এই মাত্র পাওয়া :

শিরোনাম: আসন্ন দুর্গাপূজার প্রস্তুতি নিয়ে হিন্দু ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক বান্দরবানে মহিলা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও সমাবেশ বান্দরবান বাজার এলাকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন এর বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান বিএনকেএস এর উদ্যোগে টেকনাফের ক্যাম্প-২২ এ শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে বর্ণিল আয়োজনে স্বাক্ষরতা দিবস উদযাপিত ঢাকায় পার্বত্য উপদেষ্টার সঙ্গে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান রাষ্ট্রদূতদের সাক্ষাৎ বান্দরবান সার্বজনীন কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহারে শুভ মধু পূর্ণিমা উদযাপিত বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের প্রকল্প প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত ক্যালেন্ডার মেনে বিসিএস পরীক্ষা আয়োজনের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি, এমআইটি প্রেসের নিবন্ধে শেখ হাসিনা


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৩ ডিসেম্বর, ২০২১ ৫:৫৫ : অপরাহ্ণ 443 Views

কীভাবে বঞ্চিত, সুবিধাবঞ্চিতদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হয় এবং কীভাবে তাদের জন্য সমৃদ্ধ ভবিষ্যত গড়ার স্বপ্ন দেখতে হয় তা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছ থেকে শিখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমন তথ্য জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিনি (বঙ্গবন্ধু) স্বপ্ন দেখেছিলেন, আবারও একটি সোনার বাংলা তৈরি করার, যেমনটি আমাদের ভূমি প্রাচীনকালে পরিচিত ছিল। তিনি গণতন্ত্র, ধর্মীয় সহিষ্ণুতা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের আদর্শের ভিত্তিতে একটি সমৃদ্ধ দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। এটি শেষ পর্যন্ত তার রাজনৈতিক দর্শনে এবং সারা জীবনের আলোবর্তিকা হয়ে উঠেছিল। আমি সবসময় তার পরামর্শ ও উদাহরণ অনুসরণ করার চেষ্টা করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ও অনন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক এমআইটি প্রেস ডাইরেক্টে প্রকাশিত তার নিবন্ধে এই কথা তুলে ধরেছেন।

শেখ হাসিনা তার বাবার কথা উদ্ধৃত করে আরও বলেছেন, ‘তুমি কি চটকদার, দামি শাড়ি-গয়না পরবে? বেশিরভাগ মানুষ আজকাল এক বেলা খাবারও খেতে পারে না, আর তুমি কি দেখাতে চাও তুমি কতটা ধনী? দয়া করে এগুলো পরিধান করবে না, সাধারণ কিছু পরিধান করবে যাতে তুমি এই দেশের দরিদ্র মানুষের সাথে নিজেকে পরিচিত করতে পারো।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি তার পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের সেই কথাগুলি কখনই ভুলতে পারবেন না, যাকে জনগণ ভালবেসে ‘বঙ্গবন্ধু’ বা বাংলাদেশের বন্ধু বলে ডাকে- ১৯৬০ এর দশকে তাকে এই উপাধি দেওয়া হয়েছিল যাতে প্রতিফলিত হয় জনগণ তাকে কতটা ভালবাসতো। এটি কেবল একটি উপাধি ছিল না বরং, এটি হচ্ছে মানুষের ভালবাসার প্রতিফলন।

স্বাধীনতার জন্য ২০ বছরের বেশি সময় ধরে দীর্ঘ ও কঠোর সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর অগ্রণী ভূমিকা ও নিষ্ঠার ওপর আলোকপাত করে শেখ হাসিনা বলেন, মানুষ তার মধ্যে এসব প্রকৃত গুণ দেখতে পেতো যা তাদের স্বাভাবিকভাবে তার কাছে আকৃষ্ট করতো এবং তার নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনা পেতে উৎসাহিত করতো।

স্বাধীনতার জন্য শেখ মুজিবের আহ্বান জনগণের হৃদয়ে খুব গভীরভাবে সাড়া জাগিয়েছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাই তারা দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করেছিল। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের জনগণের ওপর যে অকল্পনীয় নৃশংসতা চালিয়েছিল তা কেবল গণহত্যা হিসাবে বর্ণনা করা যেতে পারে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হয় এবং বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম জাতি হিসাবে আত্ম প্রকাশ করে। এইভাবে তার পিতার সিকি শতাব্দী ধরে লালন করা স্বপ্ন পূরণ হয়।

