শিরোনাম: বান্দরবানে রহমতের বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় করলেন ধর্মপ্রান মুসল্লিরা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবার সর্বজনীন পেনশন স্কিম কার্যক্রম বাড়াতে চালু হলো হেল্প ডেস্ক কেএনএফ এর ৭ সদস্য কারাগারেঃ রুমা ছাত্রলীগ সভাপতি কে বহিষ্কার যৌথ বাহিনীর অভিযানঃ তিন উপজেলায় স্থগিত হলো ভোট প্রান্তিক পর্যায়ে উন্নয়ন প্রচার প্রকল্পের আওতায় মহিলা সমাবেশ অনুষ্ঠিত রুমার দুর্গম মুনলাইপাড়া এলাকায় সেনাবাহিনীর অভিযানে এক কেএনএফ সশস্ত্র সন্ত্রাসী নিহত ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় আর দুইজন রিমান্ডে বান্দরবানে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বন্ধের আহবান জানালো বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর নেতারা

সীমান্তে কঠোরতা-বঙ্গবন্ধু চত্বর নির্মাণের পর থেকেই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছেঃ ইউএনও মেহরুবা ইসলাম


ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশের সময় :২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ৮:৩৬ : অপরাহ্ণ 1358 Views

বান্দরবান এর আলীকদম উপজেলায় বঙ্গবন্ধু চত্বর নির্মাণ এর পর থেকেই একটি মহল আমার উপর ক্ষেপে আছে।পাশাপাশি আলীকদম-মিয়ানমার সীমান্তে চোরাই পথে অবৈধ পশু এবং মাদক প্রবেশে টাস্কফোর্স এর সদস্য হিসেবে অনেক গুলো অভিযানে আমার উপস্থিতি এবং সিদ্ধান্ত এই মহলটি অনেক দিন ধরেই মেনে নিতে পারছিলেন না।তাঁরই একটি বহিঃপ্রকাশ ছিলো শুক্রবার চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের ফাইনাল ম্যাচটির ট্রফি ছুঁডে মারার মদদপুষ্ট ভিডিও প্রকাশ।সিএইচটি টাইমস ডটকম কে এমনটাই জানিয়েছেন আলীকদম এর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেহরুবা ইসলাম।

জানা যায়,বান্দরবানের আলীকদমে ট্রফি ছুড়ে ফেলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে একটি মহল।শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আলীকদম চৈক্ষ্যং ইউ‌নিয়‌নের চৈক্ষ্যং উচ্চ বিদ্যালয় মা‌ঠে আবাসিক যুব স্বাধীন সমাজের উদ্যোগে ফুটবল টুর্নামেন্ট অনু‌ষ্ঠিত হয়।

খেলা শেষে খেলোয়াড়দের দুইপক্ষের ঝগড়াকে শান্ত করতে ও বুঝাতে উদারণ দেখাতে খেলোয়াড়দের সম্মতিতে ট্রফি টেবিলে ছুড়ে মারেন ইউএনও।কিন্তু দীর্ঘ সময়ের ভিডিও কে কাটপিস করে পুরো ঘটনার আংশিক ভিডিও প্রকাশ করা হয় যাতে ইউএনও এর ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায় এবং পরে কাটপিস এর ভিডিও কে পুঁজি করে আলীকদম এর একটি মহল ইউএনও এর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যায়।

শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত ফুটবল টুনামেন্টের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহরুবা ইসলাম।

ফুটবল টুর্নামেন্ট পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বলেন,ফুটবল খেলায় আবাসিক একাদশ ও রেপারপাড়া একাদশ দুই টিমই দুই গোলে ড্র করে।পরে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে।আবাসিক একাদশ চারটি শট এর বিপরীতে তিনটি গোল করেছে এবং রেপারপাড়া একাদশ তিনটি শটে নিয়ে একটি গোলও করতে পারে নি।এরইমধ্যে আবাসিক দলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

