স্বাস্থ্যসেবায় জলবায়ু সহনশীলতা নিয়ে পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর নলেজ এক্সচেঞ্জ ফোরাম


নিজস্ব সংবাদদাতা প্রকাশের সময় :৫ নভেম্বর, ২০২৫ ২:১৭ : পূর্বাহ্ণ 169 Views

স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে জলবায়ু সহনশীলতা বাড়ানো এবং আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রথাগত জ্ঞান বিনিময়ের লক্ষ্যে বান্দরবানে অনুষ্ঠিত হয়েছে এক বিশেষ নলেজ এক্সচেঞ্জ ফোরাম।মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দিনব্যাপী বান্দরবান হলিডে ইন রিসোর্টে এ ফোরামের আয়োজন করে সিরাক-বাংলাদেশ।সহযোগিতায় ছিল ইউএনএফপিএ বাংলাদেশ এবং সুইডিশ উন্নয়ন সংস্থা সিডা (Sida)।ফোরামের মূল উদ্দেশ্য ছিল আদিবাসী জনগোষ্ঠীর যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করা এবং সেখান থেকে টেকসই সমাধানের পথ বের করা।দিনব্যাপী এ ফোরামে অংশ নেন জেলার বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রায় ৪০ জন প্রতিনিধি।তাঁদের মধ্যে ছিলেন ১৫ জন তরুণ-তরুণী (১৪–২৫ বছর বয়সী),১০ জন বয়োজ্যেষ্ঠ প্রতিনিধি এবং ৪ জন স্বাস্থ্যসেবা পেশাজীবী।অনুষ্ঠানের সূচনা পর্ব পরিচালনা করেন সিরাক-বাংলাদেশের প্রজেক্ট ম্যানেজার লুতফা পাঠান।উদ্বোধনী বক্তব্যে এডভোকেসি স্পেশালিস্ট মিজানুর রহমান আকন্দ সিরাক-বাংলাদেশ ও ‘ইয়ুথ ক্যাটালিস্ট’ প্রকল্পের লক্ষ্য ও কার্যক্রম তুলে ধরেন।তিনি ফোরামের উদ্দেশ্য ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রথাগত জ্ঞানের গুরুত্ব নিয়েও কথা বলেন।ফোরামে বয়স্ক প্রতিনিধিরা আদিবাসী সমাজে প্রচলিত যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসংক্রান্ত প্রথাগত জ্ঞান,জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং সম্প্রদায়ের সহনশীলতা বৃদ্ধির উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। তরুণ অংশগ্রহণকারীরা তাঁদের অভিজ্ঞতা, সীমাবদ্ধতা এবং স্বাস্থ্যসেবায় অংশগ্রহণের আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরেন।স্বাস্থ্যসেবা পেশাজীবীরাও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ মতামত প্রদান করেন।এই ফোরামের অন্যতম লক্ষ্য ছিল যুবক ও বয়স্কদের মধ্যে আন্তঃপ্রজন্মীয় সংলাপ বাড়ানো এবং জলবায়ু সহনশীল স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে অঞ্চলভিত্তিক সুপারিশ তৈরি করা। এসব সুপারিশ পরবর্তীতে ‘কালার পেপার’ আকারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও নীতিনির্ধারক সংস্থার কাছে তুলে দেওয়া হবে।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বান্দরবান জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক ডা.লেনিন তালুকদার।প্রধান অতিথি ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. শাহীন হোসাইন চৌধুরী এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো.রেজাউল করিম।সিরাক- বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এস. এম. সৈকত বলেন,আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অভিজ্ঞতা ও প্রথাগত জ্ঞানের সমন্বয়ে তৈরি ‘কালার পেপারটি’ আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকদের কাছে উপস্থাপন করব।এর মাধ্যমে পাহাড়ি ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই স্বাস্থ্যনীতি গড়ে তোলা সম্ভব হবে।সভাপতির বক্তব্যে ডা.লেনিন তালুকদার বলেন,আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান আমাদের জন্য অমূল্য সম্পদ।এ ধরনের ফোরাম শুধু যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য নয়,বরং জলবায়ু সহনশীলতা এবং সম্প্রদায়ভিত্তিক সমাধান গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।ফোরামের আলোচনায় উঠে আসে বিভিন্ন কার্যকর পরামর্শ।এসব পরামর্শ একত্র করে পরবর্তীতে জাতীয় শ্বেতপত্র (White Paper) আকারে উপস্থাপন করা হবে।আয়োজকদের আশা,এ উদ্যোগের মাধ্যমে তরুণদের অংশগ্রহণে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা আরও সহজলভ্য হবে এবং আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যে জলবায়ু সহনশীলতার ধারণা আরও বিস্তৃত হবে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
December 2025
MTWTFSS
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30 
আলোচিত খবর