এই মাত্র পাওয়া :

শিরোনাম: আসন্ন দুর্গাপূজার প্রস্তুতি নিয়ে হিন্দু ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক বান্দরবানে মহিলা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও সমাবেশ বান্দরবান বাজার এলাকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন এর বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান বিএনকেএস এর উদ্যোগে টেকনাফের ক্যাম্প-২২ এ শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে বর্ণিল আয়োজনে স্বাক্ষরতা দিবস উদযাপিত ঢাকায় পার্বত্য উপদেষ্টার সঙ্গে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান রাষ্ট্রদূতদের সাক্ষাৎ বান্দরবান সার্বজনীন কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহারে শুভ মধু পূর্ণিমা উদযাপিত বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের প্রকল্প প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত ক্যালেন্ডার মেনে বিসিএস পরীক্ষা আয়োজনের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

১৩ হাজার সন্ত্রাসীর হাতে ৩ হাজার মারণাস্ত্র…!!!


প্রকাশের সময় :৯ মে, ২০১৮ ৫:০১ : পূর্বাহ্ণ 771 Views

বান্দরবান অফিসঃ-পার্বত্য চট্টগ্রামে চারটি উপজাতীয় আঞ্চলিক সংগঠনের সশস্ত্র গ্রুপের রয়েছে নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী।এর মধ্যে আর্মড ক্যাডারের সংখ্যা প্রায় তিন হাজার।তাদের হাতে রয়েছে তিন হাজারের বেশি আগ্নেয়াস্ত্র।পুরনো অস্ত্রের পাশাপাশি নতুন এবং অত্যাধুনিক অস্ত্রও রয়েছে তাদের।এসব অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে এম-১৬ রাইফেল,মিয়ানমারে তৈরি এম-১ রাইফেল,একে-৪৭ রাইফেল,একে-২২ রাইফেল এবং এলএমজি (লাইট মেশিনগান),হেভি মেশিনগান,জি-৩ রাইফেল, স্নাইপার রাইফেলের মতো ভয়ঙ্কর মারণাস্ত্র।প্রতিবেশী দুটি দেশ থেকে তারা এসব অস্ত্র, গুলি ও প্রশিক্ষণ পেয়ে থাকে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,প্রতিনিয়ত নতুন নতুন অস্ত্র আসছে।মাঝে মধ্যে কিছু ধরা পড়লেও তা খুবই সামান্য।উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের হাত ঘুরে এসব অস্ত্রের একটি অংশ সমতলের জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের হাতেও চালান হচ্ছে।গোয়েন্দা তথ্যে জানা গেছে, মিজোরাম সীমান্ত দিয়ে পাহাড়ি চারটি সশস্ত্র গ্রুপ অস্ত্র,গোলাবারুদ ও গ্রেনেড এনে মজুদ করছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের পুলিশসহ একাধিক সূত্রে জানা গেছে,২০১৪ সাল থেকে চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত বান্দরবান,রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে সশস্ত্র সংগঠনের হাতে ১৩০ জন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও ৮৫ জন বাঙালি নিহত হন।এ সময় আহত হন ২২৩ জন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও ৫৫১ জন বাঙালি।অপহরণের ঘটনা ঘটে প্রায় ৪০০টি।গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে ১৩০টি এবং ৫০০টি অস্ত্র ও সাত হাজার গুলি উদ্ধার হয়।

