এই মাত্র পাওয়া :

ঋণ খেলাপি ও অর্থ পাচারকারীদের তালিকা চেয়ে হাইকোর্টের আদেশ, লাপাত্তা বিএনপি নেতারা


নিউজ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ২:৪৫ : অপরাহ্ণ 850 Views

গত ২০ বছরের ব্যাংকিং খাতের ঋণ খেলাপি ও অর্থ পাচারকারীদের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট। বুধবার এ সংক্রান্ত একটি রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এদিকে হাইকোর্ট ঋণ খেলাপি ও অর্থ পাচারকারীদের নামের তালিকা চাওয়ায় বিএনপির রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। কারণ বিগত বছরগুলোতে বিভিন্ন ব্যবসার নাম করে ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে কোটি কোটি টাকা উত্তোলন করে ফেরত দেননি খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, আবদুল আউয়াল মিন্টু, মোসাদ্দেক আলী ফালু, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর মতো নেতারা। পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে অর্থ পাচারের অভিযোগ। হাইকোর্টের আদেশে হঠাৎ করে লাপাত্তা হয়ে গেছেন উক্ত নেতারা। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র ও সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ করে তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

বিএনপির নয়াপল্টন পার্টি অফিস সূত্রে জানা যায়, হাইকোর্ট ঋণ খেলাপি ও অর্থ পাচারকারীদের তথ্য চাওয়ার পর থেকেই দলের ভেতর অসন্তোষ ও ভীতি সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে বিএনপির ব্যবসায়ী নেতারা হাইকোর্টের আদেশের পর থেকেই বিভিন্ন জায়গায় ফোন করে আসন্ন বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ারও চেষ্টা করছেন। যদিও অনেক নেতা বলছেন, আদালতের আদেশে ভয়ের কিছু নেই।

বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বিএনপির সিনিয়র নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল আউয়াল মিন্টু, ফালু, আমির খসরুর মতো সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে বিদেশে অর্থ পাচার, রাষ্ট্রীয় সম্পদ তছরুপ, বিভিন্ন ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ করার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে খন্দকার মোশাররফ, মিন্টু ও ফালুর বিরুদ্ধে বিদেশে বিভিন্ন ব্যাংকে নামে-বেনামে অর্থ পাচারের জন্য দুদক মামলা করেছে। এর মধ্যে ফালুর যাবতীয় সম্পদ ক্রোক করে নেয়ারও আদেশ দিয়েছেন আদালত। মোশাররফ ও মিন্টু দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের মামলায় জামিনে রয়েছে। আমির খসরুর বিরুদ্ধেও মন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে বিপুল পরিমাণ রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিদেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, নতুন করে ঋণ খেলাপি ও অর্থ পাচারকারীদের তালিকা চাওয়ায় ঘাপটি মেরে বসেছেন বিএনপির অভিযুক্ত নেতারা। অনেক চেষ্টা করেও মিন্টু, খসরু ও ফালুকে ফোনে পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন সূত্রের বরাতে জানা গেছে, নতুন মামলা থেকে বাঁচতে তারা গা ঢাকা দিয়েছে।

বিএনপি নেতাদের এমন লুকাচুরির বিষয়টিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেন, আদালত নতুন করে অর্থ পাচারকারীদের তালিকা চেয়েছেন শুনেছি। এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। বিএনপির নেতারা অনেকেই ব্যবসা করেন। বিভিন্ন কারণে দেশে-বিদেশে টাকা পাঠাতে হয়। এগুলোকে তো অর্থ পাচার বলা যায় না। হ্যাঁ, এটি সত্য যে কজন নেতা ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে অল্প কিছু টাকা বেনামে বিদেশে পাঠিয়েছিলেন। এগুলোর বিচার চলছে। নতুন করে নাম চাওয়াটা আমাদের জন্য খানিকটা বিব্রতকর। ক্ষমতায় থাকলে ছোট-খাটো ভুলত্রুটি হতেই পারে। এটার জন্যে তো ঢোল পিটিয়ে বদনাম করার কিছু নেই। আমরা রাজনৈতিকভাবে চাপের মুখে আছি। এখন বিচারিকভাবে চাপে রাখলে তো দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। যদিও আমি দেশছাড়ার পক্ষে নই। আমি ঘোষণা দিতে চাই, বিএনপির যে সব নেতারা নতুন করে ঋণ খেলাপি ও অর্থ পাচারের মামলায় অভিযুক্ত হবেন তাদের মামলাগুলো পরিচালনা করার দায়িত্ব নিব আমি। ভয়ের কিছু নেই।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
November 2025
MTWTFSS
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
আলোচিত খবর