প্রাণ ফিরেছে দেশের পর্যটন শিল্পে


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৬ জানুয়ারি, ২০২১ ১:০৪ : অপরাহ্ণ 481 Views

করোনা মহামারীর মধ্যেও নতুন বছরের শুরুতে প্রাণ ফিরেছে দেশের পর্যটন শিল্পে। প্রতিদিন বিমান, বাস, ট্রেন ও ব্যক্তিগত বাহনে করে মানুষ ঘুরতে যাচ্ছে দেশের নানান স্থানে। দিন দিন ভিড় বাড়ছে দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে।
পর্যটন-সংশ্লিষ্টদের তথ্যানুযায়ী, পর্যটকদের পছন্দের বেড়ানোর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে কক্সবাজার,পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি। আছে সিলেট, সুন্দরবন, কুয়াকাটা, সেন্টমার্টিন, পাহাড়পুর প্রভৃতি।
সংশ্লিষ্ট ট্যুর অপারেটররা জানান, প্রতিদিন সকাল হলেই এসব স্থানে দেশের নানান প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকদের ঢল নামে। ফলে এসব এলাকায় এখন হোটেল-মোটেল পাওয়া দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোথাও কোথাও আবার অতিরিক্ত টাকা আদায়েরও অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ। এতে করে ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছেন ব্যবসায়ীরা।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির একজন নেতা জানান, এখন কয়েক হাজার পর্যটক কক্সবাজারে অবস্থান করছেন। অনেকে হোটেল ও মোটেলগুলোতে অগ্রিম বুকিং দিচ্ছেন। পর্যটকদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন, ছেঁড়াদ্বীপ, সোনাদিয়া, রামুর বৌদ্ধবিহার, আদিনাথ মন্দির, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কসহ জেলার পর্যটন স্পটগুলো।
ট্যুর অপারেটরদের মতে, চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ জাম্বুরি পার্ক, পতেঙ্গা সৈকতসহ পর্যটন স্পটগুলোতেও পর্যটকদের ভিড় লক্ষণীয়। নগরীর সিআরবি শিরিষতলা, ডিসি হিল, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, ফ’য়স লেক, কর্ণফুলী শিশুপার্ক, চান্দগাঁও স্বাধীনতা কমপ্লেক্সসহ বিনোদন কেন্দ্রে প্রতিদিন ভিড় করছেন পর্যটকরা।
এ ছাড়া সুন্ধরবনের শ্যামনগর রিসোর্ট, বটিয়াঘাটার রানা রিসোর্ট, ওয়াইসি রিসোর্টসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রেও প্রতিদিন পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ছে।
সিলেটেও প্রতিদিন দলে দলে ভিড় করছেন পর্যটকরা। সিলেটের চা-বাগান, গোয়াইনঘাট উপজেলার বিছনাকান্দি, ভোলাগঞ্জ, রাতারগুল ও জাফলংয়ে দেখা গেছে ব্যাপকসংখ্যক পর্যটক সমাগম। নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, ৭১ বধ্যভূমি, চা গবেষণা ইনস্টিটিট এসব প্রকৃতির মনোমুগ্ধকর স্থানে পর্যটকরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। পর্যটকদের আনাগোনায় জমে উঠেছে আবাসিক হোটেল ব্যবসা। আগেভাগেই বুকিং ছাড়া হোটেল-রিসোর্টে স্থান পাওয়া যাচ্ছে না।
বিদায়ী বছরে করোনার প্রভাবে অন্যান্য খাতের মতো বিপর্যস্ত ছিল পর্যটন খাত। মার্চে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর অচল হয়ে পড়ে দেশের সম্ভাবনাময় এ খাত। পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের চলাচলে দেয়া হয় নিষেধাজ্ঞা। যাত্রী সঙ্কটে বন্ধ ছিল সব ফ্লাইট। বাতিল হয়ে যায় বাংলাদেশে আসা পর্যটকদের অগ্রিম হোটেল বুকিং, বিমান টিকিটসহ আনুষঙ্গিক সব কিছু। এর ফলে এ খাত সংশ্লিষ্ট লোকজন ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়েন। বেকার হয়ে পড়েন অনেক শ্রমিক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।
সংশ্লিষ্টদের দাবি, করোনা শুরুর প্রথম চার মাসেই এ খাতে ক্ষতি হয় ১৪ হাজার কোটি টাকা। কর্মহীন হয়ে পড়েন ৪০ লাখ লোক। এর মধ্যে শুধু তারকা হোটেলেরই ক্ষতি ছাড়ায় সাত হাজার কোটি টাকা। প্যাসিফিক এশিয়া ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশনের হিসাবে, করোনায় দেশে বেকার হয়ে পড়া হোটেল শ্রমিক ও কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় তিন লাখ। মহামারীর ধাক্কা লাগে ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর ব্যবসায়। প্রতিদিন লোকসান হয় শত কোটি টাকা। তারই মধ্যে অনেকের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
April 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!