সাবেক প্রধান বিচারপতি সিনহার আশিয়ান সিটি কেলেঙ্কারী


প্রকাশের সময় :২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ২:৫৮ : অপরাহ্ণ 512 Views

বান্দরবান অফিসঃ-সম্প্রতি জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘অ্যা ব্রোকেন ড্রিম: রুল অব ল, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি’ নামের একটি বিতর্কিত আত্মজীবনীমূলক বই প্রকাশ করে আবারো সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন একাধিক দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। এস কে সিনহার বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগের মধ্যে অন্যতম আশিয়ান সিটির কাছ থেকে ৫০ কোটি টাকা ঘুষ নেয়া।

এস কে সিনহার বিরুদ্ধে এয়ারপোর্টের পূর্বপাশে খিলক্ষেত এলাকায় আশিয়ান সিটি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ৫০ কোটি টাকা নেয়ার অভিযোগ করেছেন উত্তরার এক রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী।

তিনি জানান, আশিয়ান সিটির এমডি নজরুল ২০০৭ সাল থেকে সাধারণ মানুষ ও সরকারি কর্মকর্তাদের মালিকানাধীন বিল, নিচু জমি জোর করে ভরাট করে দখল করতে থাকে। তখন নিরীহ জমির মালিকদের অসহায়ত্বের খবর পত্রিকায়ও প্রকাশ হয়।

২০১২ সালে বিল ভরাট করার বিরুদ্ধে পরিবেশবাদী সংগঠন ও সরকার হাইকোর্টে রিট করেন। এই মামলা চলার সময় এস কে সিনহা সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। আশিয়ান সিটির বিরুদ্ধে এই মামলা আশিয়ান সিটির পক্ষে রায় আনতে এস কে সিনহার পিএ রঞ্জিতের সাথে সিঙ্গাপুরে ৫০ কোটি টাকার চুক্তি করেন আশিয়ান সিটির এমডি। সিঙ্গাপুরে সে টাকার লেনদেনও হয়। কিন্তু সরকারের এটর্নি জেনারেলকে ম্যানেজ করতে পারেননি রঞ্জিত। সে মামলায় এটর্নি জেনারেলের ভূমিকায় হেরে যায় আশিয়ান সিটি।

মামলা হেরে প্রধান বিচারপতির পিএ রঞ্জিতের কাছে তখন টাকা ফেরত চান আশিয়ান সিটির এমডি। রঞ্জিত সে সময় ১০ কোটি টাকা ফেরত দিতে রাজি হয়। কিন্তু এস কে সিনহা ক্যাশে না দিয়ে প্রধান বিচারপতি হিসেবে বরাদ্দ পাওয়া ৫ কাঠার উপর নির্মিত ছয়তলা বাড়ি (বাড়ি -৫১, সড়ক -১২, সেক্টর ১০, উত্তরা) তার পিএর স্ত্রী শ্রান্তি রায় এর নামে আম মোক্তার করে দেন এবং বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু করেন।

বাড়িটি উত্তরার এক রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীর নিকট বিক্রির জন্য আম মোক্তার নামা দেখালে এস কে সিনহার পিএর স্ত্রীর নামে আম মোক্তার নামা দেখে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীর সন্দেহ হয়। এছাড়া প্রধান বিচারপতির নামে বরাদ্দ বাড়ি বিক্রি হবে, কিন্তু আম মোক্তার নামা তার পিএর স্ত্রীর নামে এবং বিক্রীত টাকা ক্যাশ নিবেন আশিয়ান সিটির মালিক, এরকম শর্ত দেখে ব্যবসায়ীর সন্দেহ ঘনীভূত হয়। তাই তিনি আর অগ্রসর হননি।

পরবর্তীতে বাড়িটি অন্য আরেক ব্যবসায়ী ক্যাশ ১০ কোটি টাকায় কিনে নেন। এই তথ্য তখন সরকারের উচ্চ পদস্থ কিছু কর্মকর্তাকে জানলেও তৎকালীন প্রধান বিচারপতির ব্যাপারে কোনো অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করা ঝুঁকিপূর্ণ বলে এড়িয়ে যান।

বাড়ি বিক্রির খবরটি মুখে মুখে প্রকাশ হয়ে পড়লে পিএ রণজিৎ স্ত্রীসহ সিঙ্গাপুর চলে যান। উত্তরা ভূমি অফিসে এই বাড়ি বিক্রি সংক্রান্ত সকল তথ্যই রয়েছে বলে দাবি করেছেন ওই রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী।

সাবেক প্রধান বিচারপতির এমন অপকর্মের কথা ফাঁস হয়ে যাওয়াতে তার বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ সর্বত্র। সিনহাকে দেশে ফিরিয়ে এনে আইনের আওতায় নিয়ে আসারও দাবি জানিয়েছেন অনেকে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2024
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!