এই মাত্র পাওয়া :

শিরোনাম: আসন্ন দুর্গাপূজার প্রস্তুতি নিয়ে হিন্দু ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক বান্দরবানে মহিলা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও সমাবেশ বান্দরবান বাজার এলাকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন এর বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান বিএনকেএস এর উদ্যোগে টেকনাফের ক্যাম্প-২২ এ শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে বর্ণিল আয়োজনে স্বাক্ষরতা দিবস উদযাপিত ঢাকায় পার্বত্য উপদেষ্টার সঙ্গে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান রাষ্ট্রদূতদের সাক্ষাৎ বান্দরবান সার্বজনীন কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহারে শুভ মধু পূর্ণিমা উদযাপিত বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের প্রকল্প প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত ক্যালেন্ডার মেনে বিসিএস পরীক্ষা আয়োজনের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

একেক দিন একেক ছাত্রী কে ফ্ল্যাটে নেয় লম্পট শিক্ষক রবিউল


প্রকাশের সময় :৬ মে, ২০১৮ ১২:৫৯ : পূর্বাহ্ণ 818 Views

বান্দরবান অফিসঃ-শিক্ষক ছাত্রীর মহৎ সম্পর্ককে নষ্ট করে জাতিকে কলুষিত করেছে রবিউল নামের এক শিক্ষক। তার বিরুদ্ধে একাধিক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা যায়, কথিত ওই শিক্ষক ছাত্রীদের ধর্ষণের পর সেই ভিডিও মোবাইলে ধারণের মাধ্যমে ব্লাকমেইল করে বার বার অনৈতিক সম্পর্কে জড়াতে বাধ্য করত ছাত্রীদের।

দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ভিডিও দেখিয়ে ব্লাকমেইল করে গত তিন বছর ধরে ধর্ষণ করে আসছিলো রবিউল। পরে অন্য কোনো উপায় না পেয়ে অবশেষে শিক্ষক রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত অভিযোগ করে ওই ছাত্রী। এরপর বেরিয়ে আসে শিক্ষক রবিউল ইসলামের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অনেক তথ্য। ফাঁস হয় একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে রবিউলের অনৈতিক সম্পর্কের ভিডিও ও অডিও। সেইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয় একাধিক ছাত্রী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার উমেদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রবিউল ইসলাম ৫ম ও ৮ম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রীদের দেখভাল করতো। সেইসঙ্গে ছাত্রীদের ফ্ল্যাটে নিয়ে দাওয়াত খাওয়াতো ও পড়াতো।

এর মধ্যে বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির এক ছাত্রীর ওপর নজর পড়ে তার। ওই ছাত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে রবিউল। এরপর তাকেও ফ্ল্যাটে নিয়ে দাওয়াত খাওয়ায় ১ সন্তানের জনক রবিউল।

স্ত্রী অন্য উপজেলায় চাকরি করার সুবাদে রবিউলের ফ্ল্যাটে নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতো সবাই। এর মধ্যে একদিন ৭ম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের পর ভিডিও ধারণ করে রবিউল।

এরপর শুরু হয় ব্ল্যাকমেইল। ধর্ষণের ওই ভিডিও ফাঁস করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে একাধিক বার ধর্ষণ করা হয় ওই ছাত্রীকে। এভাবে চলে তিন বছর। এর মধ্যে একাধিকবার ছাত্রীর গর্ভপাত ঘটায় রবিউল।

কিছুদিন আগে অন্য ছাত্রীদের ফ্ল্যাটে ডেকে নেয়া দেখে আপত্তি জানায় ওই ছাত্রী। একপর্যায়ে ছাত্রী জানতে পারে, বিদ্যালয়ের আরও কয়েকজন ছাত্রীকে একই ধরনের কাজে বাধ্য করেছে রবিউল। তাদের সঙ্গেও রবিউলের অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। বিষয়টি সবাইকে জানানোর কথা বললে ওই ছাত্রীকে আবারও ধর্ষণ করে রবিউল। এভাবে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রবিউল ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে।

অবশেষে উপায় না পেয়ে রবিউলের বিচার চেয়ে গত ১৩ মার্চ ওই ছাত্রী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়। এরপরই একের পর এক বের হয়ে আসে রবিউলের অপকর্মের তথ্য।

৮ম, ৯ম ও দশম শ্রেণির আরও তিন ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে নাম প্রকাশে না করার শর্তে শিক্ষক রবিউলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির কাছে। সেইসঙ্গে একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে রবিউলের আপত্তিকর ছবি অডিও ও ভিডিও দেয় তারা।

এসব অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও সহকারী শিক্ষকরা। তবে অভিযোগ ওঠার পরই বিদ্যালয় থেকে ছুটি না নিয়ে পালিয়ে যায় শিক্ষক রবিউল। সেইসঙ্গে অভিযোগকারী ছাত্রীদের ফোনে হুমকি দিচ্ছে রবিউল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর মা জানান, রবিউল আমার মেয়ের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে। পরে প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি জানাই। ওর মত শিক্ষকের কঠিন বিচার হওয়া উচিত।

আরেক ছাত্রীর অভিভাবক বলেন, রবিউল শিক্ষক নামের কলঙ্ক। আমাদের মেয়ের জীবন নষ্ট করে দিয়েছে। আমরা ওর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

ধর্ষণের শিকার এক ছাত্রীর ভাষ্য, রবিউল সরলতার সুযোগ নিয়ে প্রথম লেখাপড়ার খোঁজখবর নিত। পরে অন্য ছাত্রীদের সঙ্গে বাসায় নিয়ে আমাকে পড়াতো। এর মধ্যে একদিন আমাকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করে। ওই ভিডিও অন্যদের দেখানোর ভয় দেখিয়ে আমাকে অনেকবার ধর্ষণ করে রবিউল। পরে আমি জানতে পারি, আমার সিনিয়র দুই আপুকে একইভাবে ধর্ষণ করেছে রবিউল। আমার বিদ্যালয়ের ৭ম, ৮ম ও নবম শ্রেণির ছাত্রীদের টার্গেট করে একেক দিন একেক ছাত্রীকে ফ্ল্যাটে নিয়ে ধর্ষণ করে রবিউল। আমরা ওর কঠোর শাস্তি চাই। যাতে আর কারও ক্ষতি করতে না পারে রবিউল।

উমেদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রোকনুজ্জামান বলেন, ছাত্রীদের অভিযোগ পাওয়ার পর শিক্ষক রবিউলকে প্রশ্ন করা হলে সে বিষয়টি স্বীকার করে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আগেই কৌশলে পালিয়ে যায়। এখন শুনছি, ছাত্রীদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। আমাকেও এ ব্যাপারে চুপ থাকতে বিভিন্ন প্রলোভন দেখাচ্ছে। তবে আমরা সব শিক্ষক বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উমেদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কাদির খালাসী বলেন, আমরা অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। খুব শিগগিরই অভিযুক্ত শিক্ষক রবিউলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে মাদারীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, অপরাধ এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে মুখ বন্ধ রাখলে অপরাধ দমন করা কঠিন। এ ব্যাপারে স্কুলছাত্রীরা অভিযোগ করলে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব। ওই শিক্ষক যে জঘন্য ঘটনার জন্ম দিয়েছে তা মারাত্মক অপরাধ। বিষয়টি তদন্ত করে অপরাধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
September 2025
MTWTFSS
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031 
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!