শিরোনাম: উপজেলা পরিষদ নির্বাচনঃ প্রিজাইডিং,সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ সর্বজনীন পেনশন স্কিম সুষ্ঠ ও সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেলা বাস্তবায়ন কমিটির প্রস্তুতি সভা কুকি-চিনের দুই সশস্ত্র সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত বান্দরবানে রহমতের বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় করলেন ধর্মপ্রান মুসল্লিরা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবার সর্বজনীন পেনশন স্কিম কার্যক্রম বাড়াতে চালু হলো হেল্প ডেস্ক কেএনএফ এর ৭ সদস্য কারাগারেঃ রুমা ছাত্রলীগ সভাপতি কে বহিষ্কার যৌথ বাহিনীর অভিযানঃ তিন উপজেলায় স্থগিত হলো ভোট প্রান্তিক পর্যায়ে উন্নয়ন প্রচার প্রকল্পের আওতায় মহিলা সমাবেশ অনুষ্ঠিত

জেলা কমিটিতে যোগ্য ও ত্যাগিরা বাদ পড়ায় ক্ষোভ বাড়ছে তৃণমূল বিএনপি তে


প্রকাশের সময় :১০ মার্চ, ২০১৭ ৮:৪৬ : অপরাহ্ণ 1370 Views

সিএইচটি টাইমস নিউজ ডেস্কঃ-আগামী ১৯ মার্চ বিএনপির জাতীয় কাউন্সিলের একবছর পূর্ণ হবে।আর সাংগঠনিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য তৃণমূলে দলকে সংগঠিত করার উদ্যোগ নেয় গেল বছর দলের জাতীয় কাউন্সিলের পর।উদ্দেশ্য ছিল একদিকে দলকে গোছানো আর অপরদিকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনোপযোগী করে দলকে তৈরি করা;কিন্তু নিজেদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল,স্থানীয় পর্যায়ে প্রভাবশালী নেতাদের অপ্রতিরোধ্য মনোভাব,তৃণমূল নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করে পকেট কমিটি গঠনের ঘটনায় বিএনপি তৃণমূলে আরও সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হওয়ার পাশাপাশি মনোবল হারাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন দলটির নেতাকর্মীরা।যদিও দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে সারাদেশে বিএনপির জেলা কমিটি গঠন ও পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া চলমান;কিন্তু কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের কমিটি ঘোষণা করার কারণে অধিকাংশ জেলা কমিটিতে যোগ্য ও দলের ত্যাগিরা বাদ পড়ছেন স্থানীয় পর্যায়ে লবিং-গ্রুপিংয়ের কারণে।কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে তৃণমূল নেতাদের যার সম্পর্ক যত গভীর ঘোষিত কমিটিগুলোতে সেই নেতার প্রিয়ভাজন বিতর্কিতদের জায়গা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।বিএনপির ৭৫ সাংগঠনিক জেলার মধ্যে এ পর্যন্ত প্রায় ৩৪টি জেলা কমিটি ঘোষণা করেছে বিএনপি।তবে অধিকাংশ কমিটি আংশিক ঘোষণা করা হয়েছে।কেন্দ্র থেকে কমিটি ঘোষণার কারণে স্থানীয় পর্যায়ে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ-বিক্ষোভ।কমিটি ঘোষণার পর এসব এলাকায় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।পক্ষে-বিপক্ষের মধ্যে ঘটছে সংঘর্ষের ঘটনা।এমনকি জেলা বিএনপির কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে।কিন্তু তৃণমূলে বিএনপিতে এই আগুন নিভানোর কোনো উদ্যোগ কেন্দ্র থেকে না নিয়ে বরং একের পর এক কমিটি কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করছে বিএনপি।বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অবঃ) মাহবুবুর রহমান এ ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন,বড় দল গোছানোর সময় কিছু সমস্যা হতেই পারে।এটা শুধু বিএনপিতে নয়,দেশের অন্যান্য বড় দল গোছানোর সময়ও কিছু সমস্যা সৃষ্টি হয়।আবার কমিটি পুনর্গঠন করে দেওয়ার পর ঠিক হয়ে যায়।এদিকে ঘোষিত জেলা কমিটির মধ্যে রাজশাহী, দিনাজপুর,জয়পুরহাট,সাতক্ষীরা,খুলনা, বরগুনা,বান্দরবান জেলাসহ প্রায় অধিকাংশ জেলায় বিএনপির নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।অযোগ্য ও সুযোগ সন্ধানী এবং বিতর্কিতদের কমিটিতে পদায়ন করার ঘটনায় এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে তৃণমূলের বিএনপির কমিটিতে।আন্দোলন-সংগ্রামে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীরা ক্রমশ দল থেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন।কেন্দ্র ঘোষিত কোনো কর্মসূচি অনেক জেলায় পালন করা হয় না।গত বছর ১৯ মার্চ দলের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে তৃণমূলের নেতারা দলের প্রধান খালেদা জিয়ার কাছে দাবি জানিয়েছিলেন তৃণমূলের কমিটি করার ক্ষেত্রে যেন কেন্দ্র থেকে কোনো কোনো কমিটি চাপিয়ে দেওয়া না হয়। খালেদা জিয়া তৃণমূলের নেতাদেরকে আশ্বস্ত করেছিলেন এবার কমিটি গঠনে কেন্দ্র থেকে কোনো কমিটি চাপিয়ে দেওয়া হবে না।বরং স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করে দলে প্রবীণ-নবীনের সমন্বয় করে কমিটিগুলো করা হবে।