বান্দরবান অফিসঃ-কৃষি বাংলাদেশের প্রাণ। কৃষি পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে সারা দেশের মানুষের খাদ্যের যোগান দিচ্ছে আমাদের দেশের কৃষকরা। কিন্তু ভৌগোলিক অবস্থানের দিক থেকে বাংলাদেশ দুর্যোগ প্রবণ এলাকায় হওয়ায় প্রায়ই ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় দেশের কৃষি খাতকে। মুখ থুবড়ে পড়ে দেশের কৃষকরা। এই কৃষকদের উৎসাহ দেয়ার জন্য, ফসলের আবাদ এলাকা বৃদ্ধি, ফলন বৃদ্ধি ও প্রাকৃতিক কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার জন্য ৮০ কোটি টাকা প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। এই প্রণোদনার টাকা দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে তথ্য প্রযুক্তি। মোবাইলে ব্যাংকিং এর মাধ্যমে এই টাকা পৌঁছে দেয়া হবে কৃষকদের হাতে। ৬ লাখ ৯০ হাজার ৯৭০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক এই প্রণোদনা পাবে।
চলতি মৌসুমে গম, ভুট্টা, সরিষা, চীনাবাদাম, ফেলন, খেসারি, বিটি বেগুন, বোরো, শীতকালীন মুগ এবং পরবর্তী খরিপ-১ মৌসুমে গ্রীষ্মকালীন মুগ ও গ্রীষ্মকালীন তিল উৎপাদনের জন্য প্রণোদনা দেওয়া হবে। এর আওতায় প্রতিটি কৃষক পরিবার সর্বোচ্চ এক বিঘা জমির জন্য বিনামূল্যে বীজ ও সার পাবে। সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, ৬৫ হাজার ৭০০ জন কৃষক গম বীজ, দুই লাখ ২১ হাজার ৫০০ জন ভুট্টা বীজ, দুই লাখ ১০ হাজার ২০০ জন সরিষা, ১০ হাজার ১০০ জন চিনাবাদাম, ১৮ হাজার জন গ্রীষ্মকালীন তিল, ৪৮ হাজার ৪০০ জন গ্রীষ্মকালীন মুগ, ২৪ হাজার ৩০০ জন শীতকালীন মুগ, ১৩ হাজার ৬০০ জন খেসারি, পাঁচ হাজার ৪০০ জন ফেলন, দুই হাজার ৭০ জন বিটি বেগুন এবং ৭১ হাজার ৭০০ জন কৃষক বোরো বীজ পাবেন। এক বিঘা জমিতে চাষাবাদের জন্য প্রত্যেক কৃষক ২০ কেজি গম, পাঁচ কেজি ধান, দুই কেজি ভুট্টা, এক কেজি সরিষা, ১০ কেজি চীনাবাদাম, এক কেজি গ্রীষ্মকালীন তিল, পাঁচ কেজি গ্রীষ্মকালীন মুগ, আট কেজি খেসারি, সাত কেজি ফেলন এবং ২০ গ্রাম বিটি বেগুনের বীজ পাবেন।
ধান, গম, ভুট্টা, গ্রীষ্মকালীন তিল, সরিষা ও বিটি বেগুন চাষে প্রত্যেক কৃষক ২০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি করে এমওপি সার পাবেন। আর চীনাবাদাম, গ্রীষ্মকালীন মুগ, শীতকালীন মুগ, খেসারি, মাসকলাই ও ফেলন চাষে প্রত্যেক কৃষককে ১০ কেজি করে ডিএপি ও পাঁচ কেজি করে এমওপি সার প্রদান করবে সরকার।
অনুকুল আবহাওয়া পণ্য উৎপাদনে সক্রিয় আছে বর্তমান সরকার। দেশে উন্নত জাতের তাপানুকূল বিভিন্ন কৃষি পণ্যের বীজ উৎপাদন হচ্ছে। ইতোমধ্যে ভুট্টার উৎপাদন অনেক বেড়েছে। চাল এখন মাছের খাওয়ার জন্যও ব্যবহৃত হচ্ছে।
বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। দেশের কৃষি খাতকে সমৃদ্ধ করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে বর্তমান সরকার। উন্নয়নের ধারাবাহিকতার সাথে কৃষি খাতে কৃষকদের প্রণোদনাও অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্ট সকলে।