শিরোনাম: বান্দরবান সদর উপজেলা নির্বাচনঃ আলোচনায় চেয়ারম্যান প্রার্থীর ৭ কর্মপরিকল্পনা লামা উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড়ে বিধ্বস্ত শতশত বসতবাড়ি জেলা প্রশাসকের হুঁশিয়ারিঃ উপজেলা নির্বাচনে কোনো অনিয়ম বরদাস্ত করা হবেনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনঃ প্রিজাইডিং,সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ সর্বজনীন পেনশন স্কিম সুষ্ঠ ও সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেলা বাস্তবায়ন কমিটির প্রস্তুতি সভা কুকি-চিনের দুই সশস্ত্র সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত বান্দরবানে রহমতের বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় করলেন ধর্মপ্রান মুসল্লিরা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবার সর্বজনীন পেনশন স্কিম কার্যক্রম বাড়াতে চালু হলো হেল্প ডেস্ক

বান্দরবানে জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এবার প্রতারণার মামলা


নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :৩ নভেম্বর, ২০২০ ২:০১ : অপরাহ্ণ 417 Views

জাল সনদ প্রদানকারী বান্দরবান জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সহকারী পরিচালক মঞ্জুর আহমেদ এর বিরুদ্ধে এবার প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত রবিবার (১ ন‌ভেম্বর) দুপুরে বান্দরবান চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মেহেরুন নেছা নামে এক ভুক্তভোগী মহিলা এ মামলা দায়ের করেন। বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুজাহিদুর রহমান মামলাটি আমলে নিয়ে কক্সবাজার (পিবিআই)কে তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলায় রুবি প্রু মার্মা, স্বামী সুইথুই মং মার্মা, মঞ্জুর আহমেদ সহকারী পরিচালক বান্দরবান জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো এবং তার স্ত্রী হ্লাসিং দাইসহ অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামী করা হয়। বাদীর আইনজীবী এ্যাডভোকেট আবু জাফর জানান, বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কক্সবাজার (পিবিআই)কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।

মামলার অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেন, জেলার একই এলাকায় থাকার সুবাদে রুবিপ্রু মার্মা, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সহকারী পরিচালক মঞ্জুর আহমেদ ও তার স্ত্রী হ্লাসিং দাই এর সাথে সমাজসেবা কার্যালয়ের ট্রেড প্রশিক্ষক মেহেরুনেছার পরিচয় হয়। ঐ সুবাদে আসামীরা বাদীর মেয়ে মাসুমা আক্তারকে মৌলিক স্বাক্ষরতা প্রকল্পের আওতায় চাকরীর জন্য আবেদন করতে বললে অভিযোগকারীর মেয়ে আবেদন করেন। আবেদন করার পর অভিযোগকারীর মেয়েকে চাকরী দিবে বলে মঞ্জুর আহমেদ ও তার স্ত্রী হ্লাসিং দাই অভিযোগ কারীর কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ দাবী করেন। পরবর্তীতে ১ নাম্বার আসামী রুবিপ্রু মার্মা নিজের প্রয়োজনে ব্যুরো বাংলাদেশ নামক এনজিও থেকে কিছু টাকা লোন নেয়ার জন্য অভিযোগকারীকে জামিনদার হওয়ার জন্য অনুরোধ করেন ও ৩নং আসামী হ্লাসিং দাই জামিনদার হতে সুপারিশ করেন এবং তার স্বামীর অফিসে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোতে সরকারী চাকরী করে বলে যাবতীয় কাগজপত্র ২ নাম্বার আসামী মঞ্জুর আহমেদ ঠিক করে দিবেন বলেন। রুবি প্রুর এরূপ কথায় প্রতারিত হয়ে অভিযোগকারী জামিনদার হওয়ার জন্য সম্মতি জানান। পরে জামিনদার হিসেবে ব্যুরো বাংলাদেশ, বান্দরবান শাখা অফিসে গেলে শাখা ম্যানেজার আজাদ অভিযোগকারীকে জামিনদার হিসেবে স্বাক্ষর দিতে বলেন। অভিযোগকারী ব্যুরো বাংলাদেশ ম্যানেজানরকে রুবিপ্রু মার্মার কাগজপত্র সঠিক আছে কিনা জানতে চাইলে ম্যানেজার ১ নাম্বার আসামীর কাগজপত্র সঠিক আছে জানালে অভিযোগকারী জামিনদার হিসেবে স্বাক্ষর করেন। পরে অভিযোগকারী বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় জানতে পারেন যে, রুবি প্রু মার্মা উপ আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সহকারী পরিচালক মঞ্জুর আহমেদ তার স্ত্রী হ্লাসিং দাইসহ আরো কয়েকজনের যোগসাজসে তাদের ব্যক্তিগত লাভের জন্য ভূয়া প্রত্যয়ন দিয়ে অসদ উপায়ে ব্যুরো বাংলাদেশ থেকে ঋণ উত্তোলন করেন। ওই জাল প্রত্যয়নপত্রে মঞ্জুর আহমেদ এর স্বাক্ষর রয়েছে। অভিযোগকারী বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে রুবি প্রু ঋণের জামিনদার থেকে অব্যাহতি নেয়ার জন্য ব্যুরো বাংলাদেশ, বান্দরবান শাখায় যোগাযোগ করলে ম্যানেজার অভিযোগকারীকে কোন সহযোগিতা করেননি বলে উল্লেখ করা হয়।

