অশ্লীল ছবিতে আসক্তি: অভিভাবকদের অসচেতনতায় ধ্বংসের পথে তরুণরা


নিউজ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ১০:২৫ : পূর্বাহ্ণ 585 Views

বাংলাদেশের বিপুল পরিমাণ তরুণ-তরুণী অশ্লীল ছবির সাইটের প্রতি আসক্ত। অথচ এ ব্যাপারে অধিকাংশ অভিভাবক অসচেতন। এমনকি অনেক অভিভাবক ইন্টারনেট সম্পর্কে কোন ধারণা-ই রাখেন না। অথচ সন্তানের পড়ালেখা ও খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে যতটা খোঁজ নেওয়া উচিত তার চেয়েও বেশি নজর রাখা উচিত সন্তানরা ইন্টারনেট দুনিয়ায় কি করে বেড়াচ্ছে, কৌতুহলবশত ধ্বংসের পথে পা বাড়াচ্ছে না তো ?
জীবনের শুরুতেই অশ্লীল ছবিতে এমন আসক্তি পাল্টে দিচ্ছে কারো কারো জীবন। কেউ কেউ কিশোর বয়স থেকেই হয়ে উঠছে বেপরোয়া। নারীসঙ্গ খুঁজতে হয়ে উঠে পাগলপ্রায়। এই কিশোরদের দিয়েই ঘটছে অঘটন। সম্প্রতি একটি গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, অশ্লীল ছবি দেখার কারণে শিশুরা পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারে না, যৌন সহিংসতার প্রতি আকৃষ্ট হয়, অশ্লীলতার চর্চা বেড়ে যায়, মা-বাবাকে অসম্মান করতে শেখে, সামাজিক মূল্যবোধ নষ্ট হয়ে যায় এবং মনে ধর্ষণের ইচ্ছা জাগিয়ে তোলে।
স্কুল শিক্ষার্থীদের মধ্যে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে অশ্লীল ছবির প্রতি আসক্তি। এই আসক্তি খুব সহজেই শিশুদের ঠেলে দিচ্ছে অন্ধকার জগতের দিকে। ফলে দীর্ঘমেয়াদে এই শিশু-কিশোররাই জড়িয়ে পড়ছে বড় বড় অপরাধের সঙ্গে।
একটি বেসরকারি গবেষণায় উঠে এসেছে, রাজধানীতে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের প্রায় ৭৭ ভাগ কোনো না কোনো ভাবে অশ্লীল ছবি দেখছে। সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, বিকৃত যৌনশিক্ষার মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠা এসব শিশু পরিবার ও রাষ্ট্রের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। এক্ষেত্রে অভিভাবকদের সচেতনতার পাশাপাশি সরকারকে কঠোর হবার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। প্রসঙ্গত ইতোমধ্যে প্রায় ১৫ হাজার অশ্লীল ছবির সাইট বন্ধ করে দিয়েছে বর্তমান সরকার।
মনোচিকিৎসকরা মনে করেন, এভাবে ছেলেমেয়েদের মধ্যে অশ্লীল ছবিতে আসক্তি বাড়তে থাকলে আগামী দুই দশকের মধ্যে সামাজিক মূল্যবোধ আর ধর্মীয় অনুশাসন বলে কিছু থাকবে না। বয়ঃসন্ধিকালে প্রত্যেক শিশুকেই সুস্থ আর স্বাভাবিক যৌনতা সম্পর্কে জানা উচিত। যদি না জানে তার ফলে দেখা যায় তারা অশ্লীল ছবি দেখে যৌন সম্পর্ককে অস্বাভাবিক ভাবতে শুরু করে। এর প্রভাব পড়ে তাদের সামাজিক আচরণে। এমনকি বড় হওয়ার পরে দাম্পত্য সম্পর্কে এর প্রভাব পড়ছে।
আমাদের সমাজে ধীরে ধীরে পারিবারিক বন্ধন কমে যাচ্ছে। বাবা মায়েরা অনেক বেশি ব্যস্ত থাকায় ছেলেমেয়েকে প্রয়োজনীয় সময় দিতে পারেননা। ফলশ্রুতিতে সন্তানরা নিজের অজান্তেই অশ্লীল ছবিতে আসক্ত হয়ে অন্ধকার জগতে পা বাড়াচ্ছে। এক্ষেত্রে বাচ্চাদের কোনো বিষয়ে চাপ প্রয়োগ না করে তাকে পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে, তারমধ্যে এমন মনোবৃত্তি তৈরি করতে হবে যেন সে লুকিয়ে লুকিয়ে অশ্লীল ছবি বা নিষিদ্ধ কোনো জিনিসের প্রতি আসক্ত না হয়। বাচ্চাদের এই মনোবৃত্তি তৈরিতে পরিবার, বাবা-মা, শিক্ষক, গণমাধ্যম সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তবেই মুক্তি মিলবে এই ভয়ঙ্কর অভিশাপ থেকে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2024
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  

error: কি ব্যাপার মামা !!