শিরোনাম: বান্দরবান সদর উপজেলা নির্বাচনঃ আলোচনায় চেয়ারম্যান প্রার্থীর ৭ কর্মপরিকল্পনা লামা উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড়ে বিধ্বস্ত শতশত বসতবাড়ি জেলা প্রশাসকের হুঁশিয়ারিঃ উপজেলা নির্বাচনে কোনো অনিয়ম বরদাস্ত করা হবেনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনঃ প্রিজাইডিং,সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ সর্বজনীন পেনশন স্কিম সুষ্ঠ ও সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেলা বাস্তবায়ন কমিটির প্রস্তুতি সভা কুকি-চিনের দুই সশস্ত্র সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত বান্দরবানে রহমতের বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় করলেন ধর্মপ্রান মুসল্লিরা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবার সর্বজনীন পেনশন স্কিম কার্যক্রম বাড়াতে চালু হলো হেল্প ডেস্ক

সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রয়োজন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন


নিউজ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২১ মার্চ, ২০১৯ ৩:৪৬ : অপরাহ্ণ 598 Views

রাজধানীতে গণপরিবহনে নৈরাজ্য চলছেই। কার আগে কে যাত্রী তুলবে এই রেষারেষি রাজধানী ঢাকার গণপরিবহনের নিত্যদিনের দৃশ্য। প্রতিদিনই যাত্রীরা এ রকম বেপরোয়া চালনার শিকার হচ্ছেন।
এভাবেই গতকাল রাজধানীর নদ্দায় যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে বাস চাপায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরীর মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে। এই মৃত্যুর ঘটনায় রাজধানীতে টানা দ্বিতীয় দিনের মত রাস্তায় নেমে সড়ক অবরোধ করেছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। বাস চাপায় নিহত আবরারের মৃত্যুর জন্য দায়ীদের শাস্তির পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের প্রধান দাবি হচ্ছে নিরাপদ সড়ক। নিরাপদ সড়ক প্রত্যেকটা নাগরিকের মৌলিক অধিকার, কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য এই মৌলিক অধিকার আদায়ের জন্য আমাদের আন্দোলন করতে হয়।
গত বছর রাজধানীর রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্টের দুই শিক্ষার্থী বাস চাপায় নিহতের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং নিরাপদ সড়কের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা সম্যক উপলব্ধি করে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮-এর অনুমোদন দিয়েছেন। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য যে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দেওয়া নির্দেশনা বাস্তবায়নের উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি নেই। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের সড়ক মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রয়োজন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়ন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনাগুলো হচ্ছে,
১. ঢাকা শহরে গণপরিবহন চলাকালে সবসময় দরজা বন্ধ রাখা এবং বাস স্টপেজ ছাড়া যাত্রী ওঠা-নামা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা নিশ্চিত করতে বিআরটিএ এবং ঢাকা মহানগর পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়।
২. গণপরিবহনে (বিশেষত বাসে) দৃশ্যমান দুটি স্থানে চালক ও হেলপারের ছবিসহ নাম, চালকের লাইসেন্স নম্বর, মোবাইল নম্বর প্রদর্শন নিশ্চিত করা।
৩. সব মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীকে (সর্বোচ্চ দু’জন আরোহী) বাধ্যতামূলক হেলমেট পরিধান এবং সিগন্যালসহ ট্রাফিক আইন মানতে বাধ্য করা।
৪. সব সড়কে বিশেষত মহাসড়কে চলমান সব পরিবহনে (বিশেষত দূরপাল্লার বাসে) চালক এবং যাত্রীর সিটবেল্ট ব্যবহারের নির্দেশনা দেয়া এবং পরিবহন মালিকদের সিটবেল্ট সংযোজনের নির্দেশনা দেয়া এবং আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া।
৫. ঢাকা শহরের যেসব স্থানে ফুটওভার ব্রিজ বা আন্ডারপাস রয়েছে সেসব স্থানের উভয় পাশে ১০০ মিটারের মধ্যে রাস্তা পারাপার সম্পূর্ণ বন্ধ করা।
৬. ফুটওভার ব্রিজ বা আন্ডারপাসসমূহে প্রয়োজনীয় পরিচ্ছন্নতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, আন্ডারপাসসমূহে প্রয়োজনীয় লাইট, সিসিটিভি স্থাপনসহ ব্যবহার করতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা। ৩০ আগস্টের মধ্যে এ নির্দেশনা নিশ্চিত করতে বলা হয়।
৭. ঢাকা শহরের সব সড়কে জেব্রা ক্রসিং ও রোড সাইন দৃশ্যমান করা, ফুটপাত হকারমুক্ত রাখা, অবৈধ পার্কিং এবং স্থাপনা উচ্ছেদ করা, সব সড়কের নামফলক দৃশ্যমান স্থানে সংযোজন।
৯. স্বয়ংক্রিয় বৈদ্যুতিক সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু করার বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া।
১০. ঢাকা শহরে রিমোট কন্ট্রোলড অটোমেটিক বৈদ্যুতিক সিগন্যালিং পদ্ধতি চালু করা।
১১. ঢাকা শহরের সব সড়কের রোড ডিভাইডারের উচ্চতা বৃদ্ধি করা বা স্থানের ব্যবস্থাপনা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ।
১২. মহাখালী ফ্লাইওভারের পর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত (আপ এবং ডাউন) ন্যূনতম দুটি স্থানে স্থায়ী মোবাইল কোর্ট বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উপস্থিতি নিশ্চিত করা এবং নিয়মিত দৈব চয়নের ভিত্তিতে যানবাহনের ফিটনেস এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা করা। শহরের অন্য সব স্থানেও প্রয়োজন অনুযায়ী অস্থায়ীভাবে অনুরূপ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
১৩. ঢাকা শহরের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ছুটি বা আরম্ভ হওয়ার সময় জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থী, স্কাউট এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের (বিএনসিসি) সহযোগিতা নিয়ে শিক্ষার্থীদের রাস্তা পারাপারের উদ্যোগ নেওয়া।
১৪. অবৈধ পরিবহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং ফিটনেস দেয়ার প্রক্রিয়ায় অবশ্যই পরিবহন দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে।
১৫. রুট পারমিট/ফিটনেসবিহীন যানবাহন দ্রুত ধ্বংস করার সম্ভাব্যতা যাচাই করতে হবে।
১৬. লাইসেন্স দেয়ার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ‘লারনার’ দেয়ার প্রাক্কালে ড্রাইভিং টেস্ট নেয়া যেতে পারে এবং উত্তীর্ণদের দ্রুততম সময়ে লাইসেন্স দেয়ার নির্দেশ।
১৭. কর্মকর্তা-কর্মচারীর ঘাটতি থাকলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ঘাটতি পূরণের ব্যবস্থা নেয়া।
যে কোন মূল্যে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে হবে। পরিবহন সেক্টরে শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে হবে। পরিবহন সেক্টরকে মাফিয়া/গডফাদার মুক্ত করা এখন সময়ের দাবি। পরিবহন সেক্টরকে চাঁদাবাজি মুক্ত করতে পারলে অনেক অনিয়ম আপনা-আপনি কমে যাবে। ছাত্র–ছাত্রীদেরকেও আন্দোলনে সহিংসতা পরিহার করতে হবে। আন্দোলন হবে শান্তিপূর্ণভাবে সুশৃংখল এবং সুনির্দিষ্ট দাবির জন্য।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উল্লেখিত নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়িত হলেই সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2024
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!