পাকুয়াখালীর ট্রাজেডি দিবসে বক্তারা পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি নিশ্চিতকরনে র‌্যাব ক্যাম্প স্থাপন সময়ের দাবি


প্রকাশের সময় :৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ১০:০৯ : অপরাহ্ণ 551 Views

বান্দরবান অফিসঃ-পাকুয়াখালী ট্রাজেডি দিবস উপলক্ষে পার্বত্য বাঙালী ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম মহানগর শাখার যৌথ উদ্যোগে আজ চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বরে পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসী ছাত্র জনতার এক স্বতঃস্ফূর্ত মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান অতিথি বলেন, ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দের ৯ সেপ্টেম্বর উপজাতীয় সংগঠিত সন্ত্রাসী চক্র কর্তৃক সংঘটিত রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বাঘাইছড়ির পাকুয়াখালি নামক স্থানে ৩৫ জন নিরীহ বাঙালি কাঠুরিয়া হত্যার আজও বিচার হয়নি। এ নির্মম অমানবিক হত্যাকান্ডের ২২ বছর অতিবাহিত হলেও সরকারের ভেতরে-বাইরে লুকিয়ে থাকা পাবর্ত্য চট্টগ্রাম নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের যোগসাজশে আজও কূলকিনারা পায়নি মামলা। সেই নির্মম হত্যাযঞ্জের শিকার ৩৫ জন নিরীহ অবহেলিত বাঙালি হত্যাকান্ডের সুবিচার, উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান ও রাজনীতি, চাকুরী, ব্যবসা বাণিজ্য, বাকস্বাধীনতা বিষয়ে সমাধিকার সুনিশ্চিত করতে হবে।

প্রধান বক্তা বলেন, ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দের ৯ সেপ্টেম্বর তৎকালীন শান্তি বাহিনীর লালিত সন্ত্রাসীরা কাপ্তাই এবং লংগদুর ৩৬ জন কাঠুরিয়াকে বৈঠকের কথা বলে পাকুয়াখালি নামক গহীন অরণ্যে নিয়ে যায়। সেখানে নিরীহ কাঠুরিয়াদের হাত পা ও চোখ বেঁধে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ক্ষত বিক্ষত করে ৩৫ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে হয়। তাদের অঙ্গ প্রতঙ্গ বিকৃত করে দেওয়া হয়, চোখ উপড়ে ফেলা হয়। এর মধ্যে ইউনুস আলী নামের একজন কাঠুরিয়া পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। দু’দিনপর ১১ সেপ্টেম্বর ইউনুস আলীকে সাথে নিয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পাকুয়াখালি গহীন অরণ্য হতে ২৮ জন কাঠুরিয়ার ক্ষত বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে। বাকি ৭ জনের লাশ এখনও পায়নি স্বজনেরা। এই ঘটনার পর পর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (অব:) রফিকুল ইসলাম সহ ৪ জন মন্ত্রী লংগদু সফর করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিচার, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের পুনর্বাসন ও আর্থিক ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি দেন। একই বছর ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারকে প্রধান করে ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু কোন এক অজানা রহস্যজনক কারণে তদন্ত কমিটি আজও প্রতিবেদন দেয়নি।

বিশেষ অতিথি বলেন, তৎকালীন সময়ে এই মৃত্যুকূপ থেকে ফিরে আসা ইউনুস আলী বাদী হয়ে একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করেন এবং মামলা হয়েছিল সরকারীভাবেও। সেদিন উপজাতি সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে বাঙালীদের জাতিগত নিধনের উদ্দেশ্যে এবং তাদের কল্পিত জুম্মল্যান্ড বাস্তবায়নের লক্ষে ৩৫ জন কাঠুরিয়াকে নির্মমভাবে হত্যা করেন। এই গণহত্যা মানবতাবিরোধী অপরাধের সমান।

সভাপতি বলেন, শান্তি চুক্তি অনুযায়ী অস্ত্র জমা দেওয়ার কথা থাকলেও পাহাড়ে এখনও অস্ত্রের ঝনঝনানি চলছে। অব্যহত রয়েছে তাদের গুম, খুন, ধর্ষণ ও চাঁদাবাজি। পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য পাহাড়ে যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালনা করা সময়ের দাবি। শান্তি চুক্তির আগে পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ থাকলেও, এখন রয়েছে চারটি সন্ত্রাসী গ্রুপ। তারা অবৈধ অস্ত্রের মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলকে সদা অস্থিতিশীল করে রাখছে। পার্বত্য অঞ্চলের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানসমূহে সেনা ক্যাম্প স্থাপনের দাবি জানান এবং সারা দেশের মত পার্বত্য অঞ্চলে র‌্যাব ক্যাম্প স্থাপনের দাবি জানান এবং পাকুয়াখালি গণহত্যায় নিহত পরিবারদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ এবং দোষীদের শাস্তি দাবি করেন।

পাবর্ত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন- পাঠকপ্রিয় সাপ্তাহিক আলোকিত সন্দ্বীপ পত্রিকার সম্পাদক ও চট্টগ্রাম অনলাইন প্রেস ক্লাবের সভাপতি অধ্যক্ষ মুকতাদের আজাদ খান।

সংগঠনের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির শাখার সাধারণ সম্পাদক ইখতিয়ার ইমনের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা ছিলেন- পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের সাবেক নেতা ও চট্টগ্রাম অনলাইন প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এ বি এম মুজাহিদুল ইসলাম বাতেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আতাউর রহমান।

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি কাউসার উল্লাহ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল করিম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এ.বি.এম আব্দুল আওয়াল, অর্থ সম্পাদক আল- মামুন ও চট্টগ্রাম মহানগর শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমন।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
April 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!