শিরোনাম: বান্দরবান সদর উপজেলা নির্বাচনঃ আলোচনায় চেয়ারম্যান প্রার্থীর ৭ কর্মপরিকল্পনা লামা উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড়ে বিধ্বস্ত শতশত বসতবাড়ি জেলা প্রশাসকের হুঁশিয়ারিঃ উপজেলা নির্বাচনে কোনো অনিয়ম বরদাস্ত করা হবেনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনঃ প্রিজাইডিং,সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ সর্বজনীন পেনশন স্কিম সুষ্ঠ ও সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেলা বাস্তবায়ন কমিটির প্রস্তুতি সভা কুকি-চিনের দুই সশস্ত্র সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত বান্দরবানে রহমতের বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় করলেন ধর্মপ্রান মুসল্লিরা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবার সর্বজনীন পেনশন স্কিম কার্যক্রম বাড়াতে চালু হলো হেল্প ডেস্ক

খুলনায় হাতের মুঠোয় ডিজিটাল ভূমি সেবা


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :৩ জানুয়ারি, ২০২১ ৬:৪৯ : অপরাহ্ণ 233 Views

সরকারি সম্পত্তি রক্ষা, রাজস্ব আদায়, ইজারা, রেকর্ড সংরক্ষণের জন্য এখন আর পুরোনো নথি খুঁজতে হবে না। জলমহালসহ ভূমি ইজারা গ্রহণের জন্য মানুষকে ছুটতে হবে না এক অফিস থেকে অন্য অফিসে। খাসজমি খুঁজে বের করতে সরকারের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদেরও ছুটতে হবে না মাঠেঘাটে। সরকারি ভূমি ব্যবস্থাপনার সব সেবা একটি অ্যাপসে নিয়ে এসেছে খুলনা জেলা প্রশাসন। গত এক বছর ধরে পরীক্ষামূলকভাবে ওয়েবসাইটে অনলাইনের মাধ্যমে চলছে ভূমি সেবা কার্যক্রম। এতে কমে গেছে অনিয়ম। রাজস্ব আদায়ও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। অনলাইনের এই সেবা সবার হাতে পৌঁছে দিতে তৈরি হয়েছে মোবাইল অ্যাপস। যার নাম ‘খুলনাএলএসএম’। ওয়েবসাইট ও অ্যাপসের মাধ্যমে ভূমি সেবা প্রদানের বিষয়টি দেশে এটিই প্রথম।

জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, সরকারের সব খাসজমি, জলমহাল, বালুমহাল ইজারা ও রক্ষণাবেক্ষণ, পরিত্যক্ত ও অর্পিত সম্পত্তি দেখাশোনা- এসব খাত থেকে রাজস্ব আদায় করা জেলা প্রশাসনের অন্যতম কাজ। আবহমানকাল ধরেই বাংলাদেশের ভূমি সংক্রান্ত বিষয়গুলো জটিলতায় ভরা।

জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে জমির ওপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। খাসজমি, ভিপি জমি, পরিত্যক্ত সম্পত্তি, জলমহাল, হাটবাজার চলে যাচ্ছে অবৈধ দখলে। এছাড়া সরকারি স্বার্থ-সংশ্নিষ্ট জমিজমা ব্যক্তি পর্যায়েও রেকর্ড হয়ে যাচ্ছে। জেলা প্রশাসনের স্বল্পসংখ্যক জনবল দিয়ে বিশাল পরিমাণ সরকারি সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ, তদারকি ও রাজস্ব আদায় করা খুবই কঠিন।

সংশ্নিষ্টরা জানান, ২০১৯ সালে খুলনার একটি ইউনিয়ন ভূমি অফিস পরিদর্শনে গিয়ে জেলা প্রশাসক দেখতে পান সরকারের পুরোনো রেকর্ড বইয়ের অনেক পাতা ছেঁড়া। খতিয়ানের কাগজও খোয়া গেছে। ওই সময়ই জেলার সব অর্পিত সম্পত্তি, পরিত্যক্ত সম্পত্তি, হাটবাজার, খাসজমি ও জলমহালের ছবিসহ বর্তমান অবস্থার তথ্য, এসএ খতিয়ান ও আরএস খতিয়ানের ছবি সংবলিত তথ্যভান্ডার তৈরির কাজ শুরু হয়।

