খুটাখালী পীর মাওলানা আবদুল হাই এর জানাযায় লাখো মানুষের ঢল


প্রকাশের সময় :২৪ জানুয়ারি, ২০১৮ ২:০৯ : পূর্বাহ্ণ 910 Views

চট্রগ্রাম অফিসঃ-পীরে কামেল সাহেব আলহাজ্ব হাফেজ মাওলানা আবদুল হাই (৮০) এর জানাযায় শোকাহত লক্ষ লক্ষ মানুষের ঢল নেমে ছিলো। খুটাখালী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজার স্থান দেওয়া হলেও পরবর্তীতে মহাসড়কের প্রায় দশ কিলোমিটার এলাকা লোকারন্য হয়ে যায়।তিল পরিমাণ ঠাই ছিল না।গতকাল মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) বিকেল ৫টায় জানাজা শেষে জানাযায় লক্ষ লক্ষ মুসল্লীগণ ও ভক্তগণ অশ্রুসজল নয়নে তাকে চির বিদায় জানান। জানাযায় ইমামতি করেন মরহুমের বড়পুত্র পীরজাদা আলহাজ্ব মাওলানা আনোয়ার হোছাইন। তাকে পারিবারিক কবর স্থানে দাফন করা হয়। এদিকে হুজুরের জানাজায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ছাড়াও দুবাই ও ভারত থেকেও আগত ভক্তরা জানাজায় অংশ নেন।জানাজায় আসা কক্সবাজারের বাসিন্দা ছিদ্দিক আহমদ (৭৫) জানান,এতো বড় জানাজা আর কোন দিন দেখিনি। তিনি বলেন, ইসলাম ধর্মের প্রচার এবং প্রসারের কারণে এতো মানুষের উপস্থিতি।হুজুর কেবলার ভালো কাজের মূল্য দুনিয়াতে পেয়েছেন বলে তিনি জানান।জানাজার সময় বিকেল ৫টা হলেও দুপুর ১২টা থেকে খুটাখালী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ মুসল্লীদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পরিপূর্ন হয়ে গিয়েছিলো।মুসল্লীরা জায়গা না পেয়ে পাশ্ববর্তী কিশলয় শিক্ষা নিকেতনের মাঠেও কাতার হয়ে যায়। একপর্যায়ে আগতরা মহাসড়ক,স্কুলের ছাদ, কমিউনিটি ক্লাব,মসজিদ, খোলা বিল ছাড়াও পাশ্ববর্তী বিভিন্ন বাসাবাড়িতে দাঁড়িয়ে জানাযার নামাজ আদায় করেন।দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কক্সবাজার চট্টগ্রাম মহাসড়কে র্দীঘ যানযট সৃষ্টি হয়। টানা তিনঘন্টা ধরে যানজটে শতশত যানবাহন আটকা পড়ে।নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকা অর্ধশতাধিক পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরাও যানজট নিরসনে ভূমিকা পালন করেন। পরে রাত ৮টার দিকে সড়কে যানচলাচল শুরু হয়।খুটাখালী তমিজিয়া ডিগ্রি মাদরাসার আরবী প্রভাষক মাওলানা আবুল ফজলের পরিচালনায় হুজুর কেবলার জীবনকর্ম নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন চট্টগ্রাম সিডিএ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দু ছালাম,চকরিয়া-পেকুয়া আসনের এমপি হাজী মো: ইলিয়াছ,সদর-রামু আসনের এমপি আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল,কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান অব: কর্নেল ফোরকান আহমদ,চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু নোমান শিবলী,চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাফর আলম,মহেশখালী উপজেলা চেয়ারম্যান মো:হোছাইন ইব্রাহিম,পেকুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান শাফায়াতুল আজিজ রাজু,উখিয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মাহমুদুল হক চৌধুরী,গারাংগিয়া দরবার শরীফের পীর শাহ মাওলানা আনোয়ারুল হক ছিদ্দিকী,সাতবাড়িয়া দরবার শরীফের পীর আবদুল হালিম রশিদী, পীরজাদা বাশঁখালী মাওলানা শফি উল্লাহ, জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী, জেলা আ’লীগ সহ-সভাপতি রেজাউল করিম, পেকুয়া উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান মাওলানা নুরুজ্জামান মন্জু,চবি অধ্যাপক ড. মাওলানা এনামুল হক মুজাদ্দেদী,সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জিএম রহিমুল্লাহ,লোহাগাড়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল আবছার,চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী খুটাখালীর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান,উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সরওয়ার আলম, ফজলুল করিম সাঈদী, সুরাজপুর-মানিকপুর চেয়ারম্যান আজিমুল হক, চিরিঙ্গা চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন,জেলা পরিষদ প্যানেল চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম লিট, চকরিয়া উপজেলা উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান মানিক জানাজায় অংশগ্রহণ করেন।জানা যায়,তিনি ১৯৪৮ সালের ২২ জানুয়ারি সাতকানিয়া উপজেলার গারাঙ্গিয়া রঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।তাঁর আব্বাজান মরহুম আলহাজ্ব মাওলানা হাফেজ আবদুল জব্বার (রাঃ) এবং আম্মাজান মরহুমা হাফেজা খাতুন (রাঃ)।পরিবারের ৬ পুত্র ১ কন্যার মধ্যে তিনি ছিলেন ৫ম পুত্র।তিনি ১৯৭২ সাল থেকে স্বপরিবারে চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের গর্জনতলী গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দেড় শতাধিক মসজিদ, হাফেজখানা-এতিমখানা ও ফোরকানিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন।জীবনে ১৬ বার হজ্ব পালন করেন তিনি।গত ২১ জানুয়ারি সোমবার দিবাগত রাত ২টা ৪০মিনিটে আলীকদম সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ইন্তেকাল করেন।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2024
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!