শিরোনাম: বান্দরবান সদর উপজেলা নির্বাচনঃ আলোচনায় চেয়ারম্যান প্রার্থীর ৭ কর্মপরিকল্পনা লামা উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড়ে বিধ্বস্ত শতশত বসতবাড়ি জেলা প্রশাসকের হুঁশিয়ারিঃ উপজেলা নির্বাচনে কোনো অনিয়ম বরদাস্ত করা হবেনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনঃ প্রিজাইডিং,সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ সর্বজনীন পেনশন স্কিম সুষ্ঠ ও সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেলা বাস্তবায়ন কমিটির প্রস্তুতি সভা কুকি-চিনের দুই সশস্ত্র সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত বান্দরবানে রহমতের বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় করলেন ধর্মপ্রান মুসল্লিরা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবার সর্বজনীন পেনশন স্কিম কার্যক্রম বাড়াতে চালু হলো হেল্প ডেস্ক

আমরা বাঙালি এটাই একমাত্র পরিচয়: বঙ্গবন্ধু


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৩ জুলাই, ২০২০ ১০:৩৪ : অপরাহ্ণ 362 Views

প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছেন, আঞ্চলিকতা নয়, আমরা বাঙালি— এটাই একমাত্র পরিচয়। আঞ্চলিক সংকীর্ণতা ও ভেদাভেদ ভুলে কারখানা ও খামারে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য শ্রমিকদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান। ১৮ জুলাই আদমজীনগরে এক বিরাট জনসভায় বক্তৃতাকালে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমরা বাঙালি। বাংলাদেশ আমাদের দেশ। এটাই আমাদের একমাত্র পরিচয়। এখানে জেলাওয়ারি সংকীর্ণতার কোনও অবকাশ নেই। যারা জেলাওয়ারি সংকীর্ণতা ও ভেদাভেদ তুলে জনগণের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে, তারা দেশের শত্রু।’ তাদের দুরভিসন্ধি প্রতিহত করার জন্য তিনি আবেদন জানান।

স্বাধীনতার পর আদমজীনগরে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধুর এইটাই প্রথম জনসভা। এতে গণপরিষদ সদস্য শামসুজ্জোহা সভাপতিত্ব করেন এবং বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সচিব তোফায়েল আহমেদ ও জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান বক্তৃতা করেন। আবেগজড়িত কণ্ঠে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘জেলাওয়ারি আত্মঘাতী কাজে লিপ্ত হলে আপনারা কেন আমাকে আইয়ুব-ইয়াহিয়ার জেল থেকে মুক্ত করেছেন। কেন আপনারা এত ত্যাগ স্বীকার করেছেন, রক্ত দিয়েছেন। আমার জীবদ্দশায় আমি এসব সহ্য করতে পারবো না। এর আগে আমার মৃত্যু হওয়া শ্রেয়।’

বিভেদ সৃষ্টিকারীরা দেশের শত্রু ও জনগণের দুশমন

বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আদমজীতে ১৯৫৪ সালের দাঙ্গার কথা আমার মনে আছে। মন্ত্রী হয়ে আমি বাড়ি যাইনি। আদমজীর শ্রমিকদের পাশে এসে সেদিন আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম। তারপর আমাকে জেলে দেওয়া হয়েছে। বাংলার কৃষক ও শ্রমিকদের জন্য আমি ১৪ বছর জেল খেটেছি। আমার যৌবন কেটেছে কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্ঠে। তারপরও যদি আপনারা ভাতৃঘাতী উসকানির শিকার হন, তবে তার আগে আমার মৃত্যু শ্রেয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হিসেবে নয়, আপনাদের ভাই হিসেবে ভাতৃঘাতী নীতি পরিহার করার জন্য আমি আপনাদের প্রতি আবেদন করছি।’ বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘এক শ্রেণির লোক রাতের অন্ধকারে গুজব ছড়িয়ে শ্রমিকদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করে। তারা দেশের শত্রু ও জনগণের দুশমন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা উৎপাদন বাড়ান। আমাদের জনগণ দুঃখ-কষ্টের মধ্যে রয়েছে। মা-বোনেরা বস্ত্রহীন। অন্নের ব্যবস্থা করতে হলে উৎপাদন বাড়াতে হবে।’ বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমরা শিল্প ব্যাংক জাতীয়করণ করেছি। শিল্পের মালিক আদমজী দাউদ নয়, এখন দেশের শিল্প কারখানার মালিক সাড়ে সাত কোটি জনগণ।’

