পরিস্থিতি ভালো হলে তবেই স্কুল খুলবে :প্রধানমন্ত্রী


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :২ জানুয়ারি, ২০২১ ৩:৪৬ : অপরাহ্ণ 312 Views

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনাভাইরাসের কারণে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সবচেয়ে কষ্ট পাচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা। স্কুল ছাড়া সারাক্ষণ ঘরে বসে থাকা খুবই কষ্টকর। মহামারি পরিস্থিতির উন্নতি হলে তবেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত হবে।

নতুন বছরে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রমের উদ্বোধন করে গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি এ কথা বলেন। অন্য বছর গণভবনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন হলেও মহামারির মধ্যে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এবার এ অনুষ্ঠান হয় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। খবর বাসস, ইউএনবি ও বিডিনিউজের।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখন ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছি, এর মধ্যে যদি অবস্থা ভালো হয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে। যদি না হয়, আমরা খুলব না। কিন্তু আমি মনে করি, ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’

প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বই উৎসবের উদ্বোধন করেন। তার পক্ষে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন ও শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বিভিন্ন পর্যায়ের ২৩ শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দেন। রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল ও মাদ্রাসার প্রায় তিনশ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল এ অনুষ্ঠানে। তাদের সবাই এদিন নতুন বই পেয়েছে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

ডিজিটাল বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের ঘরে বসে অনলাইনে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ থাকার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এর ফলে অন্তত ছেলেমেয়েরা একেবারে শিক্ষা থেকে দূরে যাচ্ছে না। কিছুটা শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে। আমাদের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে এবং এটা চলমান থাকবে।’

সরকারপ্রধান বলেন, আমরা যখন একটু সিদ্ধান্ত নিলাম যে স্কুল খুলব, তখন আবার নতুন করে দ্বিতীয় ধাক্কা এলো করোনাভাইরাসের। মহামারির মধ্যে দীর্ঘ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিচ্ছে, তা মোকাবিলা করার ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে বলে জানান শেখ হাসিনা। তিনি করোনাকালীন শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশে পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি অন্য বই পড়ার এবং শরীরচর্চা ও খেলাধুলার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক চর্চা চালিয়ে নেওয়ার জন্যও অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ করেন।

এবার নতুন বছরে মোট ৩৪ কোটি ৩৬ লাখ ৬২ হাজার ৪১২টি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা বিনামূল্যে বই দিচ্ছি, যাতে আমাদের ছেলেমেয়েরা হাতে নতুন বই পায়। একটা নতুন বই পেলে একটু ভালোও লাগে। বইটা হাতে পাবে, মলাটটা লাগাবে, নামটা লিখবে, সুন্দরভাবে দেখবে, পড়বে। সেটাই একটা আলাদা আনন্দ। সেই আনন্দটা যাতে আমাদের ছেলেমেয়েরা পায়, সেজন্যই আমরা ব্যবস্থা নিই প্রতিবছর।’

এবার মহামারির মধ্যে বিপুল সংখ্যক নতুন বই ছাপানো অনেক কঠিন ছিল- উল্লেখ করে সংশ্নিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বই বিতরণের সময় একসঙ্গে যেন বেশি সমাবেশ না হয়, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভাগে ভাগে সবাইকে বিতরণ করাই ভালো।

শিক্ষার্থীরা যাতে খেলাধুলা করতে পারে, নিয়মিত কিছুটা রোদে বা খোলা হাওয়ায় যেতে পারে, অভিভাবকদের সেই পরামর্শ দেন সরকারপ্রধান। পাশাপাশি বাইরে গেলে সবাইকে মাস্ক পরতে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রত্যেক ছেলেমেয়ে লেখাপড়া শিখে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হবে। দেশে এবং বিদেশেও তারা নাম করবে। শিক্ষা যেহেতু সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ, কাজেই সেই শিক্ষা গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে আমরা গড়ে তুলব। ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলব।’

গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন।

পিএমও ও বিটিভির কর্মীদের প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা :প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও) ও বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের করোনাকালে তার ভিডিও কনফারেন্স ও অন্যান্য কাজে সহযোগিতার জন্য আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন।

গতকাল পিএমওতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে এই আর্থিক সহায়তার চেক হস্তান্তর করেন। পিএমও ও বিটিভির ১৭ জন কর্মকর্তা।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
April 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!