শিরোনাম: না ফেরার দেশে নীলিমা বড়ুয়াঃ সিএইচটি টাইমস ডটকমের শোক প্রকাশ পর্যটকের মৃত্যুঃ ট্যুর এক্সপার্ট এডমিন বর্ষা ইসলাম বৃষ্টিকে গ্রেফতার ইরান যদি আর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যায় তাহলে পাল্টা হামলায় তেহরানকে জ্বালিয়ে দেয়া হবেঃ ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ সব ধরনের বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীককে বিজয়ী করতে হবেঃ সাচিং প্রু জেরী কাতার রেডক্রস এর আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতায় অসহায়দের মাঝে মাংস বিতরন করলো বান্দরবান রেডক্রিসেন্ট যথাযোগ্য মর্যাদায় ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বান্দরবানে পবিত্র ঈদুল আযহার ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত কুহালং হেডম্যান পাড়ায় নানা আয়োজনে মাসিক স্বাস্থ্য দিবস-২৫ পালিত বান্দরবানে টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন

বিএনপি ছেড়ে আসলেও চরিত্রের পরিবর্তন হয়নি সদ্য আটককৃত চাঁদাবাজদের


সিএইচটি টাইমস অনলাইন প্রকাশের সময় :২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ৯:০৫ : অপরাহ্ণ 694 Views

“কয়লা ধুলেও ময়লা যায়না।” সদ্য আটককৃত টেন্ডারবাজ এবং চাঁদাবাজদের অতীত ইতিহাস এ কথাটিই বার বার মনে করিয়ে দেয়। একসময়ের বিএনপি’র ক্যাডার, টেন্ডারবাজ ও চাঁদাবাজেরা ভোল পাল্টিয়ে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করলেও বিএনপি’র লুটপাটের দলীয় নীতি এখনও তারা বিসর্জন দিতে পারেনি। সুনির্দিষ্ট চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির অভিযোগে সদ্য আটক জি কে শামীম এক সময় ছিলেন যুবদল নেতা। সরকার পরিবর্তনের পর ভোল পাল্টে যোগ দেন যুবলীগে। খালেদ মাহমুদ ভূঁইয় এক সময় ছিলেন ফ্রিডম পার্টির কর্মী। ছিলেন বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের ভাই মির্জা খোকনের ঘনিষ্ঠ সহযোগি। কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের সভাপতি ও বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শফিকুল আলম ফিরোজ ওরফে কালা ফিরোজ তার রাজনীতি জীবনের শুরু করেন ছাত্রদল থেকে। পরবর্তীতে দল পাল্টে আসেন কৃষক লীগে।
সাম্প্রতিক সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত শুদ্ধি অভিযানের কার্যক্রম শুরু হবার পর পূর্বোল্লিখিত তিন নেতা সারাদেশেই সমালোচিত হন। যুবলীগ কিংবা কৃষক লীগ বলেই প্রাথমিক ভাবে মিডিয়াতে তাদের মুখোশ উন্মোচন করা হয়। সংবাদ পত্রে কিংবা টেলিভিশন সংবাদেও প্রচার হয় ক্ষমতাসীন দলের সাথে তাদের সম্পৃক্ততা। তবে এই সমালোচিত তিন নেতারই অতীত ইতিহাস থেকে দেখা যায়, রাজনৈতিক সুবিধা ভোগের আশায় দল পরবর্তন করেছেন তারা বিভিন্ন সময়। আসুন দেখে নেয়া যাক এই তিন সমালোচিত তথাকথিত নেতার অতীত ইতিহাস।

জি কে শামীমঃ এক সময় ছিলেন যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক। ছিলেন বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের ডান হাত। কিন্তু ক্ষমতাকে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে নিজের অবৈধ ব্যবসা প্রসারের জন্যে বর্তমান সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর অন্য অনেক ‘হাইব্রিড’ রাজনীতিবিদের মতোই ভোল পাল্টে যোগদেন যুবলীগে। এক সময় পান যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদকের পদ। তবে যুবলীগের নেতারা বলছেন, আসলে তার যুবলীগের কোনো পদ নেই। তিনি নিজে নিজেই যুবলীগের নেতা এবং কেন্দ্রীয় সমবায়বিষয়ক সম্পাদক দাবি করতেন। আবার তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বলেও শোনা যাচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, এজিবি কলোনি সংলগ্ন ৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের মাধ্যমেই শামীমের রাজনীতি শুরু। পরবর্তী সময়ে মির্জা আব্বাসের ভাই মির্জা কালু ও মির্জা খোকনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয় এবং তাদের সহযোগিতায় ধীরে ধীরে গণপূর্ত ভবনের ঠিকাদারি ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নেন। ঢাকা মহানগর যুবদলের সহ-সম্পাদকের পদও বাগিয়ে নেন। বিএনপি আমলে গণপূর্ত ভবন ছিল তার দখলে। একসময় মির্জা আব্বাস আর খালেদা জিয়ার ছবি সংবলিত জি কে শামীমের ব্যানার-পোস্টার সবুজবাগ-বাসাবো এলাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় শোভা পেত। জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর অবৈধ অস্ত্রসহ গ্রেফতারও হয়েছিলেন জি কে শামীম।

খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াঃ ১৯৮৯ সালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে শেখ হাসিনার ওপর হামলা চালানো সন্ত্রাসী মানিক ও রাসুর হাত ধরে হাত ধরে খালেদের রাজনৈতিক পথচলা শুরু। বেড়ে ওঠা রাজধানীর শাহজাহানপুরে। বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের ভাই মির্জা খোকনের ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি। শীর্ষ সন্ত্রাসী জাফর আহমেদ মানিকের হয়ে তিনি এলাকায় চাঁদাবাজি করতেন। হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজে পড়াশোনা করার সময় তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে পুলিশের সঙ্গে তার সংঘর্ষ বাধে। এসময় পুলিশের গুলিতে তার একটি পা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখন থেকেই তাকে ‘ল্যাংড়া খালেদ’ নামে অনেকে চেনে। অপরাধ জগতের শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের সঙ্গে খালেদের সুইমিংপুলে একসঙ্গে সাঁতার কাটার মুহূর্তের ছবিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা গিয়েছে।

জানা যায়, ২০১০ পরবর্তী সময়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। ২০১৩ সালে বিশাল শোডাউন করে যুবলীগে যোগদান করে সরাসরি সাংগঠনিক সম্পাদক পদ লাভ করেন। এরপর থেকেই আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠেন খালেদ। মতিঝিল এলাকার সকল চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি একসময় নিয়ন্ত্রণ করতো মিল্কী, তারেক ও চঞ্চল। ২০১৪ সালে মিল্কী খুন হওয়ার পর ক্রসফায়ারে মারা যায় তারেক। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় চঞ্চল। এরপর পুরো ফাঁকা মাঠের দখল নেন খালেদ।

শফিকুল আলম ফিরোজঃ তার রাজনৈতিক জীবনের শুরু বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল থেকে। ঠিক কোন সময়ে ফিরোজ রাজনীতিতে যুক্ত হন এই ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য না পাওয়া গেলেও ধারণা করা হয়, ৯০ এর দশকের শুরুর দিকে ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন ফিরোজ। ২০০১ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত রাজনীতির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত না হয়েও পূর্বে ছাত্রদল করার সুবাদে বিএনপি নেতাদের ছত্রছায়ায় মাদক ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন ফিরোজ। ওই সময়ে নানান সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ায় স্থানীয়রা তাকে ডাকতো ‘কালা ফিরোজ’ নামে।পরবর্তীতে ২০০৮ এ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন কৃষক লীগে যোগদান করেন ফিরোজ। একসময় এই সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পদ লাভ করেন। নির্বাচিত হন রাজধানী ঢাকার কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের সভাপতি হিসেবে। আর এর পর থেকেই আবার গোপনে মাদক কারবারির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন ফিরোজ।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শে সৃষ্ট বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশের মানুষের প্রিয় সংগঠন হয়ে উঠছে, সেসময়ই সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে এই স্রোতে ভেসে আসা নেতাদের মতো অনেকেই নিজেদের পকেট ভারী করেছেন। মাদক, দুর্নীতি আর ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই হাইব্রিডরা যেমনি দলের ক্ষতি করেছেন, তেমনি তাদের ঘৃর্নিত কর্মকান্ডে করেছেন দেশের ক্ষতি। আর এসব কীটদের বিরুদ্ধেই এবার কঠোর অবস্থান নিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। ক্ষমতার খোলসে ঢাকা এই সমাজের কীটদের উপড়ে ফেলতে পারলেই বাংলাদেশ হবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমজুড়ে এমনটাই দেখা গেলো জনসাধারণের প্রতিক্রিয়া।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
June 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!