শিরোনাম: বান্দরবান সদর উপজেলা নির্বাচনঃ আলোচনায় চেয়ারম্যান প্রার্থীর ৭ কর্মপরিকল্পনা লামা উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড়ে বিধ্বস্ত শতশত বসতবাড়ি জেলা প্রশাসকের হুঁশিয়ারিঃ উপজেলা নির্বাচনে কোনো অনিয়ম বরদাস্ত করা হবেনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনঃ প্রিজাইডিং,সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ সর্বজনীন পেনশন স্কিম সুষ্ঠ ও সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেলা বাস্তবায়ন কমিটির প্রস্তুতি সভা কুকি-চিনের দুই সশস্ত্র সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত বান্দরবানে রহমতের বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় করলেন ধর্মপ্রান মুসল্লিরা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবার সর্বজনীন পেনশন স্কিম কার্যক্রম বাড়াতে চালু হলো হেল্প ডেস্ক

শান্তিনিকেতনে ‘বাংলাদেশ ভবন’ উদ্বোধন এবং হাসিনা-মোদি বৈঠক,কি পেল বাংলাদেশ?


প্রকাশের সময় :২৯ মে, ২০১৮ ৯:৫২ : অপরাহ্ণ 657 Views

সিএইচটি টাইমস নিউজ ডেস্কঃ-ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের আনুষ্ঠানিক ভিত রচিত হয়েছিল মূলত ১৯৭১ সালে আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারত সরকার এবং সেদেশের জনগণের সার্বিক সহযোগিতার মধ্যে দিয়ে।

স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত পর দুই দেশের সরকার বদল এবং বিভিন্ন ইস্যুতে দুই দেশের সম্পর্কের উত্থান পতন হয়েছে কিছুটা। ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায় ভারতের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে বাংলাদেশের কল্যাণে বিভিন্ন চুক্তি সম্পাদন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়েই বেশি হয়েছে।

১৯৯১-১৯৯৬ পর্যন্ত্য ক্ষমতায় থেকে বিএনপির কূটনৈতিক ব্যর্থতার কারণে ভারতের সাথে ঐতিহাসিক গঙ্গা চুক্তি করতে ব্যর্থ হলেও ৯৬ এ ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সরকার সেই চুক্তি বাস্তবায়ন করে। পরবর্তীতে ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে সীমান্তে সংঘর্ষের জের ধরে ভারত বাংলাদেশ সম্পর্কের আবারো অবনতি হয়।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় ভারত-বাংলাদেশ সুসম্পর্ক আবারো পুনঃস্থাপিত হয়। অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে ভারত বাংলাদেশ সম্পর্ক সব থেকে সুবিধাজনক অবস্থায় আছে। সুসম্পর্কের জের ধরে দুই দেশে বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধান এবং দুই দেশের উন্নয়নে অনেকগুলো চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে যা বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের বড় ধরণের কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে বিবেচনা করেছেন অনেক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। দুই দেশের মধ্যে স্থল ও সমুদ্র-সীমা নির্ধারণ, ছিটমহল বিনিময়, প্রতিরক্ষা চুক্তি ইত্যাদি বিষয়ে অগ্রগতি একটি বড় অর্জন।

সম্প্রতি ভারতের শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতীর সমাবর্তন এবং সেখানে ‘বাংলাদেশ ভবন’ এর উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সম্প্রতি নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে ভারত সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরসূচীতে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার কোনো কথা না থাকলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীর প্রত্যাশার কথা বিবেচনায় নিয়ে তাঁর বক্তৃতায় এবং মোদির সাথে বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেছেন।

দ্বিপক্ষীয় বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার নতুন অঙ্গীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে বিশ্বের জন্য মডেল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন, আগামীতেও দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময়ের বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “ভারতের পার্লামেন্টে একটি অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটে গেল, ভারতের প্রত্যেকটা দলের সংসদ সদস্যরা সকলে মিলে, দল-মত নির্বিশেষে সকলে মিলে এক হয়ে স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের বিলটি পাস করে দিল। অনেক দেশে ছিটমহল বিনিময় নিয়ে যুদ্ধ বেঁধে আছে। কিন্তু ভারত-বাংলাদেশে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে, ভ্রাতৃত্ববোধ নিয়ে, আনন্দঘন পরিবেশে আমরা ছিটমহল বিনিময় করেছি।”

বাংলাদেশ ভবন উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ ভবনকে বাংলাদেশ-ভারত সাংস্কৃতিক সম্পর্কের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রগতি, সমৃদ্ধি, শান্তি ও ঐক্যের জন্য দরকার ভারত এবং বাংলাদেশের বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা।

শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে যে জায়গায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছেন, তা অর্জনে ভারতের ‘পূর্ণ সমর্থন’ থাকবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন মোদী।

তিনি বলেন “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশেকে ২০৪১ সালের মধ্যে শিক্ষিত রাষ্ট্র করে তোলার যে লক্ষ্য নিয়েছেন, এ তার দূরদৃষ্টি। এই লক্ষ্য অর্জনে ভারতের পূর্ণ সমর্থন থাকবে।”

সামাজিক খাতে বাংলাদেশ যে উন্নতি দেখিয়েছে, তা অনুকরণীয় বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত হওয়ার শর্ত পূরণ করেছে। এটা বাংলাদেশের জন্য যেমন গর্বের, ভারতের জন্যও গর্বের।

বাংলাদেশ ভবন নিয়ে উচ্ছ্বসিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমার খুব ভালো লেগেছে, এটা দারুণ হয়েছে। আজ বঙ্গবন্ধুর কথা মনে পড়ছে বার বার। কারণ ভারতবর্ষ ও বাংলাদেশের সম্পর্ক সেই ১৯৭১ সাল থেকে।”

ভারতে কবি নজরুল ইসলামের নামে বিমানবন্দর, একাডেমি, তীর্থ প্রতিষ্ঠার প্রসঙ্গে তুলে ধরে মমতা বলেন, “আমরা বঙ্গবন্ধুর নামেও একটি বঙ্গবন্ধু ভবন করতে চাই… যখনই আমাদের সুযোগ দেবেন, আমরা করব।”

বাংলাদেশ ভবন উদ্বোধন শেষে শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।প্রধানমন্ত্রীর সফর সঙ্গীদের সূত্রে জানা গেছে উক্ত বৈঠকে তিস্তা সমস্যা সমাধান সহ বিভিন্ন অমীমাংসিত বিষয়ে আলোচনা হয়েছে দুই প্রধানমন্ত্রীর মাঝে। মোদি অচিরেই তিস্তা সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানা গেছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলাপকালে শেখ হাসিনা নরেন্দ্র মোদিকে মিয়ানমারের উপর চাপ বৃদ্ধির আহবান জানিয়েছেন।

এছাড়া বৈঠকে ভারতের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের বাজারে বিনিয়োগ বৃদ্ধিরও আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

সফরের দ্বিতীয় দিন আসানসোলে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তনে যোগ দেন শেখ হাসিনা। সেখানে তাকে সম্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রি প্রদান করা হয়। আমাদের জন্য নিঃসন্দেহে এটি গর্বের বিষয়।

এদিকে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ভারতের গবেষণা সংস্থা অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন বলেছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ ছাড়া অন্য কারো ক্ষমতায় আসার বিষয়টিকে ভারত উদ্বেগের চোখে দেখে।

ভারত সরকারের অনেকেই দুই দেশের মঙ্গলের জন্য পুনরায় আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় বলেও বিভিন্ন সংস্থার বরাত দিয়ে জানা গেছে।

 

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2024
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!