শিরোনাম: পর্যটকের মৃত্যুঃ ট্যুর এক্সপার্ট এডমিন বর্ষা ইসলাম বৃষ্টিকে গ্রেফতার ইরান যদি আর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যায় তাহলে পাল্টা হামলায় তেহরানকে জ্বালিয়ে দেয়া হবেঃ ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ সব ধরনের বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীককে বিজয়ী করতে হবেঃ সাচিং প্রু জেরী কাতার রেডক্রস এর আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতায় অসহায়দের মাঝে মাংস বিতরন করলো বান্দরবান রেডক্রিসেন্ট যথাযোগ্য মর্যাদায় ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বান্দরবানে পবিত্র ঈদুল আযহার ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত কুহালং হেডম্যান পাড়ায় নানা আয়োজনে মাসিক স্বাস্থ্য দিবস-২৫ পালিত বান্দরবানে টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন বান্দরবানে ভূমি মেলা-২০২৫ এর উদ্বোধন করলেন জেলা প্রশাসক

প্রাইমারি শিক্ষার্থীদের দুপুরে খাবারের জন্য বাজেটে ১২০০ কোটি টাকা


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :৩০ মে, ২০২১ ৩:২৫ : অপরাহ্ণ 336 Views

আগামী অর্থবছর থেকে পর্যায়ক্রমে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এক বেলা খাবার দেয়া হবে। খাবার হিসেবে বিস্কুটের পাশাপাশি, রান্না করা খাবার যেমন খিচুড়ি, ডিম ও কলা দেয়া হবে। এ জন্য আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে ১২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে সারা দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে প্রায় ৬৬ হাজার।
এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৯ আগস্ট ‘জাতীয় স্কুল মিল নীতি ২০১৯’ এর খসড়া অনুমোদন দেয় মন্ত্রিপরিষদ। এরই আলোকে আগামী অর্থবছর থেকে পর্যায়ক্রমে সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দুপুরে খাবার হিসেবে বিস্কুটের পাশাপাশি খিচুড়ি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে দেশের ১০৪টি উপজেলার ১৫ হাজার ৩৪৯টি বিদ্যালয়ে খাবার দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে তিনটি উপজেলায় রান্না করা খাবার দেয়া হচ্ছে। বাকিগুলোতে বিস্কুট দেয়া হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানায়, খাবার দেয়ার ফলে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বেড়েছে। এর মধ্যে রান্না করা খাবার দিলে ১১ শতাংশ উপস্থিতি বৃদ্ধি পায়। আর বিস্কুট দিলে ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। সরকারি পরিকল্পনা হলো, যে এলাকায় যে ধরনের খাবারের প্রয়োজন সে ধরনের খাবার দেয়া হবে। প্রতিদিন একই খাবার না দিয়ে খাবারে বৈচিত্র্য থাকবে। মিড ডে মিলের সবচেয়ে লাভজনক দিক হলো, শিক্ষার্থী ঝরে পড়া কমবে। শিক্ষার মান বাড়বে।
জানা গেছে, প্রথম দিকে সপ্তাহে তিন দিন সবজি খিচুড়ি, বাকি তিন দিন বিস্কুট দেয়া হবে। প্রতিদিন প্রতিটি শিশুকে ৫৩৩ ক্যালরি পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার দেয়া হবে। তবে যেদিন ডিম-খিচুড়ি দেয়া হবে সেদিন ৬৩০ ক্যালরি পাবে শিক্ষার্থীরা। লক্ষ্য রাখা হবে শিশুরা যাতে ক্ষুধা নিয়ে বিদ্যালয়ে না আসে।
জানা গেছে, ২০১৯ সালে মিড ডে মিল নিয়ে যে নীতিমালা করা হয় তাতে বলা হয়েছে, দেশের অনেক জায়গায় পাইলট বেসিসে চালু হয়েছে। এগুলোকে কিভাবে সমন্বিতভাবে সারা দেশে ছড়ানো যায় তার জন্য এই নীতিমালা। এটি বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় স্কুল মিল কর্মসূচি বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি সেল বা ইউনিট কাজ করবে। কার্যক্রমের পরিধি সম্প্রসারণে প্রয়োজনবোধে প্রাথমিক মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি পৃথক জাতীয় স্কুল মিল কর্মসূচি কর্তৃপক্ষ গঠনের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