তারা আরও বলেন,মঞ্চে অন্যান্য অতিথিরা বক্তব্য দেওয়ার পরে প্রধান অতিথির বক্তব্য শুরুর আগে হট্টগোল বাধে দুই টিমের মধ্যে।রেপারপাড়া একাদশ খেলার ফলাফল মানতে নারাজ।তাদেরকে বুঝানোর চেষ্টা করেও কোন ভাবে মানাতে পারেনি দায়িত্বশীলরা।খেলোয়াড়রা ইউএনওকে ট্রফি কাউকে না দিয়ে ভেঙে ফেলার জন্য আহবান জানায়।পরে ট্রফি ছুড়ে ফেলার পর উপস্থিত কোনও খেলোয়াড় বা টুর্নামেন্ট পরিচালনা কমিটি এই বিষয় নিয়ে কোন প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।এমনকি ইউএনও ট্রফি ছুঁড়ে ফেলার পর সবাই মেডেলও গ্রহণ করেছে খেলায় উপস্থিত প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর হাত থেকে।উপজেলা নির্বাহী অফিসার দুই দলের খেলোয়াড়দের গলায় নিজেই মেডেল পরিয়ে দেন।

কিন্তু ১ মিনিট ১১ সেকেন্ড এর সেই ভিডিও তে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ টিম এর খেলোয়াড়রা মেডেল গ্রহণ করার দৃশ্যটি রহস্যজনক ভাবে কেটে দেয়া হয়।পরে অনুষ্ঠান শেষ করে সবাই চলে যায়।তারা আরও বলেন,চৈক্ষ্যং এলাকায় এবিষয়ে কোন সমস্যা হচ্ছে না।যা সমস্যা হচ্ছে তা আলীকদম সদর কেন্দ্রিক একটি মহল এর বলেও জানান টুর্নামেন্ট আয়োজন সংশ্লিষ্টরা।

ট্রফি ছুড়ে ফেলার পরও কেউ তো প্রতিবাদ করেনি এবং স্থানও ত্যাগ করেনি।এমনকি নিয়মানুযায়ী সম্মাননা গ্রহণ করেছে।আমরা তো কাউকে নালিশও করিনাই।তারপরও কেন এগুলো হচ্ছে বুঝতে পারছি না।তবে এমন বিষয় গুলো তে নিশ্চয়ই কোনও রহস্য আছে।

উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি সমরঞ্জন বড়ুয়া বলেন,গতকাল থেকে এই ঘটনায় তিলকে তাল করছে গরু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট।দীর্ঘদিন ধরে ইউএনও মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে অবৈধ গরু পাচার বন্ধে কঠোর পদক্ষেপের কারনে এই ঘটনাকে সামনে এনে বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে।

চৈক্ষ্যং ইউনিয়ন পরিষদ এর মহিলা সদস্য আয়েশা বেগম বলেন,ঘটনার আংশিক প্রচার হচ্ছে।দুই পক্ষ বাড়াবাড়ি করায় তাদের শান্ত করা এবং তাদের সম্মতিতেই দুই ট্রফি টেবিলের উপর ছুঁড়ে মেরেছেন।এটি খেলোয়াড়দের দাবির প্রেক্ষিতে তাদের সম্মতিতেই ট্রফি ছুড়ে ফেলা হয়।পরে খেলোয়াড়রা তাদের মেডেল এবং প্রাইজমানিও হাসিমুখে গ্রহণ করেছে।

