লামায় শশা চাষীদের হতাশা


প্রকাশের সময় :১২ মে, ২০১৮ ৫:০০ : পূর্বাহ্ণ 702 Views

সিএইচটি নিউজ ডেস্কঃ-

বাজারে দাম না থাকায়, অসময়ে বৃষ্টিপাত ও রোগ-বালাইয়ে ফসল নষ্ট হওয়ায় লাখ লাখ টাকা লোকশান গুনছে বান্দরবানের লামার শশা চাষীরা। ক্ষতিকারক তামাকের পরিবর্তে শশা চাষ করেছিলেন উপজেলার কয়েকশত চাষী। কিন্তু তাদের সামনে ঘোর দুর্দিন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার উপজেলায় প্রায় ৫১০ একর জমিতে ৬০৫ জন চাষী শশার আবাদ করেছে। তারমধ্যে লামা পৌরসভায় ৭০ একর, গজালিয়া ইউনয়িনে ৬০ একর, সদর ইউনিয়নে ৬৫ একর, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে ৯৫ একর, আজিজনগর ইউনিয়নে ৩০ একর, সরই ইউনিয়নে ৮০ একর, রুপসীপাড়া ইউনিয়নে ১৩০ একর ও ফাইতং ইউনিয়নে ৪০ একর জমিতে শশার চাষ হয়। এর মধ্যে সর্বাধিক শশার চাষ হয়েছে রুপসীপাড়া ইউনিয়নে। দেশীয় ও হাইব্রিড জাতের শশা চাষ করে বিগত বছরে লাভবান হলেও এবছর সফলতা পাচ্ছেনা স্থানীয় কৃষকরা।

রুপসীপাড়া ইউনয়িনের দরদরী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ শশার ক্ষেত লালচে হয়ে গেছে। অজ্ঞাত রোগে শশার ফুলে ফল ধরার সাথে সাথে তা শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। গাছের অধিকাংশ শশা রোগে আক্রান্ত হয়ে আঁকাবাঁকা হয়ে গেছে। বিগত বছরের শশার কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা বিক্রি হলেও এ বছর পাইকারি ১০ থেকে ১৩ টাকার বেশি দাম পাওয়া যাচ্ছেনা।

রুপসীপাড়া ইউনিয়নের দরদরী, বৈক্ষমঝিরি ও অংহ্লা পাড়ার শশা চাষী মো. হানিফ, উহ্লামং মার্মা, সেলিনা আক্তার, রুমা আক্তার, ক্যহ্লামং মার্মা ও ছোটন বড়–য়া সহ অনেকে বলেন, শশা চাষাবাদে আমাদের কানি প্রতি (৪০ শতাংশ) জমিতে ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এই পর্যন্ত কানি প্রতি বিক্রয় এসেছে ১৫ হাজার টাকা। ক্ষেতে যে পরিমাণ ফল রয়েছে তাতে সর্বোচ্চ আর ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রয় হতে পারে। আমরা সকলের কানি প্রতি ১৪/১৫ হাজার টাকা লোকসান গুণতে হবে। চাষীরা অভিযোগ করে আরো বলেন, অজ্ঞাত রোগ-বালাইয়ে যখন আমাদের ক্ষেতের ফসল নষ্ট হচ্ছিল তখন কৃষি অফিসের কোন পরামর্শ বা সহায়তা পাইনি।

ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের শশা চাষীরা জানান, সরকারি বা বেসরকারি সংরক্ষণাগার থাকলে তাদের এই লাখ লাখ টাকা লোকসান দিতে হতোনা। তাই জরুরি ভিত্তিতে কাঁচামাল সংরক্ষণের জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে ১টি করে সংরক্ষণাগার প্রতিষ্ঠার জোর দাবি জানান তারা।

উপজেলা কৃষি অফিসার নুরে আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ফলন কম ও উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় কৃষকরা অপূরণীয় ক্ষতির মুখে পড়েছে। তিনি হতাশা ব্যক্ত করেন বলেন, এই লোকসানের প্রভাব পরবর্তী ফসলের উপর পড়বে এবং আগামিতে এই কৃষকরা শশা চাষে নিরুৎসাহিত হবে। শশা ক্ষেতে রোগ বালাই বিষয়ে আমাদের জানা ছিলোনা। সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের স্ব-স্ব ব্লকের মাঠে গিয়ে কৃষকের পাশে দাঁড়াতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমি নিজেও মাঠে যাব। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হবে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2024
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!