আলীকদমে বন বিভাগের জোত পারমিট দিয়ে সরকারী বাগানের কাঠ পাচার


প্রকাশের সময় :৭ নভেম্বর, ২০১৭ ৭:২০ : অপরাহ্ণ 947 Views
SAMSUNG CAMERA PICTURES

SAMSUNG CAMERA PICTURES
মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি:-লামা বন বিভাগের অধীনে ‘ফ্রি লাইসেন্সের চলাচল পাশ’ দিয়ে আলীকদমের মাতামুহুরী সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও তৈন রেঞ্জের বিভিন্ন মৌজার সরকারী কাঠ পাচার হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে মাতামুহুরী সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও তৈন রেঞ্জের সরকারী বাগানের লক্ষাধিক ঘনফুট মূল্যবান প্রজাতির কাঠ পাচারের জন্য রিজার্ভ পাশর্^বর্তী ডিপোতে মজুদ করা হয়েছে।সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ৩ কিলোমিটারের মধ্যে ডিপো করার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন,বন বিভাগের চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক মো.জগলুল হোসেন।
সূত্রে জানা গেছে,বন বিভাগ অনুমোদিত ১৯টি ডিপোতে ব্যক্তি মালিকানাধীন জোত পারমিটের ডি ফরম ব্যবহার করে সরকারী বাগান হতে মূল্যবান প্রজাতির মাদার ট্রি, সেগুন,চাপালিশ,গর্জন,চাম্পাফুল,গুটগুটিয়াসহ প্রাকৃতিক বাগানের বনজ সম্পদ মজুদ দেখিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচারের জন্য চলাচল পাশ ইস্যু করার অভিযোগ পরিবেশ সচেতন মহলের।তৈন ও মাতামুহুরী রেঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফরেষ্ট রেঞ্জার খন্দকার শামসুল হুদা জানান, জনবল সংকটের কারণে বাগান পাহারা দেওয়া কষ্টকর হয়ে দাড়িয়েছে।লামা বন বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে তৈন রেঞ্জের তৈন,চৈক্ষ্যং,তৈনফা,মাংগু,সাইম্প্রা মৌজায় ব্যক্তিমালিকানাধীন জোত পারমিটের অনুবলে ৬০ হাজারের অধিক ঘনফুট কাঠের ফ্রি লাইসেন্স প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।কাঠ ব্যবসায়ীগণ কাঠ সংগ্রহ করে তৈন রেঞ্জের পান বাজারে ১৭টি,চিনাইরির দোকানে ১টি ও চৈক্ষ্যং এর ১টি ডিপোতে সরকারী ডি ফরম মূলে মজুদ দেখিয়ে চলাচল পাশ সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে কাঠ পরিবহন করেন।নবায়ন ছাড়াও তৈন রেঞ্জে আরো ৫টি বন বিভাগ অনুমোদিত কাঠের ডিপো রয়েছে।এ সকল জোত পারমিট হতে সরকার কোন ধরণের রাজস্ব পায় না।মাংক্রাত ¤্রাে নামক জনৈক বাগান মালিক জানান,ব্যক্তিমালিকানাধীন বাগানের কাঠ পরিবহনের ও বাজারজাতকরণে সরকার কোন ধরণের রাজস্ব পায় না। তবে ব্যক্তি মালিকানাধীন বাগানের কাঠ আহরণ,কর্তন, চিড়াই ও বাজারজাতকরণে প্রশাসন ও বন বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদের প্রতি ঘনফুপ কাঠে ৮০ টাকার অধিক উৎকোচ প্রদান করতে হয়।সে হিসাবে জোত পারমিটের চলাচল পাশ ইস্যু করতে প্রতি বছর বন বিভাগে লক্ষ লক্ষ টাকা অবৈধ লেনদেন হয়।স্থানীয় পরিবেশবাদী সচেতন মহল জানিয়েছেন,তৈন রেঞ্জের জোত পারমিট দিয়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সরকারী বাগানের কাঠ পাচার করা হয়।জোত পারমিটের চলাচল পাশ দিয়ে কাঠ পাচারের কারণে বাংলাদেশের সর্ব বৃহত্তম মাতামুহুরী রিজার্ভ বিরান ভূমিতে পরিণত হয়েছে। তৈন রেঞ্জের ৫ হাজার একর সরকারী বনভূমি হুমকির মুখে।এই রেঞ্জের সরকারী বাগানের অধিকাংশ মূল্যবান কাঠ পাচার হয়ে গেছে।১লক্ষ ২ হাজার ৮৫৪ একর আয়তনের বাংলাদেশের বৃহত্তম রিজার্ভ মাতামুহুরী রিজার্ভ এর মধ্যে মূল্যবান কাঠ এখন নেই বললেই চলে। দিনরাত মাতামুহুরী নদী পথে আবার জোত পারমিটের চলাচল পাশ দিয়ে পাচার হচ্ছে। সরকার মাতামুহুরী রিজার্ভ থেকে শত শত কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছে। রিজার্ভের ও সরকারী বাগানে অবশিষ্ট বাগানের কাঠ বর্তমানে জোত পারমিট দিয়ে পাচার অব্যাহত রয়েছে। বন অধিদপ্তর প্রাকৃতিক বনজ সম্পদ রক্ষায় সাইম্প্রা মৌজার জোত পারমিট ইস্যু বন্ধ রাখলেও কাঠ আহরণ বন্ধ হয় নি। তৈন রেঞ্জের ও মাতামুহুরী রিজার্ভে শত শত শ্রমিক দিনরাত অবৈধভাবে কাঠ আহরণ করছে।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, লোকবল কম থাকায় সরকারী বাগান শতভাগ সংরক্ষন সম্ভব হচ্ছেনা। রিজার্ভের কাঠ অবৈধ পাচাররোধে আমরা সতর্ক আছি।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!