এই মাত্র পাওয়া :

শিরোনাম: আসন্ন দুর্গাপূজার প্রস্তুতি নিয়ে হিন্দু ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক বান্দরবানে মহিলা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও সমাবেশ বান্দরবান বাজার এলাকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন এর বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান বিএনকেএস এর উদ্যোগে টেকনাফের ক্যাম্প-২২ এ শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে বর্ণিল আয়োজনে স্বাক্ষরতা দিবস উদযাপিত ঢাকায় পার্বত্য উপদেষ্টার সঙ্গে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান রাষ্ট্রদূতদের সাক্ষাৎ বান্দরবান সার্বজনীন কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহারে শুভ মধু পূর্ণিমা উদযাপিত বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের প্রকল্প প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত ক্যালেন্ডার মেনে বিসিএস পরীক্ষা আয়োজনের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

বঙ্গবন্ধু ছিলেন কৃষকের আপনজন


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :৮ আগস্ট, ২০২০ ৩:৪৭ : অপরাহ্ণ 468 Views

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যদি ঘাতকের নিষ্ঠুর বুলেটে প্রাণ না হারাতেন কিংবা অন্য কোনো কারণে তার যদি মৃত্যু না হতো তবে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ তিনি শতায়ু হতেন। আবার ২০২১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশ তার স্বাধীনতার অর্ধশতবার্ষিকীতে পদার্পণ করবে। এক অপূর্ব সেতুবন্ধন বঙ্গবন্ধু আর তার লালিত স্বপ্নের বাংলাদেশের মধ্যে। যদি এ মহানায়ক তার অতি প্রিয় বাংলার মাটিতে শতবর্ষ বেঁচে থাকতেন তবে এ দিনটি জাতি তখন কীভাবে পালন করত, তা ভাবলে মনেপ্রাণে শিহরণ জাগে।

বঙ্গবন্ধু তার অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে লিখেছেন, ‘একজন মানুষ হিসেবে সমগ্র মানবজাতি নিয়েই আমি ভাবি। একজন বাঙালি হিসেবে যা কিছু বাঙালিদের সঙ্গে সম্পর্কিত তাই আমাকে গভীরভাবে ভাবায়। এ সম্পৃক্তির উৎস ভালোবাসা, অক্ষয় ভালোবাসা, যে ভালোবাসা আমার রাজনীতি এবং অস্তিত্বকে অর্থবহ করে তোলে।’

প্রখ্যাত সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্টকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমার প্রথম চিন্তা আমার দেশের জন্য। আমার যা কিছু দুঃখবোধ, সে তো আমার দেশের জন্যই। আপনি তো দেখেছেন, আমাকে তারা কত গভীরভাবে ভালোবাসে।’ এ অদম্য ভালোবাসাই বঙ্গবন্ধুকে মহান আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ করেছিল আজীবন। সমগ্র বাঙালি তথা সারা বিশ্ববাসী সম্পর্কে তার এমন উপলব্ধিই বলে দেয় তার মহানুভবতা এবং ইতিহাস বলে এ কারণেই শত্রুরা তার পিছু নিয়েছিল।

বঙ্গবন্ধু ছিলেন কৃষকের অতি প্রিয় একজন মানুষ, আপনজন। এ দেশের লাখ লাখ কৃষক পরিবারের পাশাপাশি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের কাছে তিনি ছিলেন পিতৃতুল্য। ১৯৭২ সালের ১৩ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদের প্রথম সভায় নিলেন কৃষকের জন্য যুগান্তকারী এক সিদ্ধান্ত। তাদের সব বকেয়া খাজনা ও সুদ তিনি মওকুফ করে দিলেন। ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা চিরতরে মওকুফ করার ঘোষণা দিলেন।

এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ চত্বরে এলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের মহান স্থপতির এ উজ্জ্বল উপস্থিতি সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে সবার চিত্তকে এক অপার আনন্দের বন্যায় ভরিয়ে দিয়েছিল। ওইদিন সংবর্ধনা সভায় বক্তব্য দানকালে তিনি দেশের কৃষিব্যবস্থায় গতিময়তা আনা ও সংস্কারের লক্ষ্যে কৃষিবিদদের পেশাগত মর্যাদা বৃদ্ধির ঐতিহাসিক ঘোষণা প্রদান করেন।

এর ফলস্বরূপ কৃষিবিদরা লাভ করেন সরকারি চাকরিতে প্রথম শ্রেণির পদমর্যাদা। বঙ্গবন্ধু তার ঐতিহাসিক ভাষণে কৃষক ও কৃষিবিদদের উদ্দেশে বলেন, ‘যদি চাউল খেতে হয় তাহলে আপনাদের চাউল পয়দা করে খেতে হবে, না হলে মুজিবুর রহমানকে বেটে খাওয়ালেও হবে না। সেদিকে আপনাদের নজর দিতে হবে।’ বঙ্গবন্ধু কর্তৃক গৃহীত এ ঐতিহাসিক পদক্ষেপের ফলেই দেশের সার্বিক কৃষি উৎপাদনসহ কৃষি শিক্ষা ও গবেষণায় সঞ্চারিত হয় ব্যাপক গতিশীলতা।

এরই ফলস্বরূপ আজ বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্যকন্যা বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তার সূচিত ভিশন ২০৪১ ও ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ বাস্তবায়নে যে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন, তারই অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দেশ আজ সম্পূর্ণভাবে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। এখন আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে নিরাপদ খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

ইতিহাস কখনও মুছে ফেলা যায় না। সত্য কখনও আড়াল করা যায় না। সত্য বারবার উদ্ভাসিত হয়, প্রস্ফুটিত হয়, উজ্জ্বল ধ্রুবতারার মতো আগামীর পথ প্রদর্শন করে। যারা সেদিন ভেবেছিল বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ইতিহাস থেকে, বাঙালির হৃদয় থেকে তার নাম মুছে ফেলবে, তাদের উদ্দেশে কবি শামসুর রাহমানের ভাষায় বলতে চাই- ‘ওরা তাকে হত্যা করে ভেবেছিল তিনি সহজে হবেন লুপ্ত ঊর্ণাজাল আর ধোঁয়াশায়, মাটি তাকে দেবে চাপা বিস্মৃতির জন্মান্ধ পাতালে; কিন্তু তিনি আজ সগৌরবে এসেছেন ফিরে দেশপ্রেমিকের দৃপ্ত উচ্চারণে, সাধারণ মানুষের প্রখর চৈতন্যে, শিল্পীর তুলিতে, গায়কের গানে, কবির ছন্দে ও আন্দোলনে, রৌদ্র ঝলসিত পথে, মহা মিছিলের পুরোভাগে।’

জাতির জনক আজ আমাদের মাঝে নেই। আছে তার আদর্শ ও দিকনির্দেশনা। তার আদর্শই আমাদের শক্তি, তার স্বপ্নই আমাদের প্রেরণা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণের মাধ্যমেই আমাদের দায়িত্ব হবে বাংলাদেশকে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করে তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা। তাহলেই তার আত্মা শান্তি পাবে। এটিই হবে ইতিহাসের ক্ষণজন্মা এ মহান নেতার প্রতি আমাদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন।

প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান : উপাচার্য, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
September 2025
MTWTFSS
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031 
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!