শিরোনাম: চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ ত্বরান্বিত করতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উপলক্ষে মোবাইল কোর্ট বান্দরবানে আলেম সমাজের সংবাদ সম্মেলন বর্ণাঢ্য আয়োজনে বান্দরবানে উদযাপিত হলো জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস জেলা প্রশাসক মেধাবৃত্তি,বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ গড়তে সেনা জোনের উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ও জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি বান্দরবানে জামায়াতে ইসলামীর বিশাল কর্মী ও সুধী সমাবেশে দুর্গম পাহাড়ে সেনাবাহিনীর মানবিক সহায়তাঃ সুস্থ হয়ে ফিরছে ১১ বছরের জিংক থান ময় বম

সর্বনাশা মাদক: আইন প্রয়োগে কঠোরতা বনাম জাতির ভবিষ্যৎ


প্রকাশের সময় :২৩ মে, ২০১৮ ১২:১৮ : অপরাহ্ণ 951 Views

সিএইচটি নিউজ ডেস্কঃ-যাত্রাবাড়ীর রিকশাচালক এনামুল। মাদকাসক্ত এই ব্যক্তি ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যা করেছে নিজের ৪ বছরের শিশুকে। গ্রেপ্তার হয়েছে কয়দিন আগে। মাদকাসক্তি যে তাকে ভিতর থেকে পশু বানিয়ে ফেলেছে এটা এনামুল এখন ভালোই বুঝে। ড্রাগের নেশা সর্বনাশা। বেহুলা-লখিন্দরের নিশ্ছিদ্র লৌহ বাসরে যেভাবে কাল নাগ প্রবেশ করে লখিন্দরকে দংশন করেছিলো, তেমনিভাবে সমাজের নিয়মনীতি, কড়া পাহারা অতিক্রম করেছে এই ভয়ংকর নেশা মাদকাসক্তি। গ্রাস করে ফেলছে এই সমাজ, এই নেশা বা মাদকাসক্তি সমাজকে বিষবাষ্পে ভরিয়ে তুলছে। যা আমাদের শিক্ষিত-অশিক্ষিত, সচেতন-অসচেতন, ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে এক ভয়াবহ ধ্বংস ও বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে উপনীত করছে।

আজ আমি আমরা সবাই খুব কষ্ট পাই, যে যুবক-যুবতী, তরুণ, তরুণী, কিশোর, কিশোরী, সমাজ আমাদের এই দেশটাকে সোনার বাংলাদেশে পরিণত করবে তাদের হাতে মাদক। জাতির ভবিষ্যৎ কোথায়?রাজধানীসহ সারাদেশেই মাদক এখন হাতের নাগালে। দেশে শুধু মাদকাসক্তের সংখ্যাই বাড়ছে না, মাদকের ভয়াবহতায় মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা সহজেই নির্মম ও নিষ্ঠুর আচরন করছেন। যা সমাজে ভয়াবহ রূপ ধারন করেছে।

আমাদের ধারণা ছিল একশ্রেণির ছাত্র, বখাটে তরুণ বা উচ্ছন্নে যাওয়া যুবকরাই মাদকসেবন করে। কিন্তু না। মাদক নামক মোহনীয় বস্তু একশ্রেণির সরকারি কর্মচারী থেকে শুরু করে কোনও কোনও পুলিশসদস্য, ডাক্তার, প্রফেসর, বুদ্ধিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মাঝেও ঢুকে পড়েছে।সম্প্রতি মাদকদ্রব্যের ব্যবহার বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। শুধু শহর নয়, গ্রাম পর্যায়ে ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়েছে ইয়াবা, হেরোইন, ফেনসিডিল, প্যাথেডিনসহ নানা নেশাজাতীয় দ্রব্য। মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসনের কারণে সমাজ ও পরিবারে বিপর্যয় নেমে আসছে, বেড়েছে খুন, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ নানা ধরনের অপরাধ। ধনী-দরিদ্র উভয় পরিবারের কিশোর-কিশোরী, বিশেষ করে তরুণসমাজ বিপথগামী হচ্ছে। মাদক নিয়ন্ত্রণে আশানুরূপ পারিবারিক ও সামাজিক উদ্যোগের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সবাই।

