ঈদকে সামনে রেখে মহাসড়কে নেই যানজটের ভোগান্তি


নিউজ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৩ জুন, ২০১৯ ৮:৫৬ : অপরাহ্ণ 521 Views

সিয়াম সাধনার মাস রমজানের চলছে শেষ কয়েকটা দিন। রোজা যদি ২৯শে হয় তাহলে ঈদ হবে ৫ মে বুধবার আর নাহলে ৬ মে বৃহস্পতিবার। আর যেই দিনেই হোক না কেন, ঈদকে সামনে রেখে পরিবার পরিজনের সঙ্গে ঈদ করতে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। ঈদ যতো ঘনিয়ে আসছে তত ফাঁকা হচ্ছে ঢাকা। আর সেই কারণে ঢাকার চিরচেনা যানজট অনেকটাই কমে গিয়েছে। এখন আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে যানজটে বসে থাকতে হয়না। ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত শপিং মলগুলোতে চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা।
প্রতিবারই ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন সড়ক মহাসড়কে চোখে পড়তো তীব্র যানজট। ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঈদের কারণে তীব্র যানজট থাকতো। কুমিল্লায় মেঘনা সেতু থাকলেও তা ছিলো চাহিদানুযায়ী কম। একটি মাত্র সেতু আর টোল প্লাজার কারণে এই যানজট ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়তো। তবে এবারের চিত্রটা কিছুটা ভিন্ন। জনগণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদ উপহার হিসেবে চালু করে দিয়েছেন দ্বিতীয় মেঘনা ও গোমতী সেতু। এই কারণে এই মহাসড়কে এখন আর যানজটে পড়তে হয় না। যে সেতু পার হতে আগে ৫/৬ ঘণ্টা সময় লাগতো আর সেই সেতু এখন মাত্র ৪/৫ মিনিটের পার হওয়া যায়। দূরত্ব একই থাকলেও অপেক্ষার সময় এখন বেশ কমে গেছে। ঢাকা থেকে কুমিল্লা যাওয়া যাচ্ছে মাত্র দেড় থেকে দুই ঘণ্টায়। যেখানে আগে ১০/১২ ঘণ্টা বসে থাকতে হতো।
এইতো গেলো ঢাকা চট্টগ্রাম হাইওয়ের কথা। এখন উত্তরবঙ্গে যেতেও যানজটের সম্মুখীন হবে না মানুষ। আগে টাঙ্গাইল ছিলো দুই দুই করে চার লেনের রাস্তা। এখন সেই রাস্তা হয়েছে ছয় লেনের। আগে উত্তরবঙ্গের প্রবেশমুখ সিরাজগঞ্জে ছিলো বেশ ভাঙ্গা সড়ক সেই সাথে বিশাল গর্ত। এখন আর সেই অবস্থা নাই। সড়ক প্রশস্তকরণ ও সড়কের ভাঙ্গা অংশ ঠিক করার কারণে এই রুটে যানজটের পরিমাণ নেই বললেই চলে। আর ঈদের কারণে যানজট নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ট্রাফিক পুলিশের হাজারো সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক। এর কারণে এখন আর যানজটে বসে থাকতে হচ্ছে না যাত্রীদের। দ্রুতই চলে যাচ্ছেন নিজ নিজ এলাকায়। তাই এই ঈদেও তাদের যানজটের সম্মুখীন হতে হবে না তা জোর গলাতেই বলা যায়।
এখন আসি ঢাকা সিলেট মহাসড়কের কথা নিয়ে। ঢাকা সিলেট হাইওয়ে মোট ২১৮ কিলোমিটার সড়ক। আর এই সড়কের উপর দিয়ে যাতায়াত করে অন্তত দেশের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত আটটি জেলার মানুষ। আগে যাত্রীদের সবচেয়ে বেশি যানজটে বসে থাকতে হতো হাইওয়ের নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অবস্থিত ভুলতা এলাকায়। হাইওয়ের পাশাপাশি সেখান ঢাকা সিটি বাইপাসের রোড থাকায় যানবাহনের চাপ ছিলো বেশি। আর এই যানবাহনের চাপ কমাতে সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে গড়ে তোলা হলো ভুলতা ফ্লাইওভার। চলতি বছরের মার্চে উদ্বোধন করা হয় এই ফ্লাইওভারের। আর এতে করে মুহূর্তেই কমে গছে সড়কের এই স্থানে যানবাহনের চাপ। মাত্র তিন থেকে চার ঘণ্টায় আসা যাওয়া করা যাচ্ছে ঢাকা থেকে সিলেটে। যেখানে আগে ১৪/১৫ ঘণ্টা পার হয়ে যেতো।
এদিকে দক্ষিণবঙ্গের মানুষদের সুবিধার্থে দেশের প্রধান প্রধান নদীর শাসন করা হয়েছে। যেখানে পানির নাব্যতা কম ছিলো সেখানে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা হয়েছে। নদীর গভীরতা বাড়ানো হয়েছে। নদীর বিভিন্ন ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করা হয়েছে। যাতে মানুষ লঞ্চে করে নির্দ্বিধায় সহজেই যাতায়াত করতে পারে। আর এই ঈদের বড় চাপের কথা চিন্তা করে গত সাত আট মাস আগে থেকেই এই নদী শাসনের কাজ শুরু করে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়।
আর সর্বশেষ ঢাকা যশোর রোডে মানুষের অতিরিক্ত সময় কমাতে সরকার হাতে নিয়ে পদ্মা সেতুর কাজ। স্প্যান বসতে বসতে এখন সেতুর প্রায় দুই কিলোমিটার দৃশ্যমান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বিক দূরদর্শিতায় দ্রুত এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতুর কাজ। বেড়ে গেলে কাজের মাত্রা। প্রতিমাসে অন্তত দুইটি করে বসছে সেতুর স্প্যান। আর এতে করেই আগামী ২০২১ সালে উদ্বোধন হবে দেশের সবচেয়ে বড় ও চ্যালেঞ্জিং পদ্মা সেতু। আর এতে সরকার বদ্ধপরিকর।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2024
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  

error: কি ব্যাপার মামা !!