সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতাকালে বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ডেল্টা প্ল্যান ২১০০-এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ১০০ বছরে কোন পর্যায়ে যাবে সেই পরিকল্পনা চলছে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “২০২১ সাল থেকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত কী করবো, তার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা দিয়ে যাচ্ছি।” তিনি আরও বলেন, “দিনবদলের সনদ চলছে। কাজ চলছে। তা অব্যাহত থাকবে।”
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “২১০০ সালে বাংলাদেশকে কীভাবে দেখতে চাই, বদ্বীপকে বাঁচিয়ে রাখা, জলবায়ু পরিবর্তনসহ অন্যান্য অভিঘাত থেকে বাঁচাতে এই প্ল্যান। দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতেই ‘ডেল্টা প্ল্যান ২১০০’ বাস্তবায়ন হাতে নেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে কাজ চলছে।”
জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জনগণ ভোট দিলে আছি, না দিলে নেই। তবে লক্ষ্য ও পরিকল্পনা গ্রহণে কাজ করে ফেলছি। সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা ছাড়া আসলে দেশের উন্নয়ন হবে না। সে লক্ষ্যে ২০১০ থেকে ২০২০, ২০২১ থেকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত করণীয় অনেকদূর এগিয়েছে। জাতির জনকের স্বপ্ন বাস্তবায়নই আমার ইচ্ছা।”
বদ্বীপ বিধৌত এ বাংলায় যে পরিমাণ দুর্যোগ আঘাত হানে তার বেশিরভাগই জলভিত্তিক। বছর প্রতি ক্ষতি হাজার কোটি টাকারও বেশি। চলছে স্থায়ী সমাধানের পথ খোঁজার চেষ্টা। তাই ডেল্টা প্ল্যান নামের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। নেদারল্যান্ড সরকারের সহায়তায় ২০৩০ সাল পর্যন্ত স্বল্পমেয়াদী, ২০৪১ সাল পর্যন্ত মধ্যমেয়াদী এবং ২১০০ সাল পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার আওতায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করবে সরকার। গঙ্গা, যমুনা ও ব্রক্ষ্মপুত্র অববাহিকা অঞ্চল, হাওর, পার্বত্য এলাকা, শহরাঞ্চল, বিশেষায়িত ও সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার জন্য নেয়া হয়েছে প্রকল্প।
পুরো প্রকল্পজুড়ে নদী শাসন, সংস্কার, বাঁধ-ব্যারেজ সংস্কার ও নির্মাণ, সাধারণের আর্থ-সামাজিক, কৃষি ও শিল্পের উন্নয়ন করা হবে। অর্থায়নের বিষয়ে দেশীয় উৎস ছাড়াও নেয়া হবে বিদেশী সহায়তা ও জলবায়ু তহবিলের অর্থ। ২০৩০ সাল পর্যন্ত জিডিপির আড়াই ভাগ এতে ব্যয় হবে। থাকবে ৮০টি উন্নয়ন প্রকল্প। খরচ হবে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টদের আশা, প্রকল্প বাস্তবায়নে অতীতের দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারলে, এই প্রকল্পই বাংলাদেশকে এনে দেবে আগামী দিনে ভিন্ন এক অবয়ব।