উদ্বোধনের অপেক্ষায় ‘বঙ্গবন্ধুর তর্জনী’


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :৩ নভেম্বর, ২০২০ ২:০৯ : অপরাহ্ণ 317 Views

 

ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের অবিনাশী স্মারক দেশের ইতিহাসে প্রথম ও একমাত্র তর্জনী ভাস্কর্য ‘মুক্তির ডাক’-এর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ৪১ ফুট উঁচু ভাস্কর্যটি বিশে^র হাত ভাস্কর্যের মধ্যে উচ্চতার দিক থেকে তিনটির একটি। ১৩ মাস আগে শুরু করা ঐতিহাসিক এ ভাস্কর্যটির কাজ চলতি মাসেই উন্মুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে সর্ব সাধারণের জন্য। মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ওপর নরসিংদী শহরের প্রবেশমুখে সাহে-প্রতাপ মোড়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তেজদীপ্ত তর্জনী নিয়ে নির্মিত ভাস্কর্যটি উন্মোচনের অপেক্ষায় দিন গুনছে।
ভাস্কর অলি মাহমুদের বিশ^াস, এ তার্জনীর নিচে দাঁড়িয়ে গভীরভাবে উপলব্ধি করলে স্বীয় জাতি, ঐতিহ্য আর গৌরবময় সংগ্রামের প্রতিচ্ছবি নিজের মধ্যে ভাসতে বাধ্য। চেতনায় দাঁড়িয়ে যাবে শরীরের লোম। ভাস্কর্যটির বেদির চারপাশে থাকবে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ’৬৬-এর ছয় দফা দাবি, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থ্যান, মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের ঐতিহাসিক মুহূর্তগুলো টেরাকোটার মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। নানা ধরনের অত্যাধুনিক অপটিক্যাল ফাইবার, হোয়াইট সিমেন্ট, পাথরসহ নানা দ্রব্যাদি দিয়ে নির্মিত ভাস্কর্যটি। লাইটিং, টাইলস, মার্বেল পাথরের বেদির ওপরে আছে বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক তর্জনীটি। এমন তর্জনী ভাস্কর্য এ পর্যন্ত বাংলাদেশের কোথাও দৃশ্যমান হয়নি। ইতোমধ্যে মূল ভাস্কর্যটির কাজ শেষ হয়ে গেছে। মূল বেদির চারপাশে নান্দনিক পানির ফোয়ারা নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও দ্রুতগতিতে ল্যান্ডস্কেপের কাজ চলছে। এর মধ্যে তর্জনী ভাস্কর্যটি দেখতে প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী ভিড় জমাচ্ছে এই ঐতিহাসিক শিল্পকর্মটি দেখতে।
ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোক্তা নরসিংদী পৌর মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, বাঙালির প্রতি বঙ্গবন্ধুর ছিল অবিচল আস্থা, অগাধ বিশ^াস আর ভালোবাসা। এজন্যই তিনি শোষণ, বঞ্চনা ও পরাধীনতার শিকল ভেঙে মুক্তির স্বাদ এনে দিতে পেরেছেন। আঙুলের ইশারায় পুরো জাতিকে এক করে বজ্রকণ্ঠের ঘোষণায় ছিনিয়ে আনলেন স্বাধীনতা।
ভাস্কর্য নির্মাণ শিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান তরুণ প্রজন্মের ভাস্কর অলি মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু মানেই শক্তি, উৎসাহ আর প্রেরণা। বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। তার অসাধারণ বাগ্মিতা, মানবিকতা, মানুষের প্রতি সহমর্মিতার গুণেই তিনি চির অমলিন। তার ৭ই মার্চের ভাষণ আমাদের শিহরিত করে, অনুপ্রাণিত করে। তার উদার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও শোষণহীন সমাজ গড়ার প্রত্যয় আমাদের উজ্জীবিত করে। এর আগে চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ে মাস্টারদা সূর্যসেনের আবক্ষ ভাস্কর্য, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ভৈরবে এর আগে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের ম্যুরাল বাংলার ঈগল, নরসিংদী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সেবাবৃত্ত, জাগ্রত জাতিসত্তা, লৌহজং উপজেলা কার্যালয়ের সামনে হিমালয়, রায়পুরা কলেজে মহানায়ক নামক শিল্পকর্ম নির্মাণ করে দারুণ প্রশংসিত হন এই তরুণ ভাস্কর।
উল্লেখ্য, পৃথিবীর ইতিহাসে হাত নিয়ে যত শিল্পকর্ম হয়েছে উচ্চতার দিক দিয়ে এটি তিনটির একটি। আর শুধু একটি তর্জনীকে প্রতিপাদ্য করে নির্মাণ করা ভাস্কর্যের মধ্যে এটি সবচেয়ে উঁচু ভাস্কর্য বলে দাবি করছেন ভাস্কর অলি মাহমুদ। তর্জনী ভাস্কর্যটির সম্ভাব্য নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল সাড়ে ৪২ লাখ টাকা।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2024
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!