শিরোনাম: জেলা প্রশাসকের হুঁশিয়ারিঃ উপজেলা নির্বাচনে কোনো অনিয়ম বরদাস্ত করা হবেনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনঃ প্রিজাইডিং,সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ সর্বজনীন পেনশন স্কিম সুষ্ঠ ও সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেলা বাস্তবায়ন কমিটির প্রস্তুতি সভা কুকি-চিনের দুই সশস্ত্র সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত বান্দরবানে রহমতের বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় করলেন ধর্মপ্রান মুসল্লিরা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবার সর্বজনীন পেনশন স্কিম কার্যক্রম বাড়াতে চালু হলো হেল্প ডেস্ক কেএনএফ এর ৭ সদস্য কারাগারেঃ রুমা ছাত্রলীগ সভাপতি কে বহিষ্কার যৌথ বাহিনীর অভিযানঃ তিন উপজেলায় স্থগিত হলো ভোট

আমি মূর্খ,তাই বলে তুমি জ্ঞানপাপী হবে….!!!


প্রকাশের সময় :১০ জুলাই, ২০১৮ ১২:১৭ : পূর্বাহ্ণ 954 Views

সিএইচটি নিউজ ডেস্কঃ-ভুল চিকিৎসা বা অবহেলার কারণে কারো মৃত্যু ঘটলে, পাবলিক যখন প্রতিবাদ করে তখন এদেশের জ্ঞানী ডাক্তারেরা আমাদের মূর্খ বলে অপমান করে। আরে মেনে নিচ্ছি আমরা মুখ্যসুখ্য মানুষ। আমাদের জ্ঞানের অভাব তাই আমরা আপনাদের মতো ডাক্তারি পড়ে জ্ঞানী হতে পারিনি। এখনও বিশ্বাস করি দেশের সবচেয়ে মেধাবীদের একাংশই এ বিদ্যা অর্জনের সুযোগ পায়। তাইতো আমরা পাবলিকেরা আল্লাহর পর রোগীর সংকটের মুহূর্তে এ দ্বিতীয় ঈশ্বরের দিকেই করুণভাবে তাকিয়ে থাকি পরম বিশ্বাসে। সে মুহুর্ততে তো আর করার কিছুই থাকে না। তাদের একটু সহানুভূতি, সহমর্মিতা, একটু ভালো ব্যবহার পেলে রোগী অর্ধেক সুস্থ হয়ে যায়, বাকী অর্ধেক সুস্থতা নিয়মমাফিক সঠিকভাবে চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার ওপর নির্ভর করে। কিন্তু এ জ্ঞানীরা যখন জ্ঞানপাপীর ভুমিকায় অবতীর্ণ হন, দায়িত্বে অবহেলা করে ভুল চিকিৎসা করেন আর তাদের অবহেলার কারণে আমরা যখন প্রতিবাদ করি তখন আমরা মূর্খ হয়ে যাই, জ্ঞান নেই বলে ঘেউ ঘেউ করছি বলে। আর কতিপয় এ জ্ঞানপাপীরা ‘তাদের হয়রানি করা হচ্ছে’ বলেও ওল্টা অভিযোগ করেন। এর প্রতিবাদে পালন করেন কর্মবিরতি। আর এভাবে জিম্মি করে রাখেন আমাদের মত অসহায় মানুষদের। কোনো রোগী বা রোগীদেরকে জিম্মি করে দাবি আদায় করা কখনও চিকিৎসকদের কাজ হতে পারে না। নিজের চরম সংকটের মুহুর্তেও আগে রোগীর সেবাপ্রদান করাই ডাক্তারের ধর্ম হওয়া উচিৎ,এমনকি তার চরম শত্রুকেও।অথচ হচ্ছে তার ওল্টো।আজকাল বেশিরভাগক্ষেত্রে দেখা যায় যে,কম সময়ের মধ্যে বেশি রোগী দেখার কারণে তাড়াহুড়া করে ট্রিটমেন্ট দিচ্ছেন। মন দিয়ে রোগীর কথা শুনছেন না বা রোগীর কথা শেষ হবার আগেই প্রেসক্রিপশন লেখা শেষ হয়ে যায়। একইসময়ে একসাথে তিন-চারজন রোগীকে কক্ষে ঢুকিয়ে একজনের সামনে অপরজনদের চিকিৎসা দেন যেখানে রোগীর প্রাইভেসির কোন মূল্য দেবার প্রয়োজনবোধ করেন না। একজন মানুষ তার সমস্যার সকল সিক্রেট বিষয় ডাক্তারের সাথে শেয়ার করতে চান কিন্তু বড় বড় ডাক্তাররা যদি এভাবে চিকিৎসা করান তবে মূল্যবোধ সম্পন্ন রোগী দ্বিতীয়বার সে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার ব্যাপারে চিন্তা করতে বাধ্য। তাছাড়া অপারেশন কন্ডিশনের রোগীদের পেলেতো মহাখুশী। এমনভাবে ভড়কে দেবে, বলবে যে দ্রুত অপারেশন না করালে রোগীর খুব ক্ষতি হয়ে যাবে। কোনরকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করিয়েই দ্রুত অপারেশনটা করাতে পারলে কামাইটা ঝামেলাহীনভাবে