গত ৪ মে থেকে মাদক নির্মূলে দেশজুড়ে চলছে র‌্যাবের সাড়াশি অভিযান। আর এ অভিযান চলাকালে বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে র‌্যাবের সঙ্গে বন্ধুকযুদ্ধে রাজশাহীর অন্যতম শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী আবুল হাসান ওরফে হাসান ঘাটিয়ালসহ গত ১৪ দিনে ছয় মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে পাঁচ শতাধিক। এছাড়া র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেওয়া হয়েছে এক হাজার ৭০০ জনকে। মাদকসহ ৪৯৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ভোরে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার জি ব্লকের তিন নম্বর রোডে র‌্যাব-১ অভিযান চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলাম ও আব্দুল খালেক ওরফে পলাশকে ৫০ হাজার ১২০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করে। এর আগের রাত্রে র‌্যাব-২ তেজগাঁওয়ের নাবিস্কোর মোড়ে অভিযান চালিয়ে টেকনাফের মাদক ব্যবসায়ী মামুনকে ৪৩ হাজার পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করে।

মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের ঘোষণা এসেছিল প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে। কিন্তু কথার ফুলঝুরি ফোটানো বাংলাদেশের রাজনীতিতে কাজের নজির দেখা যায় না। দেরিতে হলেও সরকার অনুধাবন করেছে জাতির দুর্দশার চিত্র। দেশব্যাপী মাদক নির্মূলে, পর্দার অন্তরালের গডফাদারদের নির্মূলে তাই হার্ড লাইনে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। বন্দুকযুদ্ধ কোনো আইনি তরিকা নয় অবশ্যই কিন্তু এক্ষেত্রে নির্ভর করছে একটি গোটা জাতির ভবিষ্যৎ, তাদের স্বপ্ন। দেশবাসীর তাই সমর্থন এক্ষেত্রে পাওয়া গেছে।

পরিসংখ্যান বলছে, মাদক সেবনকারীদের মধ্যে তরুণ ও শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেশি। তেজগাঁওয়ের মাদকসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, সব পেশার মানুষ ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকে আসক্ত। এর মধ্যে ১০ বছর থেকে তার ঊর্ধ্বের শিক্ষার্থীরা বেশি আসক্ত। বর্তমানে মাদকাক্তদের মধ্যে ইয়াবায় আসক্ত ৭০/৭৫ ভাগ। আর ইয়াবায় আসক্তদের মধ্যে ৬০/৬৫ ভাগ শিক্ষার্থী। তরুণ সমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য কঠোর সাঁড়াশি অভিযানের দাবি উঠেছিল সমাজের সর্ব মহল থেকে।

কেউ কেউ দাবি করেন, মাদক ব্যবসায় জড়িতদের কেউ আটকে রাখতে পারে না। গ্রেফতারের পর কোনো না কোনোভাবে তারা বের হয়ে আসে। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসে। অবশেষে শুরু হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান। আর অভিভাবকসহ সব মহল এ সাঁড়াশি অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছে।মাদককে ‘না’ বলি। আমাদের সচেতনতা, পারিবারিক শিক্ষা আর সরকারের সদিচ্ছাই পারে মাদককে শেকড়সহ উপড়ে দিতে। আর দেরিতে হলেও তাই সরকারের এই উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে। আমরা আশা করি সরকার তার দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকবে।

মাদক বিরোধী অভিযানকে বিতর্কিত করতেও তৎপর একটি গোষ্ঠী। বক্তৃতা, বিবৃতি, টকশোতে গলাবাজি করে অনেকেই প্রতিবন্ধকতা তৈরী করার অপচেষ্টা করছেন। একজনকে দেখলাম এই অভিযানকে বেআইনি বলে ঝড় তুলছেন। মজার বিষয় হচ্ছে ওই ভদ্রলোককে আমি গত ২০ বছর ধরে চিনি, ওই সময় থেকে এখনো পর্যন্ত মাদকাসক্ত তিনি।

ভুলে গেলে চলবেনা, গত ১৯ বছরে চেপে বসা সমস্যা ১৯ দিনে সমাধান করা সম্ভব নয়।

শেখ হাসিনা দেশকে জঙ্গিমুক্ত করছেন। ধৈর্য ধরুন, শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রাখুন। জাতি মাদকমুক্ত মেধাবী প্রজন্ম পাবে।

 

(((স্যোশাল মিডিয়া থেকে নেয়া)))

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!