স্কুল মিল কর্মসূচির কার্যক্রমের ধরন ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে গাইডলাইন সম্পর্কে বলা হয়েছে, প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় শক্তি চাহিদার ক্যালরির ন্যূনতম ৩০ শতাংশ স্কুল মিল থেকে আসা নিশ্চিত করা হবে, যা প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত ৩-১২ বছরের ছেলে ও মেয়েশিশুদের জন্য প্রযোজ্য হবে।
অর্ধদিবস স্কুলের ক্ষেত্রে দৈনিক প্রয়োজন অনুপুষ্টিকণার চাহিদার ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নিশ্চিত করা। এ ছাড়া জাতীয় খাদ্যগ্রহণ নির্দেশিকা অনুযায়ী দৈনিক প্রয়োজনীয় শক্তির ১০-১৫ শতাংশ প্রোটিন থেকে এবং ১৫-৩০ শতাংশ চর্বি থেকে আসা নিশ্চিত করা হবে। ন্যূনতম খাদ্য তালিকার বৈচিত্র্য বিবেচনায় নিয়ে ১০টি খাদ্যগোষ্ঠীর মধ্যে ন্যূনতম চারটি খাদ্যগোষ্ঠী নির্বাচন নিশ্চিত করা হবে।
সূত্র জানায়, নীতিমালা অনুযায়ী, স্কুল মিল উপদেষ্টা কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে, যেখানে সরকার মনোনীত উপযুক্ত ব্যক্তিদের নিয়ে এই কমিটি কর্মপরিধি, কার্যকারিতা, অর্থায়ন ও মূল্যায়নে কাজ করবে। সরকার মনোনীত বিশিষ্ট ব্যক্তির সভাপতিত্বে এই কমিটির সদস্যদের নির্দিষ্ট মেয়াদে নিয়োগ দেবে প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়। স্কুল মিল কর্মসূচির প্রধান নির্বাহী কমিটির সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এতে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে জাতীয় স্কুল মিল কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের উপপরিচালক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার সহকারী উপপরিচালক ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার সম্পৃক্ত থাকবেন।
এ ছাড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষেত্রে পার্বত্য জেলা পরিষদ ও স্থানীয় প্রশাসনের অংশ হিসেবে কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত থাকবেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেছেন, এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা দেখেছি যে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার বেড়েছে। রান্না করে খাবার দিলে ১১ শতাংশ উপস্থিতির হার বাড়বে। শুধু বিস্কুট দিলে উপস্থিতির হার বাড়ে ৬ শতাংশ। কর্মসূচির আওতাধীন এলাকায় ঝরে পড়ার হার ৬ দশমিক ৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে এবং শারীরিক অবস্থারও অনুকূল দেখতে পেয়েছি। রান্না করা খাবার এলাকায় ১৬ দশমিক ৭ শতাংশ এবং বিস্কুট দেয়া এলাকায় রক্তস্বল্পতা কমেছে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ। এই বিবেচনায় জাতীয় স্কুল মিল কর্মসূচি অনুমোদিত হয়েছে মন্ত্রিসভায়।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেছেন, একই বিস্কুট বাচ্চারা সব সময় খেতে চায় না তাই খাবারের বৈচিত্র্য বিবেচনায় আমরা বিস্কুট, কলা ও ডিম কমন রাখার চেষ্টা করছি। আর বৃহস্পতিবার অর্ধদিবসে শুধু বিস্কুট রাখা হবে। সব প্রাইমারি স্কুলকে এই মিড ডে মিলের আওতায় নিয়ে আসা হলে আমরা দেখেছি, শুধু বিস্কুট দিলে প্রতিদিন প্রতি শিক্ষার্থীর জন্য ৯ টাকা হারে বছরে ২ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা, পাঁচ দিন রান্না করা খাবার ও এক দিন বিস্কুট দিলে ৫ হাজার ৫৬০ কোটি ৮০ লাখ টাকা খরচ হবে। বিস্কুট এবং ডিম, কলা ও রুটি দিলে ২৫ টাকা হারে খরচ হবে ৭ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা। আমরা সব মডেলে চালাব, যেখানে যেটা প্রযোজ্য হবে।
উল্লেখ্য,দেশে ৬৬ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ১৫ হাজার ৩৪৯টি স্কুলের ৩০ লাখ শিক্ষার্থীকে খাওয়ানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং কর্মসূচির আওতায় ২০০০ সাল থেকে স্কুল ফিডিং কর্মসূচি চলছে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
June 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!