শিরোনাম: লামা উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড়ে বিধ্বস্ত শতশত বসতবাড়ি জেলা প্রশাসকের হুঁশিয়ারিঃ উপজেলা নির্বাচনে কোনো অনিয়ম বরদাস্ত করা হবেনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনঃ প্রিজাইডিং,সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ সর্বজনীন পেনশন স্কিম সুষ্ঠ ও সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেলা বাস্তবায়ন কমিটির প্রস্তুতি সভা কুকি-চিনের দুই সশস্ত্র সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত বান্দরবানে রহমতের বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় করলেন ধর্মপ্রান মুসল্লিরা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবার সর্বজনীন পেনশন স্কিম কার্যক্রম বাড়াতে চালু হলো হেল্প ডেস্ক কেএনএফ এর ৭ সদস্য কারাগারেঃ রুমা ছাত্রলীগ সভাপতি কে বহিষ্কার

চাঙ্গা হচ্ছে জলবায়ু তহবিল: নতুন আশা বাংলাদেশের


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :১২ এপ্রিল, ২০২১ ১২:০৬ : পূর্বাহ্ণ 215 Views

আগামী ২০৫০ সাল নাগাদ কার্বন নিঃসরণ মাত্রা শূন্যতে নামিয়ে আনার চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জনে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে বিশ্বের শীর্ষ দূষণকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। প্রভাবশালী এ দেশটি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় দুই ট্রিলিয়ন ডলারের জলবায়ু প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। এছাড়াও বহুল আলোচিত ‘সবুজ জলবায়ু তহবিলে’ বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রদানের ঘোষণাও দিয়েছে। প্যারিস চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়া দেশটি ইতোমধ্যে আবার চুক্তিতে ফিরেছে। এতে বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলোও নড়েচড়ে বসেছে। জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলায় ঢাকঢোল পিটিয়ে তারা কাঁড়ি কাঁড়ি ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রম্নতি দিচ্ছে। এতে নতুন আশা দেখছে ঝুঁকির শীর্ষে থাকা বাংলাদেশসহ ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো।জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আবার নেতৃত্বে ফিরতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিশেষ দূত ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বাংলাদেশ সফরে এসে বলেছেন, বাংলাদেশের জন্য ইউএসএআইডির মাধ্যমে ১৫ মিলিয়ন ডলারের জলবায়ু প্রকল্প করা হয়েছে। এছাড়া প্রেসিডেন্ট বাইডেন সবুজ জলবায়ু তহবিলে আরও ১০০ মিলিয়ন ডলার নতুন করে বরাদ্দের প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন। যা ২০২৫ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। জলবায়ু ইসু্যতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের হারানো মর্যাদা বাইডেন পুনরুদ্ধার করতে চান।এ বিষয়ে ইকুইটি বিডির প্রধান সমন্বয়কারী রেজাউল করিম চৌধুরী যায়যায়দিনকে বলেন,জলবায়ু ইসু্যতে জো বাইডেন প্রশাসন বাংলাদেশকে গুরুত্ব দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লিডার্স সামিট অন ক্লাইমেটের দাওয়াতপত্র পৌঁছে দিতে বিশেষ দুত জন কেরি বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি প্যারিস চুক্তিতে গ্রহণযোগ্য ভূমিকা রেখেছিলেন। বাংলাদেশ লাভবান হতে চাইলে এখন দুই ভাবে জলবায়ু তহবিল থেকে অর্থ আনতে পারে। প্রথমত দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে আর দ্বিতীয়ত সবুজ জলবায়ু তহবিলের মাধ্যম্যে। তবে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মধ্য দিয়ে জলবায়ু তহবিল থেকে অর্থ আনা সহজ হবে। আমাদের উচিত এই সুযোগ কাজে লাগানো।