চৈক্ষ্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন বলেন,পুরো ঘটনায় আমি উপস্থিত ছিলাম।খেলোয়াড়রা ট্রফি নিতে চাচ্ছে না।তিনি আরও বলেন,ইউএনও মহোদয় ট্রফি তার কাছে আমানত হিসেবে রাখার ঘোষণা দেন এবং নতুন করে একটি খেলা দিয়ে জয় ও পরাজয় নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেন।দ্বিতীয়বার খেলার জন্য সব খরচ তিনি বহন করারও ঘোষণা দেন।কিন্তু ছেলেরা বলেন ট্রফি ছাড়া আমরা এমনিতেই খেলব।ট্রফি ছুড়ে ফেলার পরও কোন প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।সবাই পুরষ্কার গ্রহণ করেছে।কিন্তু একটি মহল সদরে রহস্যজনক ঘটনা ঘটিয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মেহেরুবা ইসলাম মুঠোফোনে বলেন,খেলা শেষ হবার পর থেকে হট্টগোল চলছিল।কিছু টা শান্ত হয়ে পুরস্কার বিতরণের মঞ্চে হঠাৎ খেলোয়াড়রা এসে বললেন,তিন গোল চার গোল তারা মানে না। আবার টাইব্রেকার দিতে হবে কিন্তু আবাসিক একাদশ তা মানতে নারাজ।এনিয়ে ঝগড়া লেগে যায় দুই পক্ষের মধ্যে।শান্ত করতে দীর্ঘ সময় কথা বলেছি।তাদের বুঝাতে তাদের সম্মতিতেই ট্রফি ছুঁড়ে ফেলা হয়।পরে দুই দলের খেলোয়াড়রা মেডেল গ্রহণ করেছে।ট্রফি ছুড়ে ফেলার পরও আরও অনেক কথা বলেছি কই সেই ভিডিও কেউ প্রকাশ করেনি।কিন্তু পুরো ভিডিও বাদ দিয়ে আংশিক ভিডিও প্রচার করছে একটি মহল।

আংশিক ভিডিও প্রকাশকে ষড়যন্ত্র আখ্যায়িত করে তিনি আরও বলেন,আমি সরকারি কাজ করতে এখানে এসেছি ও সরকারি দায়িত্ব পালন করছি যা অনেকে সহজভাবে নিতে পারছে না।সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে গরু আসছে টাস্কফোর্স তা আটক করছে।উক্ত টার্সফোর্সের আমিও একজন।উপজেলায় বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ হচ্ছে তাও মানতে পারছে না একটি মহল।সর্বশেষ বঙ্গবন্ধু চত্বর করার পর থেকে একাংশ আমার উপর ক্ষেপে আছে।

এদিকে একটি খেলার ১ মিনিট ১১ সেকেন্ড এর ভিডিও নিয়ে সৃষ্ট ঘটনায় একজন ইউএনও কে যেভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে তাতে আগামীতে মাঠ প্রশাসনের কোনও কর্মকর্তারা তাদের রুটিন কার্যক্রম এর বাইরে গিয়ে কোনও ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট আয়োজনে অতিথি হিসেবে যাবেন কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।কারণ একটি ফাইনাল খেলার সময় কমপক্ষে দুই ঘন্টা বরাদ্দ থাকে কিন্তু একজন কর্মকর্তা কে তিনি পদাধিকার বলে যে পদেই থাকুন না কেনও মাত্র ১ মিনিট ১১ সেকেন্ড এর ভিডিও প্রকাশ করে হেনস্তা করার মতো ঘটনা দেশজুড়ে চাঞ্চল্য তৈরি করেছে।এতে খেলাধুলাই ক্ষতিগ্রস্থ হবার আশংকা রয়েছে এমনটাই অভিমত জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বান্দরবান এর স্থানীয় ক্রীড়া সংগঠকরা।

এছাড়াও আলীকদম এর ফুটবল টুর্নামেন্ট এর ঘটনা নিয়ে একের এক বিভ্রান্তি এবং গুজবে ফেসবুক সয়লাব হয়ে গেছে।বেশকিছু বেনামী ফেসবুক আইডি থেকে ইউএনও মেহেরুবা ইসলাম এর চরিত্র হনন করা হচ্ছে।এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এর সময় হয়েছে বলে জানিয়েছে আলীকদম এর সাধারণ মানুষ।

একজন উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে নিয়ে এভাবেই নোংরামি ছড়ানো হচ্ছে বেনামি ফেসবুক আইডি থেকে যা নিয়ে সর্বমহলে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।জানা গেছে এই কাজটিও আলীকদম সদর থেকে কিছু লোক নিয়ন্ত্রণ করছে।একটি স্ক্রিনশট সংযুক্ত করা হলোঃঅনেকেই বলছে এই ধরনের প্রচারণা দিয়ে জনপ্রশাসন কে উদ্দেশ্যমূলকভাবে জনগণের সামনে হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে।এই ধরনের বেনামি আইডি দিয়ে অপপ্রচার গুলোর কারণে সমাজে জনপ্রশাসন এর ভাবমূর্তিকেও প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
April 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!