করা যায় পাছে রোগী না আবার আরো ভালো চিকিৎসার জন্য অন্য চিকিৎসক বা দেশের বাহিরে চলে যায়! রোগী বাঁচলো না মরলো সেইটা মুখ্য নয়। তাছাড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোনো অ্যাপয়েন্টমেন্ট পদ্ধতি চালু নেই। ফলে ডাক্তাররা প্রতিদিন গড়ে ৯০-১০০ জন রোগী দেখে থাকেন। শুধু তাই নয়, পুনরায় সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রেও তারা যথেষ্ট পরিমাণ ফি আদায় করেন। পাশাপাশি রোগীদের সাথে ডাক্তারদের দুর্ব্যবহার এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে যে, এটা তাদের একটা বদভ্যাসে পরিণত হয়েগেছে। এভাবে রোগীদের অবহেলা করে তারা শুধু চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয়ই দিচ্ছেন না, এতে করে ডাক্তার ও রোগীর মধ্যে প্রচন্ডভাবে আস্হার সংকট তৈরি করছেন। প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে এসব ডাক্তারের গ্রহণযোগ্যতা।
যুক্তরাজ্যের ১৭০ বছরের পুরনো মেডিকেল জার্নাল ‘বিএমজে’ গতবছর শেষ নাগাদ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশে একজন ডাক্তার গড়ে ৪৮ সেকেন্ড রোগীর জন্য সময় দেন। যেখানে উন্নত বিশ্ব সুইডেন, নরওয়ে, আমেরিকার ডাক্তাররা গড়ে প্রায় ২০ মিনিট করে সময় দিচ্ছেন।অথচ রোগের চিকিৎসাক্ষেত্রে, ডাক্তার ও রোগীর মধ্যে পারস্পরিক আস্হাটাই সবচেয়ে বেশি থাকা প্রয়োজন।আমাদের বিশ্বাস, কোনো ডাক্তারই চায়বেন না তার রোগী মারা যাক, রোগীকে সুস্থ করে তোলার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টাটাই করবেন। তাই একজন ডাক্তার কোন ইনজেকশন পুশ করার আগে এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে রোগী বা স্বজনদের অবহিত করবেন। রোগীর সাথে বুঝাপড়াটা এক্ষেত্রে খুবই জরুরি। কেনো না একই ইনজেকশনে রোগী সুস্থ হয়ে ওঠতে পারে আবার মারাও যেতে পারে। কারণ এধরণের জটিল চিকিৎসার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের দায় রয়েছে। উদাহরণ দিয়ে বললে বলতে হবে অপারেশনের সময় রোগীর বা স্বজনের কাছে থেকে সিগনেচার নিতে হয়, এসময় রোগী মারা গেলে চিকিৎসক দায়ী থাকবেন না। আর একজন ভালো বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সেবা হওয়া উচিৎ সেরকমই। কেননা চিকিৎসা বা চিকিৎসকের ভুল ছাড়াও অনেকসময় দেখা যায়, ভেজাল ওষুধের ফলে রোগী মারা গেছেন। কারণ আমাদের দেশে ২০ ভাগ ওষুধই হচ্ছে ভেজাল। আরেকটি জরুরি বিষয়, আইনে ডাক্তারদের ভুল চিকিৎসার জন্য কোনো পানিশমেন্ট নেই, কিন্তু অবহেলার জন্য পানিশমেন্ট আছে। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিক বর্তমান সময়ে। যেকোনো ভুল চিকিৎসা প্রমাণিত হলে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। চোর-ডাকাত-অপরাধীরা যেভাবে শাস্তি পায়, ভুল চিকিৎসার জন্য দায়ী ডাক্তারকেও সমানভাবে শাস্তি পেতে হবে। পাশাপাশি লাইসেন্সহীন বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে গড়ে ওঠা ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলোর বিষয়ে সোচ্চার থাকতে হবে। এ মৃত্যুকূপ গুলোর বিষয়ে সচেতন না হলে সেখানে শুধু ডাক্তারদের দোষ দিয়ে কোন লাভ নেই। এধরণের ভুল-ভ্রান্তিগুলো সংশোধন করলে এদেশের মানুষদের আবারও চিকিৎসকদের প্রতি আস্হা ফিরে আসবে এবং রোগীদের দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য যেতে হবে না। আর আমাদের রাজস্বও হারিয়ে যাবে না।রাইফা মামনি, সোনামণি আমার, তুমি মরে গিয়ে বেঁচে গেছো মা, আর আমরা বেঁচে মরে আছি।