শিরোনাম: চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ ত্বরান্বিত করতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উপলক্ষে মোবাইল কোর্ট বান্দরবানে আলেম সমাজের সংবাদ সম্মেলন বর্ণাঢ্য আয়োজনে বান্দরবানে উদযাপিত হলো জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস জেলা প্রশাসক মেধাবৃত্তি,বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ গড়তে সেনা জোনের উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ও জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি বান্দরবানে জামায়াতে ইসলামীর বিশাল কর্মী ও সুধী সমাবেশে দুর্গম পাহাড়ে সেনাবাহিনীর মানবিক সহায়তাঃ সুস্থ হয়ে ফিরছে ১১ বছরের জিংক থান ময় বম

৭ মার্চের ভাষণ ছিল বাঙ্গালীর মুক্তির সনদ


মো. আলী আশরাফ মোল্লা প্রকাশের সময় :৫ মার্চ, ২০২০ ৭:৩৩ : অপরাহ্ণ 950 Views

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য আমাদের জাতীয় জীবনে অপরিসীম। ঐতিহাসিক ৭ মার্চ বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ স্বাধীনতার মহান স্থপতি বাঙ্গালী জাতির শেষ্ঠ সন্তান জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে রেসকোর্স ময়দানে অসীম সাহসিকতার সাথে লাখো জনতার উদ্দেশ্যে বজ্রকন্ঠে যে ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন তা ই ছিল মূলত বাঙ্গালীর মুক্তির সনদ। ঐতিহাসিক ভাষণের ধারাবাহিকতায় ২৬ মার্চ ১৯৭১ বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন বাঙালী জাতির বহু কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। তার অসাধারণ নেতৃত্ব এ বাঙ্গালী জাতি নয় মাস লড়াই সংগ্রাম করে পায় ১৯৭১ সালে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ।
৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী) উদ্যানে বিশাল জন সভায় জনসমুদ্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিকাল ২ টা ৪৫ মিনিটে বক্তব্য শুরু করে ৩টা ৩ মিনিটে বক্তব্য শেষ করেন। তার এই মাত্র ১৮ মিনিটের বক্তব্যে ১১৬৮ শব্দের উচ্চারণে তিনি পুরো জাতির কাছে সুস্পষ্ট নিদের্শনা দিয়েছেন। তার বক্তব্য এ উঠে এসেছে বাঙ্গালির মুক্তির কথা। ৭ মার্চের ঐতিহাসিক বক্তব্যের প্রথম বাক্যটি ছিল ভায়েরা আমার,
আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। তিনি বলেন, বাংলার মানুষ বাঁচতে চাই, বাংলার মানুষ মুক্তি চাই। তিনি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক,সাংস্কৃতিক মুক্তির কথা ও তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধু বলেন, এদেশের মানুষ কে যদি খতম করার চেষ্টা করা হয়, বাঙালীরা বুঝে শুনে কাজ করবে। জীবনের তরে সব কিছু বন্ধ করে দিবে। আমি যদি হুকুম দেবার নাও পারি তোমরা সব কিছু বন্ধ করে দিবে। তিনি আরও বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না,আমি এদেশের মানুষের অধিকার চাই। তোমাদের কাছে আমার অনুরোধ রইল- প্রত্যেক ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোল। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে। প্রত্যেক গ্রামে,প্রত্যেক মহল্লায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব এ সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোল এবং তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো।
জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান তার ঐতিহাসিক ভাষণে আরো বলেন,সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না, আমরা যখন মরতে শিখেছি তখন কেউ আমাদের কে দাবায়ে রাখতে পারবে না। মনে রাখবা, রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেবো তবু এদেশের মানুষ কে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। বঙ্গবন্ধুর বক্তব্যের শেষ বাক্যটি ছিল, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম/এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।

৭ মার্চের ভাষণ সম্পর্কে বর্ণবাদবিরোধী নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা বলেন, ৭ মার্চের ভাষণ আসলে ছিল স্বাধীনতার মূল দলিল।কিউবার অবিসংবাদিত নেতা ফিদেল কাস্ট্রো বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ শুধু মাত্র একটি ভাষণ নয় এটি একটি অনন্য রনকৌশল দলিল।

মূলত বাঙ্গালীরা তার এই ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমেই বাংলার মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য,স্বাধীনতার জন্য,যুদ্ধের জন্য,মুক্তির জন্য প্রস্তুত হতে থাকে। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের পরতে পরতে মিশে আছে জাতির পিতার অসামান্য অবদান। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রাম পযর্ন্ত প্রত্যেক আন্দোলনে তার অবদান অপরিসীম। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বেই র্দীঘ নয় মাস সশস্ত্র মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জন করি স্বাধীন সার্বভোম রাষ্ট্র বাংলাদেশ।
বঙ্গবন্ধু র সাত ই মার্চে ভাষণ এটি এখন বিশ্ব দলিল। ২০১৭ সালের অক্টোবরে ইউনেস্কোর মেমোরি অব দ্যা ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্ট্রারে ডকুমেন্টারী হেরিটেজ (বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য) হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ৭ মার্চের ভাষণকে ৪৩টি ভাষায় অনুবাদ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ১২ টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু কে বিখ্যাত নিউজউইক ম্যাগাজিন রাজনৈতিক কবি (poet of politics) হিসেবে আখ্যায়িত করেন। আমাদের স্বাধীনতা অর্জনে ৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্ব অনেক। মূলত সাত মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ভাষণেই নিহিত ছিল বাঙালির মুক্তির ডাক। আর তার এই ডাকে সাড়া দিয়েই এক সাগর রক্তের বিনিময়ে আমরা পায় স্বাধীন রাষ্ট্র প্রিয় বাংলাদেশ। জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান চেয়েছিলেন স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ কে একটি সুখী সমৃদ্ধশীল সোনার বাংলায় গড়ে তুলতে। আর তার এই আজীবনের লালিত স্বপ্নকেই বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে তার সুযোগ্য কন্যা জন নেত্রী শেখ হাসিনা সরকার। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে বাস্তবায়িত হোক তার আজীবনের লালিত স্বপ্ন।

লেখকঃ সাবেক সাধারণ সম্পাদক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটি সোসাইটি ও পুলিশ কর্মকর্তা,বাংলাদেশ পুলিশ।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!