যুক্তরাষ্ট্রের ইতিবাচক ভূমিকায় বিশ্বজুড়ে জলবায়ু ইসু্য ফের চাঙা হয়ে ওঠেছে। এবার প্রাধান্য পাচ্ছে জলবায়ু তহবিলের অর্থায়ন। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য মূলত শিল্পোন্নত দেশগুলো দায়ী। বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুই অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও চীন সম্মিলিতভাবে বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণের ৪০ শতাংশের জন্য দায়ী। এশিয়া ও ইউরোপের বড় অর্থনীতির দেশগুলোও এগিয়ে রয়েছে। সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণকারী চীন গত ২০২০ সালে জীবাশ্ম জ্বালানি পুড়িয়ে মোট হাজার কোটি টন কার্বন নিঃসরণ করে। বিশ্বের একক পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এককভাবে বায়ুমন্ডলে ২২ শতাংশ কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস নির্গমনের জন্য দায়ী। ধনী দেশগুলো ব্যাপক কার্বন নিঃসরণ করে থাকে। এ কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ২০১৫ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে উন্নত বিশ্ব ‘সবুজ জলবায়ু তহবিলে’ ১০ হাজার কোটি ডলার জোগান দিতে সম্মত হয়েছিল। অথচ প্যারিস চুক্তির পর বিশ্ব মোড়ল খ্যাত দেশ যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায়। এতে শিল্পোন্নত অন্য দেশগুলোও জলবায়ু তহবিলে অর্থায়নে চুপ থাকে। প্যারিস চুক্তি হয়ে পড়ে নড়বড়ে। প্যারিস চুক্তিতে সই করার পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতায় তহবিলে আশানুরূপ অর্থ আসেনি। সবুজ জলবায়ু তহবিল হয়ে ওঠে শূন্য কলসি।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী জলবায়ু ক্ষতি মোকাবিলায় যে ক্ষতিপূরণ বাংলাদেশের পাওয়া উচিত তা পায়নি। এ পর্যন্ত গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড (জিসিএফ) থেকে বাংলাদেশের জন্য সাড়ে চার শ’ মিলিয়ন ডলার ছাড় হলেও তার সম্পূর্ণ অর্থ পাওয়া যায়নি। জলবায়ু ক্ষতির প্রভাব মোকাবিলায় আমাদের প্রয়োজন বছরে আড়াই বিলিয়ন ডলার। অথচ আমরা পেয়েছি মাত্র ৩শ’ মিলিয়ন। ক্ষতিপূরণ আদায়ে সরকারকে কূটনৈতিক তৎপরতা ও শক্ত অবস্থান বিশ্ব নেতাদের সামনে তুলে ধরতে হবে। লস অ্যান্ড ড্যামেজের ক্ষয়ক্ষতির অর্থ আনতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে নিয়ে জোরালো চাপ দিতে হবে।প্যারিস চুক্তিতে এ বিষয়ে আইনগত বাধ্যবাধকতা না থাকায় যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক অর্থ লগ্নীকারী সংস্থা (ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, এডিবি, আইএমএফ) অর্থ ছাড়ে নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। সর্বোচ্চ দূষণকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র এ চুক্তি থেকে বের হওয়ায় আন্তর্জাতিক অর্থায়নে অনিশ্চয়তা আরও বেড়ে যায়। অথচ যুক্তরাষ্ট্রকে এ তহবিলে সবচেয়ে বেশি অর্থ দেওয়ার কথা। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঐক্য করে শিল্পোন্নত দেশগুলো জলবায়ু তহবিলের অর্থ দিতে গড়িমসি করে।জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. অধ্যাপক কামাল উদ্দিন যায়যায়দিনকে বলেন, জলবায়ু তহবিলে অর্থায়ন কোনো দান-খয়রাত নয়। শিল্পোন্নত দেশগুলো যুগ যুগ ধরে কার্বন পুড়িয়ে যে বায়ুদূষণ করেছে এটা তারই ক্ষতিপূরণ। এ অর্থ দিয়ে গরিব দেশগুলো জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলা করতে পারে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2024
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!