এ বিষয়ে মামলার বাদী মেহেরুন নেছা জানান, আমি একজন সরকারী কর্মচারী। উল্লেখিত আসামী ৩ জন আমাকে বিভিন্নভাবে মিথ্যা বলে ঋণ গ্রহণকারীর ভূয়া প্রত্যয়ন দিয়ে ঋণ উত্তোলনে আমাকে জামিনদার বানিয়ে আমার সাথে প্রতারনা করেছে। এছাড়াও ৩ নম্বর আসামী হ্লাসিংদাই এর কাছ থেকে আমার ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ১ লক্ষ টাকা নিয়ে তাকে একটি স্বাক্ষর বিহীন ব্ল্যাংক চেক প্রদান করি। পরবর্তীতে তার টাকা ফেরত দেওয়ার পরেও সে আমার স্বাক্ষর নকল করে চেকে ১০ লক্ষ টাকার অংক বসিয়ে সোনালী ব্যাংক, বান্দরবান শাখা থেকে টাকা উত্তোলনে ব্যর্থ হয়ে চেক ডিজ অর্নার করে আমার নামে উল্টো মামলা দায়ের করে। তাই আমি হ্লাসিংদাই এর নামে চেক জালিয়তির মামলা দায়ের করেছি এবং ভূয়া প্রত্যয়ন দিয়ে ঋণ গ্রহণকারীর জামিনদার বানিয়ে আমার সাথে প্রতারণা করায় রুবি প্রু, মঞ্জুর আহমেদ ও তার স্ত্রী হ্লাসিংদাইসহ অজ্ঞাত কয়েকজনের নামে প্রতারণার মামলা দায়ের করেছি।

উল্লেখ্য, মঞ্জুর আহমেদ ২০০৭ সালে বান্দরবান জেলার উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোতে অফিস সহকারী হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে সে বান্দরবান জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সহকারী পরিচালক হিসেবে পদোন্নতি পায়। সে দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে কর্মরত থাকার সুবাদে বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পড়েন। তার বিরুদ্ধে ভূয়া প্রত্যয়ন প্রদান, প্রকল্প পাইয়ে দেয়ার নামে বিভিন্ন এনজিওর কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ, মৌলিখ স্বাক্ষরতা প্রকল্পে নিয়োগকৃত শিক্ষকদের বেতন আত্মসাৎসহ চাকুরী দেয়ার নামে মোটা অংকের ঘুষ গ্রহণের অভিযোগও রয়েছে এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2024
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!