খুলনার তৎকালীন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সারোয়ার আহমেদ সালেহীন এই কাজে নেতৃত্ব দেন। সরকারি সম্পত্তির ছবিসহ তথ্যভান্ডার এটিই প্রথম। এ নিয়ে সমকালে ইতোপূর্বে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল।

ছবিযুক্ত ডাটাবেজ তৈরির পর খুলনা জেলার সার্বিক ভূমি ব্যবস্থাকে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আনার উদ্যোগে নেন জেলা প্রশাসক। এর অংশ হিসেবে অর্পিত সম্পত্তি, পরিত্যক্ত সম্পত্তি, হাটবাজার, খাসজমি ও জলমহালসহ ভূমি সেবা সংক্রান্ত সব শাখাকে ডিজিটাল শাখায় রূপান্তরিত করা হয়। ইতোমধ্যে এই শাখাগুলো অনলাইনের আওতায় এসেছে।

সূত্র জানায়, এর পরই অনলাইনের মাধ্যমে ভূমি সংক্রান্ত সেবা প্রদানের কাজ শুরু হয়। গত এক বছর ধরে অর্পিত সম্পত্তি শাখার সব ধরনের কাজ অনলাইনের মাধ্যমেই সম্পন্ন হচ্ছে। ফলে দ্রুত সেবা দেওয়া যাচ্ছে এবং ভূমি ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি কমে গেছে। রাজস্ব আয়ও বেড়েছে।

জেলা প্রশাসনের অর্পিত সম্পত্তি শাখার প্রধান সহকারী হিসেবে তিন বছর ধরে কর্মরত রয়েছেন মো. কবির হোসেন। সমকালকে তিনি জানান, আগে কেউ আবেদন করলে পুরোনো নথি খুঁজতেই অনেক সময় নষ্ট হতো। কোনো নথি হারিয়ে গেলে তো ভোগান্তির শেষ ছিল না। এছাড়া যে কোনো আবেদন নিষ্পত্তি করতে ১০-১৫ দিন পর্যন্ত সময় লাগত। সেবা গ্রহীতাদের বার বার আসতে হতো। ২০১৯ সালের অক্টোবর মাস থেকে অনলাইন করার পর ছয় থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সেবা দেওয়া সম্ভব হয়। তিনি জানান, সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে- অর্পিত সম্পত্তির সব ধরনের তথ্য ওয়েবসাইটে রয়েছে। এখন নথির জন্য দৌড়াতে হয় না। কম্পিউটারে বসেই কোন সম্পদ কোথায় রয়েছে, কত টাকা রাজস্ব বাকিসহ সব ধরনের তথ্য পাওয়া যায়। এক বছর আগে এটা কল্পনাও করা যেত না।

খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জিয়াউর রহমান জানান, অনলাইনের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে নথি আর্কাইভ করায় কাগজের নথি বিনষ্টের আশঙ্কা কমেছে। এক ক্লিকেই ছবিসহ জমির সার্বিক অবস্থা, লিজ কেস সংক্রান্ত মামলাসহ আনুষাঙ্গিক তথ্য থাকায় সহজেই লিজ নবায়ন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাচ্ছে। সফটওয়্যারে রিপোর্ট প্রদানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যার মাধ্যমে জমির অবস্থান, লিজের মূল্য, বর্তমান ইজারাদার, জমির শ্রেণি, লিজের মেয়াদ এবং সরকারি পাওনা সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে কাজ শুরুর পরই আমরা শতভাগ সফলতা পেয়েছি। খুলনা জেলা প্রশাসনের সব বিভাগেরই রাজস্ব আদায় বেড়েছে। শুধু বাংলা ১৪২৬ সালেই হাটবাজার ইজারা থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে চার কোটি ৬৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা, যা রেকর্ড। এছাড়া জলমহাল থেকে রাজস্ব আদায় ৪০ দশমিক ৩১ শতাংশ, অর্পিত সম্পত্তির রাজস্ব বেড়েছে ৩০ শতাংশ। তিনি বলেন, সফটওয়্যারটি সব সময় আপডেট করা হবে। যার কারণে নিত্যনতুন বিষয় এই অ্যাপসে পাওয়া যাবে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2024
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!