শিরোনাম: জেলা প্রশাসকের হুঁশিয়ারিঃ উপজেলা নির্বাচনে কোনো অনিয়ম বরদাস্ত করা হবেনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনঃ প্রিজাইডিং,সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ সর্বজনীন পেনশন স্কিম সুষ্ঠ ও সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেলা বাস্তবায়ন কমিটির প্রস্তুতি সভা কুকি-চিনের দুই সশস্ত্র সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত বান্দরবানে রহমতের বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় করলেন ধর্মপ্রান মুসল্লিরা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবার সর্বজনীন পেনশন স্কিম কার্যক্রম বাড়াতে চালু হলো হেল্প ডেস্ক কেএনএফ এর ৭ সদস্য কারাগারেঃ রুমা ছাত্রলীগ সভাপতি কে বহিষ্কার যৌথ বাহিনীর অভিযানঃ তিন উপজেলায় স্থগিত হলো ভোট

জিয়া, এরশাদ, খালেদা- কেউ এ মাটির সন্তান না: শেখ হাসিনা


  • অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশের সময় :৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ১:২৯ : অপরাহ্ণ 357 Views

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত যারা ক্ষমতায় এসেছেন, তাদের মধ্যে কেবল তিনি এবং তার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই এ মাটির সন্তান ছিলেন, এবং সে কারণেই তিনি ত্যাগ স্বীকার করেও জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

ইতালি সফরের প্রথম দিন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রোমের পার্কো দেই প্রিনচিপি গ্র্যান্ড হোটেলে ইতালি আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তার এ মন্তব্য আসে।

শেখ হাসিনা বলেন, “জিয়াউর রহমানের জন্ম বিহারে, এরশাদের (এইচ এম এরশাদ) জন্ম কুচবিহারে, খালেদা জিয়ার জন্ম শিলিগুড়ি। একজনও এই মাটির সন্তান না।

“এই মাটির সন্তান এখন পর্যন্ত যতজন ক্ষমতায় এসেছে, একমাত্র আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং আমি শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মাটির সন্তান। যেহেতু আমাদের মাটির টান আছে, এইজন্য আমাদের একটা কর্তব্যবোধ আছে।”

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট ঘাতকের বুলেটে বাবা-মাসহ পরিবারের প্রায় সকল সদস্য্যকে হারানোর কথা স্মরণ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা হাসিনা বলেন, “জীবনের সবকিছু ত্যাগ করে একটা কাজই করে যাচ্ছি, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যটা পরিবর্তন করতেই হবে। সেই কথা চিন্তা করে আমরা প্রত্যেকটা পদক্ষেপ নিচ্ছি।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের আর কেউ পেছনে টানতে পারবে না। আমরা সামনে এগিয়ে যাব। এটাই হলো সবথেকে বড় কথা।”

দেশের উন্নয়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বিশ্বের ‘যে কোনো জাতির সঙ্গে’ প্রতিযোগিতা করে এগিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা বাংলাদেশ এখন অর্জন করেছে। এ দেশের সব উন্নয়ন প্রকল্পের ৯০ শতাংশ এখন নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন হয়।
বাংলাদেশ নিয়ে অতীতে বিদেশিদের নেতিবাচক মনোভাবের ছিল তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এমন একটা অবস্থা ছিল এক সময়, বাংলাদেশ শুনলে আগেই বলত ওহ… বাংলাদেশ ওখানে তো ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, মানুষ খেতে পায় না, দুর্ভিক্ষ লেগে থাকে। বাংলাদেশটাকে একটা হেয়’র চোখে দেখতো। যেটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক ছিল। যেটা আমাদের জন্য কষ্টের ছিল।”

আর এক সময়ের ‘দাতা দেশগুলোও’ এখন বাংলাদেশকে আর ‘ভিক্ষা দিতে’ না এসে বরং ‘উন্নয়ন সহযোগী’ মনে করে সহযোগিতা করতে আসে মন্তব্য করে সরকারপ্রধান বলেন, “কারো কাছে আমরা ভিক্ষা চাই না। আমরা নিজেরা পারি সেটা প্রমাণ করেছি।” নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপট মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “ওয়ার্ল্ড ব্যাংক চেয়েছিল আমাদেরকে বদনাম দিতে। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম। তারপর বলেছিলাম ওটা আমরা নিজস্ব অর্থায়নে করব। আজকে আমরা নিজস্ব অর্থায়নে করছি।”

প্রবাসী বাংলাদেশিদের সামনে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “অর্থনৈতিকভাবে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। জাতির পিতা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলেছিলেন। স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে রেখে গিয়েছিলেন। আমরা আজকে সেখানে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি।”

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বিরোধী দলে থাকতেই তার প্রতিজ্ঞা ছিল, কোনোদিন সরকার গঠন করার সুযোগ পেলে বাংলাদেশের উন্নয়নে কাজ করবেন।

“এমনভাবে বাংলাদেশকে গড়ে তুলব… যে বাংলাদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে, সেই বাংলাদেশ শুনলে যেন মানুষ বলে… নাহ বাংলাদেশ আজকে বিশ্বে মর্যাদা পেয়েছে। আজকে মুজিববর্ষে এসে এইটুকু দাবি করতে পারি, আমরা কিন্তু বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিশ্বে সেই জায়গায় আনতে সক্ষম হয়েছি।”

প্রবাসীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, “জাতির পিতা চেয়েছিলেন, বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের জনগণ মাথা উঁচু করে চলবে। সেই মাথা উঁচু করে চলবার মতনই আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। আপনাদেরকেও সেভাবে আপনাদের আচার-আচরণ ব্যবহার- সবকিছুতে সেটা বজায় রাখতে হবে। যেন দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়।”

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের অবদানের কথা স্মরণ করে তাদের জন্য সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও অনুষ্ঠানে বলেন প্রধানমন্ত্রী।

বিমানবন্দরে অনেকসময় প্রবাসীদের হয়রানির শিকার হওয়ার বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, “আসলে আমাদের দেশের কিছু মানুষের চরিত্রই খারাপ। যেই শুনে বাইরে থেকে আসবে, ভাবে যে একটু চাপ দিলেই মনে হয় কয়েকটা ডলার পাওয়া যাবে।

“একটা কথা মনে রাখবেন। ঘুষ যে দেয় সেও যেমন অপরাধী, যে নেয় সেও অপরাধী। এই দিয়ে দিয়ে অভ্যাসটা আপনারা খারাপ করেন। আগামীতে আর করবেন না।” ‌

আর দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, “আরেকটা কথা মনে রাখতে হবে, আমার কিন্তু বয়স হয়ে গেছে। আমার কিন্তু ৭৩ বছর বয়স, এটা মাথায় রাখতে হবে। কাজেই আগে যখন অল্প বয়স ছিল অনেক ঘুরেছি। এখন আর এত সম্ভব না।তারপরও কাজ অনেক বাকি রয়ে গেছে।

“কাজেই যতটুকু সময় পাই, ততটুকু সময় দেশের কাজ করার চেষ্টা করি। ‌যত দ্রুত এই দেশটাকে উন্নত করতে চাই। সেজন্য সকলের সহযোগিতা চাই।”

শোষিত বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরার পাশাপাশি তাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, ইতালিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান শিকদার, ইতালী আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইদ্রিস ফরাজী, সাধারণ সম্পাদক হাসান ইকবালসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

 

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2024
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!