শিরোনাম: উপজেলা পরিষদ নির্বাচনঃ প্রিজাইডিং,সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ সর্বজনীন পেনশন স্কিম সুষ্ঠ ও সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেলা বাস্তবায়ন কমিটির প্রস্তুতি সভা কুকি-চিনের দুই সশস্ত্র সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত বান্দরবানে রহমতের বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় করলেন ধর্মপ্রান মুসল্লিরা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবার সর্বজনীন পেনশন স্কিম কার্যক্রম বাড়াতে চালু হলো হেল্প ডেস্ক কেএনএফ এর ৭ সদস্য কারাগারেঃ রুমা ছাত্রলীগ সভাপতি কে বহিষ্কার যৌথ বাহিনীর অভিযানঃ তিন উপজেলায় স্থগিত হলো ভোট প্রান্তিক পর্যায়ে উন্নয়ন প্রচার প্রকল্পের আওতায় মহিলা সমাবেশ অনুষ্ঠিত

ইনিই সেই বিশাল ইয়াবা গোডাউনের মালিক!!!


প্রকাশের সময় :২৮ মে, ২০১৮ ৭:০৮ : পূর্বাহ্ণ 711 Views

সিএইচটি নিউজ ডেস্কঃ-বাবা আশরাফ মিয়া, কাঠুরিয়া। অভাবের সংসার। বড় ছেলে মনসুর গ্রামে গ্রামে ঘুরে মুরগী কিনে তা বাজারে বিক্রি করেন। তাকে সঙ্গ দেন মোস্তাক আহম্মদ। সংসারের চাপ কমাতে তাকে আনসারের চাকরি জোগাড় করে দেন মনসুর। সেই আনসার সদস্য মোস্তাক আজ শতকোটি টাকার মালিক। হয়েছেন জনপ্রতিনিধিও। চলাফেরা করেন বড় বড় নেতাদের সঙ্গে। আলাদ্দীনের চেরাগ বা কোনো যাদুর কাঠি পাননি তিনি।তাহলে রহস্য কি? কীভাবে হঠাৎ এত সম্পদের মালিক বনে গেলেন কক্সবাজারের রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোস্তাক আহম্মদ?

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মোস্তাকের আঙুল ফুলে কলা গাছ হওয়ার পেছনে রয়েছে ইয়াবা কারবারি। এজন্য রামুর খুনিয়াপালং ইউনিয়নের পূর্ব গোয়ালিয়াপালং এলাকার এই ব্যক্তিকে সবাই ইয়াবা মোস্তাক নামেই চেনে।সূত্র জানায়, অল্প টাকার বেতনের আনসারের চাকরিতে মোস্তাক বেশিদিন থাকেননি। চাকরি ছেড়ে উখিয়ার মরিচ্যা এলাকায় শুরু করেন মিয়ানমারের চোরাই পণ্যের ব্যবসা। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়েন ইয়াবা পাচারে।বছরখানেক আগেও খেয়ে না খেয়ে জীবন গেছে মোস্তাকদের। কিন্তু, ইয়াবা ভাগ্যে এখন তিনি এলাকার অন্যতম ধনাঢ্য ব্যক্তি। কোটি কোটি টাকার সঙ্গে আছে অঢেল সম্পত্তিও।

স্থানীয়রা জানান, দরিদ্র বাবার টাকায় অল্প পড়াশোনা করেন মোস্তাক। সেই সুবাদে আনসারের চাকরি নেন। কিন্তু, ছোটবেলা থেকে লোভী প্রকৃতির মোস্তাক মাত্র তিন বছর পরই স্বল্প বেতনের এই চাকরি ছেড়ে দেন।এরপর বড় ভাই মনসুরের হাত ধরে মিয়ানমারের পার্শ্ববর্তী উখিয়া উপজেলার মরিচ্যা বাজার এলাকায় চোরাই পণ্যের ব্যবসা শুরু করেন।শুরুতে মিয়ানমার সীমান্ত থেকে চোরাই পথে কাপড়, আচার, বিয়ার, মদসহ নানা পণ্য আনতেন। টানা এক বছর চোরাই পণ্যের কারবার করে সীমান্তের সকল অবৈধ পথ রপ্ত করেন মোস্তাক। এক পর্যায়ে জড়িয়ে পড়েন ইয়াবা পাচারে।
শুরুতে স্বল্পসংখ্যক ইয়াবা পাচার করতেন মোস্তাক। চট্টগ্রামে গিয়ে নিজেই সেগুলো বিক্রি করতেন। সেখানেই খুচরা বিক্রেতা থেকে আস্তে আস্তে হয়ে উঠেন পাইকারী বিক্রেতা।

