এই মাত্র পাওয়া :

সাঙ্গু নদীতে ফুল ভাসিয়ে বান্দরবানে শুরু হলো বিঝু-বিষু উৎসব


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :১২ এপ্রিল, ২০২৩ ১:০৩ : অপরাহ্ণ 565 Views

পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়িদের সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব বিঝু-বিষু শুরু হয়েছে।বুধবার (১২ এপ্রিল) সকালে সাঙ্গু নদীতে ফুল নিবেদনের মাধ্যমে বান্দরবানে চাকমাদের ফুল বিঝু ও তঞ্চঙ্গ্যাদের ফুল বিষু উদযাপনের মধ্যদিয়ে উৎসব শুরু হয়।বাংলা বর্ষপঞ্জিকা অনুসারে বছরের শেষ দুদিন ও বাংলা নব বর্ষের প্রথম দিন চাকমারা ফুল বিঝু, মূল বিঝু ও গজ্জ্যাপজ্জ্যা এই তিন দিন বিঝু পালন করে থাকে। আগামীকাল মূল অনুষ্টান চাকমাদের ঘরে ঘরে হরেক রকম সবজী মিশ্রণে পাজন রান্না করে পরিবেশন করা হবে। নতুন কাপড় পরিধান করে দলবেধে পুরো গ্রাম ঘুরে বেরাবে সবাই। তাছাড়া সাধ্য অনুসারে, বিভিন্ন রকমের পিঠা তৈরি করে বন্ধু-বান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশী,আত্মীয়-স্বজন এমনকি কারোর সঙ্গে অতীতে বৈরিতা বা ঝগড়া,মনোমালন্য থাকলেও এদিন সবাই ভুলে যায়। একে অপরকে ক্ষমা করে দিয়ে নিজের বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে পিঠাসহ হরেকরকম খাবার পরিবেশন করে।

বাংলা নব বর্ষের প্রথমদিন চাকমারা বলে গজ্জ্যাপজ্জ্যা দিনে। এদিনও মূল বিঝুর আমেজ থাকে। মুরুব্বী ও বয়স্কদের নিজ বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে উন্নত খাবার পরিবেশন করে আর্শীবাদ নেওয়া হয়। বিহারে ভিক্ষু সংঘকে উন্নত মানের খাদ্য ভোজন দান করা হয়। বাড়িতে বিকেলে মঙ্গল সূত্র শোনা হয়। তরুণ-তরুণীরা বয়স্কদেরকে বাড়িতে গোসল করিয়ে তাদের থেকে আর্শীবাদ গ্রহণ করে থাকে।

এপ্রিল মাসে তিন পার্বত্য জেলার বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব, মারমাদের সাংগ্রাইং, চাকমাদের বিঝু, ত্রিপুরাদের বৈসু, তঞ্চঙ্গ্যাদের বিষু, ম্রোদের চাংক্রান পোয়ে, খুমী সম্প্রদায়ের সাংক্রাই, খেয়াং সম্প্রদায়ের-সাংলান, চাক সমপ্রদায়ের সাংগ্রাইং, খুমী সম্প্রদায়ের সাংক্রাই, সাংগ্রাইং। বান্দরবানের পার্বত্য জেলায় ১১টি জাতি সত্ত্বার মধ্যে ৮টি জাতিসত্ত্বার মানুষ ভিন্ন ভিন্ন নামে পার্বত্য চট্টগ্রামের সর্ববৃহৎ এই সামাজিক উৎসব অনেকটা এপ্রিল মাস জুড়ে পুরো উৎসবমূখর পরিবেশে পালন করে থাকেন।

তিন পার্বত্য জেলা,বিশেষ করে বান্দরবান পার্বত্য জেলায় বাঙালি ছাড়াও ১১টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আদিবাসীদের বসবাস রয়েছে যা দেশের অন্য কোনো জেলায় নেই। ১১ জাতি স্বত্ত্বার নানা বৈচিত্রময় জীবনধারা,নানা সংস্কৃতির সম্মিলন, উৎসবে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে।

এদিকে, বান্দরবান সাংগ্রাইং উৎসব উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শৈটিং মারমা জানান, মাহাঃ সাংগ্রাইং পোয়ে ১৩৮৫ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। তারমধ্যে ১৩ এপ্রিল সাংগ্রাইং র‍্যালি, রিলং পোয়ে, বুদ্ধ বিম্ব স্নান, পাড়ায় পাড়ায় পিঠা তৈরিসহ তিন দিন ব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।জেলা পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম জানান, সাংগ্রাইং,বিঝু,বিষু,বৈসু উৎসব ও বাংলা নব বর্ষ উপলক্ষে জেলা জুড়ে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বান্দরবানে সাম্প্রতিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে উৎসবস্থলে পোশাকধারী ও সাদা পোশাকে দুই স্তর বিশিষ্ট আইনশৃংখলা বাহিনী নিয়োজিত থাকবে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
November 2025
MTWTFSS
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
আলোচিত খবর