

পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি,সম্প্রীতি ও উন্নয়নের সেতুবন্ধন আরও সুদৃঢ় করতে একটি অনন্য উদাহরণ স্থাপন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬৯ পদাতিক ব্রিগেড ও বান্দরবান রিজিয়নের আলীকদম জোন।বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠীর কল্যাণে নবনির্মিত কিয়াং ঘরের উদ্বোধন,বিনামূল্যে মেডিকেল ক্যাম্প আয়োজন এবং শীতবস্ত্র বিতরণসহ দিনব্যাপী বিভিন্ন জনহিতকর কার্যক্রম পরিচালনা করেছে সেনাবাহিনী।দিনব্যাপী এই আয়োজনকে ঘিরে কুরুকপাতা ইউনিয়ন এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা যায়।স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ,ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য এবং সেনাবাহিনীর মানবিক উদ্যোগ পার্বত্য অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য চিত্র তুলে ধরে।শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় নবনির্মিত কিয়াং ঘরের উদ্বোধনের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু হয়।এ উপলক্ষে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়ার পর আলীকদম জোনের পক্ষ থেকে কিয়াং পরিচালনা কমিটির হাতে ২০ হাজার টাকার আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়।আলীকদম জোন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি তে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
পাশাপাশি স্থানীয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী প্রবীণ মাইনপ্রুক জিংক্সে-এর জন্য বিশেষ উপহার সামগ্রী এবং কিট হস্তান্তর করা হয়।সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বৃদ্ধিতে সেনাবাহিনীর এমন কার্যক্রম স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মাঝে গভীর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।পরবর্তীতে দূর্গম পাহাড়ি এলাকার স্বল্পসুবিধাপ্রাপ্ত মানুষের জন্য আয়োজিত হয় ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প।এ ক্যাম্পে পাহাড়ি ও বাঙ্গালি মিলিয়ে ২৭৫ জন রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়।নানান রোগে আক্রান্ত মানুষকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা, স্বাস্থ্যসেবা পরামর্শ এবং ১৫ হাজার ২০০ টাকা সমমূল্যের প্রয়োজনীয় ঔষধ সরবরাহ করা হয়। সীমিত স্বাস্থ্যসুবিধার এই অঞ্চলে সেনাবাহিনীর ব্যতিক্রমী উদ্যোগে উপকারভোগীদের মাঝে স্বস্তি ও আনন্দের ছাপ লক্ষ করা যায়।দিনব্যাপী এসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলীকদম জোন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো.আশিকুর রহমান আশিক।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন কুরুকপাতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ক্রাতপং মুরং,সেনাজোনের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।অনুষ্ঠানে জোন অধিনায়ক বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রতিটি জনগোষ্ঠীর সুষম উন্নয়ন,নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করা আমাদের পবিত্র দায়িত্ব। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সহায়তায় একটি শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ আলীকদম গঠনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিরলসভাবে কাজ করছে।আজকের এই আয়োজন সেই অঙ্গীকারেরই প্রতিফলন।” অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া স্থানীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায় সেনাবাহিনীর মানবিক সহায়তাকে ‘সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
তাদের মতে,সেনাবাহিনী শুধু নিরাপত্তা রক্ষা নয়,উন্নয়ন, শিক্ষা,স্বাস্থ্যসেবা ও মানবিক সহায়তার মাধ্যমে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে আস্থা ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলছে।উল্লেখ্য, পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং জনকল্যাণমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়নে আলীকদম জোনের এই ধারাবাহিক উদ্যোগ স্থানীয় জনগণের জীবনমান উন্নয়ন এবং পারস্পরিক সহমর্মিতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।