জানা গেছে, মোস্তাক ইয়াবা জগতে পা দেন হ্নীলার শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মদের হাত ধরে। পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নুর মোহাম্মদ নিহত হওয়ার পর ওই সিন্ডিকেট ছেড়ে নিজেই ইয়াবা পাচারের শক্ত সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন।
সিন্ডিকেটে মোস্তাকের অন্যতম সদস্য হিসেবে রয়েছেন তার বড় ভাই মনসুর, ঈদগড় ইউনিয়নের এক জনপ্রতিনিধির ভাই, খুনিয়াপালং ইউনিয়নের আরেকজন ইউপি সদস্যসহ বেশ কয়েকজন।
মোস্তাকের ইয়াবা পাচারের এখন নতুন রুট কক্সবাজার সীমান্তের বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়ন, উখিয়ার পাতাবাড়ি, ভালুকিয়া ও রামুর গর্জনিয়া ইউনিয়ন হয়ে বাইশারি-ঈদগড়-ঈদগাঁও সড়ক।এই রুটে চেকপোস্ট না থাকায় নিরাপদে পাচার হচ্ছে লাখ লাখ পিস ইয়াবা। সম্প্রতি মোস্তাকের সিন্ডিকেটের এক পাচারকারী বিপুল পরিমাণ ইয়াবা নিয়ে বাইশারি ফাঁড়ির পুলিশের হাতে আটক হন।সংশ্লিষ্টরা জানান, মোস্তাক সিন্ডিকেট সবচেয়ে বেশি ইয়াবা পাচার করে সাগর পথে। ইয়াবা বহনের জন্য মোস্তাকের মালিকানাধীন বেশ কয়েকটি ফিশিং ট্রলার রয়েছে। ওই ট্রলারগুলো দিয়ে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা বহন করে ইনানীর রেজু খালের মোহনায় আনা হয়। পরে সেখানে খালাস হয় ইয়াবার চালান।

এক সময়ের খুচরা বিক্রেতা মোস্তাক বর্তমানে বিশাল ইয়াবা গোডাউন গড়ে তুলেছেন। সেখান থেকে লাখ লাখ পিস ইয়াবা পাচার করা হচ্ছে সারাদেশে।ইয়াবার টাকায় মোস্তাক গোয়ালিয়া পালং এলাকায় ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ২০ কোটি টাকার জমি কিনেছেন। টাকার জোরে জনপ্রতিনিধিও হয়েছেন।নিজের কুড়েঘর আলিশান বিল্ডিংয়ে পরিণত করেছেন মোস্তাক। তিনটি স’মিলের মালিক তিনি। রয়েছে ট্রাক, মাইক্রোবাস ও সিএনজি অটোরিকশার ব্যবসা।মোস্তাকের বিরুদ্ধে ইয়াবা পাচারের ৫টি মামলা রয়েছে। একাধিকবার গ্রেফতারও হয়েছেন। সর্বশেষ পুলিশের রামু-উখিয়া সার্কেল এএসপি জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশ ১০ হাজার ইয়াবাসহ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে।

ওই সময় তার অনুগত সদস্যরা পুলিশের ওপর হামলা করে। ওই ঘটনায় রামু থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা হলে কয়েক মাস কারাভোগও করেন মোস্তাক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বেশ কয়েকটি তালিকাতেও তার নাম শীর্ষে রয়েছে বলে জানা গেছে।অবশ্য ধুরন্ধর মোস্তাক জনগণের মন জয় করার নানা কৌশল ইতোমধ্যে রপ্ত করেছেন। গ্রামের প্রতিটি দরিদ্র পরিবারের যুবক-যুবতীর বিয়ের দায়িত্ব নেন তিনি, দেন সমস্ত খরচ। এই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে খুনিয়াপালং ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে মেম্বার নির্বাচিত হয়েছেন।কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুরিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল জানান, মোস্তাক মেম্বারকে গ্রেফতারে কয়েকবার অভিযান চালানো হয়েছে। তবে এখনো তাকে পাওয়া যায়নি। আশা করছি, শিগগিরই তাকে ধরা সম্ভব হবে। সূত্রঃ-(পরিবর্তন ডটকম)

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2024
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!