অতীতে বঙ্গবন্ধুর ঘন ঘন কারাবরণ করার কারণে তিনি (শেখ হাসিনা) ও তার বোন এবং ভাইয়েরা তাদের পিতার সাহচর্য থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন, কিন্তু কখনই তার অপার স্নেহ থেকে বঞ্চিত হননি বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, তার মা বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের তাকে সর্বাত্মকভাবে সমর্থন করেছিলেন। তার মা তাদের পাশে ছিলেন, তার সব সন্তানরা যাতে সঠিক শিক্ষা পায় তা নিশ্চিত করেছিলেন। আমরা আমাদের বাবাকে খুব মিস করেছি; তার ঘন ঘন অনুপস্থিতি তার আদর্শবাদের প্রতি আমাদের আনুগত্যকে আরও গভীর করে তুলেছে। তিনি কারাবাসের কারণে অনুপস্থিত ছিলেন এবং এর কারণ কি ছিল আমরা তা সম্পূর্ণরূপে অবগত ছিলাম। তার আত্মত্যাগ আমাদের জন্য অনুরূপ ত্যাগ স্বীকার করা সহজ করে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেছেন যে, ‘আমাদের বাবা-মা আমাদেরক দেশপ্রেমের মূল্য সম্পর্কে শিখিয়েছিলেন এবং আমরা জনগণের প্রতি তার গভীর ভালবাসা ও আমাদের মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য তার অবিচল অঙ্গীকার উপলব্ধি করেছিলাম। তারা আমরা যাতে পথ না হারাই এবং একটি উজ্জ্বল ও উন্নত ভবিষ্যতের আশা না হারাই তা আমাদের জন্য সহজ করে দিয়েছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ড এবং ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে তার ফিরে আসার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৭৫ সালে তার পরিবারের সকল সদস্য হারানোর যে বেদনা তা কাটিয়ে ওঠা অসম্ভব। তবে বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণের জন্য, আমি আমার পরিবারের সদস্যদের হারানোর বেদনাকে বাংলাদেশ গড়ার প্রয়াসে রূপান্তরের চেষ্টা করেছি, যে কারণে তারা আত্মত্যাগ করে গেছেন।’

তিনি কৃষি, খাদ্য ও পুষ্টিসহ জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণে তার সরকারের প্রচেষ্টা ও পদক্ষেপ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও আশ্রয়ের পাশাপাশি অবকাঠামোর উন্নয়ন, পরিবেশ রক্ষা, বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করা, ডিজিটালাইজেশন ও আধুনিক প্রযুক্তিতে অগ্রগতি সাধন করা, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী নিশ্চিত করা, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও অর্থনীতির উন্নতি সাধন করার কথা তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ অবশ্যই এশিয়ার দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির অন্যতম। জিডিপি বার্ষিক ৬ শতাংশের বেশি হারে ২০১০ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে; ২০১৯ সালে এটি শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে, তবে মহামারীর কারণে একটি ছোট ধাক্কা লেগেছে। একসময় দেশে খাদ্য ঘাটতি থাকলেও বাংলাদেশ এখন চাল, অভ্যন্তরীণ মাছ ও সবজি উৎপাদনকারী বিশ্বের শীর্ষ তিনটি দেশের একটি। এটি এখনও দ্রুত তার শস্য উৎপাদনে বৈচিত্র্য আনছে।

প্রধানমন্ত্রী তার নিবন্ধে উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ বিশ্বে সবজি উৎপাদনে পঞ্চম এবং মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে চতুর্থ বৃহত্তম। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বঙ্গোপসাগর থেকে সামুদ্রিক মাছের উৎপাদনও বেড়েছে। আমরা গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বাংলাদেশের পোশাক বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় এবং দেশ ২০২০ সালে তৈরি পোশাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানিকারক ছিল। বিদেশে কর্মরত প্রবাসীদের রেমিট্যান্স আয় ২০২০ সালে রেকর্ড ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যা বিশ্বের অষ্টম সর্বোচ্চ। তিনি বলেন, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘে সম্প্রতি একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে যে, বাংলাদেশ শিগগিরই স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে।

তিনি আরো বলেন, ‘এক দশকের মধ্যে এই আশ্চর্যজনক রূপান্তরটি দুর্ঘটনাক্রমে বা অলৌকিকভাবে ঘটেনি। এটা ঘটেছে পরিকল্পিত প্রচেষ্টা, তৃণমূলের উদ্যোগ এবং আমাদের জনগণের উদ্যোক্তা মনোভাবের কারণে, যারা আমাদের প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এটা উদ্যোক্তা কৃষক, গার্মেন্টস শ্রমিক এবং বিদেশে প্রবাসীদের কঠোর পরিশ্রম, রক্ত, পরিশ্রম এবং কান্নার ফসল। বিচক্ষণতার সাথে সরকার সমন্বিত ও উৎসাহিত করেছে বলেই ছোট-বড় উদ্যোগের মাধ্যমে এ ফলাফল অর্জিত হয়েছে।’

তিনি বলেন, যাইহোক, এই মহামারী চলাকালীন বাংলাদেশ দুটি বড় মাইলফলক উদযাপন করেছে। গত বছরটি তার বাবার ১০০তম জন্মদিন হতো এবং এই বছরটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের অর্জনের দিকে আমি যখন ফিরে তাকাই, তখন আশা করি আমার বাবা এখন আমাদের দেখতে পাচ্ছেন। আমি জানি যে, আমরা কতদূর এসেছি তা নিয়ে তিনি কতটা গর্বিত হতেন এবং আমি জানি তিনি আমাদের মনে করিয়ে দেবেন যে, আরও কাজ করতে হবে। শেখ মুজিবুর রহমানের অদম্য চেতনাই আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং আমরা তার সকল স্বপ্ন পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বিশ্রাম নেবো না।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
September 2025
MTWTFSS
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031 
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!