কিন্তু দলের প্রধানের সেই নির্দেশনা মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।এদিকে গত বুধবার সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।সেখানে দলের যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের অবমূল্যায়ন করে সাধারণ সম্পাদক পদে দলের মধ্যে বিতর্কিত একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।সেখানকার বিএনপির নেতাকর্মীরা এটাকে সর্বকালের সেরা তামাশার কমিটি বলে মন্তব্য করেছেন ফেসবুকে।সাবেক একজন সংসদ সদস্যকে তারা দায়ী করে বলেছেন তার ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার কারণে সাতক্ষীরা জেলা বিএনপিতে যোগ্যদের মূল্যায়ন করা হয়নি।কমিটিসহ সভাপতি হিসেবে স্থান পাওয়া এক নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান,এটা কেন্দ্রীয় কমিটির একটা জোকস ছাড়া আর কিছুই নয়।কেন্দ্র আমাদের কথার কোনো গুরুত্ব না দিয়ে সাবেক ওই সংসদ সদস্যকে গুরুত্ব দিয়ে একটি পকেট কমিটি গঠন করে আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে।এদিকে জয়পুরহাটে বিএনপির দুগ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধরা।দিনাজপুরে প্রায় ৬ মাস আগে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি গঠিত হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।এছাড়া আহবায়ক কমিটির মধ্যে সমন্বয়ের অভাব থাকায় বাকবিতণ্ডা নিরসনে এবং কমিটিতে সদস্য বাড়ানোতেই বেশি সময় পার হওয়ায় সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানায় নেতাকর্মীরা।এর ফলে কমিটি নিয়ে দলের মধ্যে একদিকে যেমন দেখা দিয়েছে দ্বিধাবিভক্তি,পাশাপাশি তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে বাড়ছে ক্ষোভ।সাত বছর পর রাজশাহী জেলা ও মহানগর বিএনপির কমিটি নিয়ে সেখানেও নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বেড়েছে। নতুন কমিটির বিরুদ্ধে মহানগর দলীয় কার্যালয়ে তালা,কেন্দ্রীয় নেতার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ভাঙচুর চেষ্টা,জনপ্রতিনিধিদের বিবৃতির পর রাজশাহী বিএনপি রক্ষা কমিটি গঠন করে দলটির একাংশের নেতাকর্মীরা।গত ১ জানুয়ারি বিকালে নগরীর রাজারহাতা এলাকায় মহানগর বিএনপির মিনুপন্থি নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে ‘রাজশাহী বিএনপি রক্ষা কমিটি’ ঘোষণা হয়।মহানগর বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি নজরুল হুদাকে আহ্বায়ক ও বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সভাপতি সাইদুর রহমান পিন্টুকে সদস্য সচিব করে ৩১ সদস্যবিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।বান্দরবান জেলার কমিটি ঘোষণার পর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বান্দরবান বিএনপির রাজনীতি।একে একে কমিটির বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন ও পদত্যাগের ঘটনা ঘটেছে।সর্বশেষ কমিটির প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা টানা বিক্ষোভ মিছিল করেছে।কমিটি গঠনে বড় ধরনের আর্থিক লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ উত্থাপন করেছে বিএনপি সমর্থক নেতাকর্মীরা।আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই পদবঞ্চিতরা দলীয় চেয়ারপারসন এর সাথে দেখা করে কমিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।গত বছরের সরকারবিরোধী আন্দোলনে চরম ব্যর্থতার পর নতুন কমিটি গঠন নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে এক ধরনের চাঙ্গাভাব এলেও কমিটি গঠনের পর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে।এদিকে কেন্দ্র থেকে আংশিক কমিটি ঘোষণার পর বড় ধরনের বিপাকের মধ্যে পড়তে হচ্ছে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদেরকে।একদিকে তারা স্থানীয় নেতাকর্মীদের যেমন তোপের মুখে পড়ছেন অপরদিকে তাদের অসহযোগিতার কারণে কমিটির শূন্য পদগুলোতে নিজেদের পছন্দের লোকদেরকে ঢুকিয়ে নিজেদের ইচ্ছেমত পকেট কমিটি বানিয়ে নিচ্ছেন।আবার কোনও কোনও দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতার বিরুদ্ধে উঠেছে অর্থ নিয়ে কমিটি অনুমোদন এর মতো গুরুতর অভিযোগ।তৃণমূল নেতাকর্মীরা চায়,ত্যাগী,যোগ্য ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নেতৃত্ব।তাদের মতে সভাপতি,সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ত্যাগী নেতা নির্বাচন করা না হলে দল সাংগঠনিকভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না।

 

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2024
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!