিবহনের বাইরেও সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বেশকয়টি ভারি যানবাহন ব্যবহার করা হচ্ছে।

সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে পৌর মেয়র সামসুল ইসলাম বলেন,বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর পৌরসভার ক্ষত চিহ্ন গুলো দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।ইতি মধ্যে পৌর শহর অনেকটাই ময়লা-আবর্জনা মুক্ত করা হয়েছে।পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয় এর মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি এর দিকনির্দেশনা অনুযায়ী পৌর কতৃপক্ষ দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে।দুর্গত মানুষের সার্বক্ষণিক খোঁজ রাখছেন পার্বত্যমন্ত্রী এমনটাও উল্লেখ করেন নবাগত মেয়র সামসুল ইসলাম।

তবে শহরের বেশিরভাগ ড্রেনেজ ও পানি নিষ্কাষন ব্যবস্থাগুলো নতুন করে ঢেলে সাজানোর কথা ভাবতে হচ্ছে।আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিরুপন করা হচ্ছে।ধারনা করা হচ্ছে ভয়াবহ বন্যায় আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমান একশো কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।শহরকে দ্রুত আবর্জনা মুক্ত করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।এখানে জনসাধারন এর সাথে আমি নিজেও বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা দুর করতে কথা বলছি।তাদের পরামর্শ নিয়ে সকল কাজগুলো দ্রুত শেষ করতে চাই।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2024
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!