উৎপাদন বাড়ালে শ্রমিকের লাভ

বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘উৎপাদন বাড়লে লাভের একটা অংশ পাবেন শ্রমিকরা। আর বাকি অংশ খরচ করা হবে দেশের কৃষক জনগণের জন্য। এরা আমাদেরই বাপ-ভাই। তাদের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে লক্ষ্য রাখা আমাদের অবশ্য কর্তব্য।’ তিনি বলেন, ‘আপনাদের জন্য আমি এমন ব্যবস্থা করেছি, যাতে জীবনে আর আপনাদের কেউ শোষণ করতে পারবে না। শিল্পের ব্যবস্থাপনায় আপনাদের প্রতিনিধি থাকবে। আপনারা চালাবেন এবং এরাই সব দেখবেন। এর চেয়ে সুন্দর ব্যবস্থা কিছু হয় না।’ সমাজতন্ত্রের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সমাজতন্ত্র করতে হলে উৎপাদন বাড়াতে হবে। নইলে সমাজতন্ত্র কায়েম করা যাবে না।’

দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে সরকারি প্রচেষ্টা

গত ছয় মাসে জনগণের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে সরকারি প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমরা ধ্বংসস্তূপের ওপর কাজ শুরু করেছি। তবু গত ছয় মাসে একশ’ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। মাইনে বাড়ানো হয়েছে ৩৫ কোটি টাকা। এছাড়া, চাল, গম ও কাপড় দেওয়া হয়েছে।’ কৃষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির কর মওকুফ করে দিয়েছি। এতে করে শতকরা ৮৫ জন কৃষকের খাজনা দিতে হবে না। আপনাদের বকেয়া খাজনা মওকুফ করে দেওয়া হয়েছে। কাজেই আপনাদের কাছ থেকে বিঘা প্রতি এক মণ করে ধান উৎপাদন বাড়ানোর দাবি আমি করতে পারি।’

পাকিস্তানি বর্বরতা নমরুদ-ফেরাউন-হিটলার-মুসোলিনিকে ছাড়িয়ে গেছে

বঙ্গবন্ধু তার বক্তৃতায় বলেন, ‘পাকিস্তানি সেনারা যে অত্যাচার করেছে, নমরুদ-ফেরাউন-হিটলার-মুসোলিনিরাও এমন অত্যাচার করেছে। ২৪ বছরে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার সম্পদ লুটে নিয়েছে। তারা মনে করেছিল বাংলাদেশকে লুট করে খাবে চিরকাল। আর দুই-চার জনকে মন্ত্রিত্ব দিয়ে ভেতো বাঙালির মুখ বন্ধ করে রাখবে। কিন্তু ওরা আমার মাথা কিনতে পারেনি। আমাকে অত্যাচার করেছে, ফাঁসির মঞ্চে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছে। আপনারা আমাকে মুক্ত করেছেন। রক্ত দিয়ে হলেও আমি এই ঋণ শোধ করবো।’ তিনি বলেন, ‘২৫ মার্চ রাতে তারা আমার বাড়িতে মেশিনগান চালিয়েছে। আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছে। কারণ, নির্বাচনের পর বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলার অধিকার একমাত্র আমারই ছিল।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, ‘শহরে-গ্রামে তারা শ্রমিক ও কৃষককে হত্যা করেছে, বুদ্ধিজীবীদের খুন করেছে, সাংবাদিকদের আঙুল কেটে চোখ উপড়ে নিয়েছে। পাক নরপিশাচরা পশুর চেয়েও অধম।’

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2024
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!