আমাদের হাত-পা বাঁধা। আমরা তাকিয়ে তাকিয়ে তামাশা দেখছি।কেউ যখন ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন প্রতিবাদ করতেই পারে, তাই তোমার চাচ্চুরাসহ সবাই প্রতিবাদ করাতে মৃত্যুকূপ গুলোতে অভিযান চালিয়েছে র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ অভিযানের প্রতিবাদে বৃহত্তর চট্টগ্রামে সব বেসরকারি হাসপাতালে অনির্দিষ্টকালের জন্য হাসপাতাল সেবা বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন মালিকরা। অনেক ভালো ডাক্তার যারা সত্যিকার অর্থে সেবক তারা ভিতরে ভিতরে তাদের এ অরাজকতার বিরুদ্ধে কিন্তু নিরুপায় তাই ঐ ভালো ডাক্তারগুলোও বাধ্য হয়ে তাদের দলে সামিল হয়েছেন মা। ডাক্তারদের মতো উঁচু মানের পেশার ব্যক্তিরা এত অসহনশীল আচরণ করলে মানুষ কোথায় যাবে মা! তুমি কি ওপার হতে কাঁদছো মা! তোমার মত এক রাইফাকে মেরেও ক্ষান্ত হচ্ছে না। মনে হয় পুরা দেশের মানুষকে মেরে ফেলতে পারলে ওরা বেশী খুশি হবে। আর সহ্য হয়না। হৃদয়টা ছিড়ে যাচ্ছে। ভুল মানুষেরই হয়। ডাক্তারও মানুষ কিন্তু তারা (কিছু) আজ দানবের ভুমিকা পালন করছে। ভুল স্বীকার করে ক্ষমা না চেয়ে ওল্টা সাধারণ মানুষদের মূর্খ বলছে। চরম অবক্ষয়। পরিচিত, অপরিচিত কোনো ডাক্তারেরই মনে অনুশোচনা দেখিনি। কেউ সাহস করে বলেনি, রাইফা মা আমরাও তোমার অকাল মৃত্যুর বিচার চাই। আমরা যদি দোষী হই অবশ্যই আমাদের শাস্তি পাওয়া উচিৎ। কেউ বলেনি, কেউ বলেনি….!!!উল্টো আজ তারা সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগে ফেলে অরাজকতা সৃষ্টি করছে।মানুষকে জিম্মি করে দাবী আদায়ের কোনো কর্মসূচি চিকিৎসকদের কাছ থেকে কাম্য নয়। এটা সাধারণ মানুষের মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল।
খুব কষ্ট হয় তোমার মৃত্যুর পর কোন ডাক্তার বলেনি যে, আমরাও তো মানুষ, আমাদেরও তো ভুল হতে পারে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আমাদের মধ্যে যারা অপরাধী তাদের উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। কিন্তু তা না করে ওল্টা তোমার বাবার বন্ধুদের মাইর দেবে বলেছে।ওরা কি ভুলে গেছে, ওদের শপথ বাক্য…! চিকিৎসা পাওয়া সংবিধানের মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত, এটা ব্যাহত হলে আইন অনুযায়ী আরো কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে সেইটা কি এই জ্ঞানপাপীরা ভুলে গেছে!মানুষ মাত্র ভুল করে,
মা। তোমার চিকিৎসক ঐ ডাক্তারগুলোও মানুষ তাই ওদেরও ভুল হয়েছে। পারলে তুমি তাদের ক্ষমা করে দিও মা। কিন্তু ভুল চিকিৎসা ও অবহেলার কারণে এই সুন্দর পৃথিবীতে তোমাকে যারা থাকতে দিলো না তাদের কৃতকর্মের দায়ভার বা অভিসাপ অন্য ভালো চিকিৎসকদের ওপর যেন না বর্তায়। শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে গিয়ে কোনো অসহায় যেন বলির পাঠা না হয়!তাই আমরা চাই ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু বরণকারী রাইফার মৃত্যুর জন্য চিহ্নিত অপরাধীদেরই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।কোনো নিরপরাধ যেন এতে বলির পাঠা না হয়,তাতে শুধু রাইফারই আত্মা কষ্ট পাবে।
______________________________
কলাম লেখক: মাহবুবা সুলতানা শিউলি
সদস্য, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ
কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।
ইমেইল : mahbubasheuly82@gmail.com

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2024
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!