গত ১৮ এপ্রিল পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়।উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে দুটি ৭.৬২ মি.মি. এসএমজি, একটি অ্যাসল্ট রাইফেল,দুটি পিস্তল,১৬ রাউন্ড অ্যামোনিশন,দুটি এসএমজির ম্যাগাজিন, একটি অ্যাসল্ট রাইফেলের ম্যাগাজিন,দুটি পিস্তলের ম্যাগাজিন ও একটি সিলিং।সম্প্রতি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নানিয়ারচরে ঘটে যাওয়া ছয় হত্যাকাণ্ডের কারণ চাঁদাবাজি,আধিপত্য বিস্তার ও রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা।জেএসএস সংস্কার নেতা সুদর্শন চাকমা আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।তিনি নির্বাচনে দাঁড়ালে স্থানীয় একটি আঞ্চলিক সংগঠনের জন্য ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি হতো।বিশেষ করে নানিয়ারচর ও বাঘাইছড়িতে তারা নির্বিঘ্নে নির্বাচনী কার্যকলাপ পরিচালনা করতে পারত না।অন্যদিকে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক ও জেএসএস সংস্কার মিলে খাগড়াছড়িতে প্রার্থী দিলে মহালছড়ি,দিঘীনালায় ইউপিডিএফ (প্রসিত) নির্বাচনে প্রবল বাধার সম্মুখীন হতো।বর্তমানে জেএসএস (মূল) ও ইউপিডিএফের (মূল) মধ্যে নির্বাচনী সমঝোতার সূত্রে সিজ ফায়ার রয়েছে বলে স্থানীয়ভাবে প্রচার রয়েছে।বিশ্লেষকরা বলছেন,তিন পার্বত্য জেলার পরিস্থিতি হঠাৎ করেই জটিল হয়ে উঠছে।আঞ্চলিক দলগুলোর নেতৃত্বে চার ভাগ হলেও তৃণমূল পর্যায়ে এ বিভক্তি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।পাহাড়ে ছড়িয়ে পড়া এ সহিংসতার কারণ বিশ্লেষণ করে সরকারের একাধিক গোয়েন্দা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়,২০১৭ সালের ডিসেম্বরে পার্বত্য চুক্তির (শান্তি চুক্তি) ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা চুক্তি বাস্তবায়নে সরকার আন্তরিক নয়,এমন অভিযোগ এনে ‘পাহাড়ে আগুন জ্বলবে’ বলে হুঁশিয়ারি দেন।এরপরই ওই বছরের ৫ ডিসেম্বর ইউপিডিএফ সমর্থিত অনাধি রঞ্জন চাকমা (৫৫) নামের নানিয়ারচর উপজেলার সাবেক এক ইউপি সদস্যকে হত্যা করা হয়।ওই ঘটনার মধ্য দিয়ে পাহাড়ে নতুন করে হত্যাযজ্ঞ শুরু।

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন,দুর্গম সীমান্তের কারণে খুব সহজেই সন্ত্রাসীদের হাতে মারণাস্ত্র চলে আসছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের ৮৫ কিলোমিটার সীমান্তের মধ্যে কোনো সীমান্তচৌকি (বর্ডার আউটপোস্ট-বিওপি) নেই।ফলে সেখানে বাধাহীনভাবে অস্ত্র প্রবেশ করছে।সংশ্লিষ্টরা বলছেন,পাহাড়ি সীমান্তে পর্যাপ্ত রাস্তা না থাকায় উন্মুক্ত সীমান্তে বিওপি স্থাপন করা যাচ্ছে না।কেননা বিওপি স্থাপন করতে হলে তার নিরাপত্তায় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নীতকরণ জরুরি। বর্তমান অবস্থায় পার্বত্য চট্টগ্রামে এমন দুর্গম স্থানও রয়েছে যেখানে কোনো সশস্ত্র হামলা হলে নিরাপত্তা বাহিনীর পৌঁছতে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লেগে যায়।অভিজ্ঞ মহলের মতে,নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে সেই সংঘাত ততোই বৃদ্ধি পাবে।সে কারণে সরকারকে এখনই তৎপর হতে হবে।তাদের মতে, দ্রুততার সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাস নির্মূলে সেনাবাহিনী,বিজিবি ও পুলিশের নেতৃত্বে যৌথ অপারেশন পরিচালনা করে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে।পার্বত্য চট্টগ্রামের বাস্তবতায় সন্ত্রাসীদের ভয়ে ক্ষতিগ্রস্তরা মামলা করতে সাহস পায় না।তাই পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে সন্ত্রাসীদের আটক ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
September 2025
MTWTFSS
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031 
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!