শিরোনাম: চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ ত্বরান্বিত করতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উপলক্ষে মোবাইল কোর্ট বান্দরবানে আলেম সমাজের সংবাদ সম্মেলন বর্ণাঢ্য আয়োজনে বান্দরবানে উদযাপিত হলো জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস জেলা প্রশাসক মেধাবৃত্তি,বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ গড়তে সেনা জোনের উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ও জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি বান্দরবানে জামায়াতে ইসলামীর বিশাল কর্মী ও সুধী সমাবেশে দুর্গম পাহাড়ে সেনাবাহিনীর মানবিক সহায়তাঃ সুস্থ হয়ে ফিরছে ১১ বছরের জিংক থান ময় বম

লামায় সাইবাও থারবা প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ম্রো শিশুদের জন্য শিক্ষার আলো


প্রকাশের সময় :৭ জুন, ২০১৭ ৭:২২ : অপরাহ্ণ 775 Views

জয় মার্মা,বান্দরবান প্রতিনিধিঃ-বান্দরবান লামায় ২নং সদর ইউনিয়নে ৭নং ওয়ার্ডে মেনপং কারবারী পাড়ায়। বনবনানী পরিবেষ্টিত অসংখ্য বন্য পশুপাখির বিচিত্র ডাকে মুখরিত এই ইউনিয়নের নতুন স্কুলটি। যার নাম রাখা হয়েছে সাইবাও থারবা প্রাথমিক বিদ্যালয়।২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে ৪টি পাড়ার কিছু সচেতন মানুষ ও কিছু সচেতন শিক্ষার্থী প্রত্যক্ষ করেন,এলাকায় অরণ্যাচারী সুবিধাবঞ্চিত ও পিছিয়ে পড়া ম্রো আদিবাসী সন্তানদের দুর্বিসহ জীবনযাপনের অমানবিক করুন চিত্র।তারা বুঝতে পারলেন,একমাত্র শিক্ষার অভাবেই আমাদের শিশুরা এই পশ্চাৎপদতা।তাদের আধুক চিন্তাচেতনায় উজ্জীবিত করতে হলে প্রয়োজন শিক্ষার পাদপ্রদীপ নিয়ে আসা।এর আলোকে ছনের ছাউনি আর বাঁশের ভেড়ায় প্রতিষ্ঠিত হয় স্কুলটি। তখন থেকেই প্রত্যন্ত ও দুর্গম পাহাড়ে ৪টি ম্রো পাড়ায় ভাঁজে-ভাঁজে যেন বেজে উঠে অন্য আরেক রোমাঞ্চকর জেগে উঠার উচ্চসিত শাশ্বত রাগীনির আমোগ সুর-মুর্ছনা।পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর ছেলে-মেয়েরা স্বপ্ন দেখতে শুরু করে শিক্ষার আলোতে নিজেকে আলোকিত করার।সকালে ঘন্টার আওয়াজ,৫-৬ বছরের শিশুদের কল-কোলহ,জাতীয় সংগীতের ধ্বনি ও অ তে অজগর, আ তে আম,ক তে কলম,শিশুদের ধ্বনিতে ঘুম ভেঙে যায় অনেকের।এখানে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম পায়ে হাঁটা।উপজেলায় সদর হতে উচু নিচু পাহাড় বেয়ে সে স্কুলে পৌছতে সময় লাগে ৩০-৪০মিনিট।বছর থেকে বছর ধরে এ এলাকায় ৪টি ম্রো পাড়ায় শিশুরা মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত।ছিলো না শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থা,তবে আগের তুলনায় সেই দৃশ্য অনেকটা কমেছে। প্রতিটি শিশু এখন শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে সে ছোট ছনের ছাউনি আর বাঁশের ভেরার স্কুলেই।স্কুলটি কে দূর থেকে দেখলে মনে হবে কোন এক পশ্চাৎপদের জুমের ঘর। কিন্তু আপনার আমার মনে করা সে জুম ঘরটি ভিতরে শিক্ষা গ্রহণ করছে ৪টি গ্রামের কোমলমতি ম্রো শিশুরা। বাঁশের ভেড়ার ফাঁকে ফাঁকে রয়েছে ছোট ছোট ফাঁক। যার মাধ্যমে ঘরটিতে প্রবেশ করছে আলো।এলাকার সচেতন শিক্ষার্থী রুইতন ম্রো জানিয়েছেন,সাইবাও থারবা প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত না হওয়ার আগে ঐ এলাকায় লেখাপড়া কোন সুযোগ ছিলোনা।আমাদের ম্রো সমাজে মানুষরা তেমন স্বালম্বীনও নয়। যার জন্য মন চাইলেও বাইরে আলোতে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছে না। স্কুলটিতে প্রাক শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নিজস্ব মাতৃভাষায়ও পাঠদান করানো হচ্ছে। বর্তমানে স্কুলে একজন শিক্ষক ও ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।তবে স্কুলে না আসার সংখ্যা তা অনেক বেশি।ছেলে-মেয়েরা কেন স্কুলে আসছে না?এমন প্রশ্ন প্রতিবেদক জানতে চাইলে রুইতন ম্রো জানান,আমাদের স্কুলে পর্যাপ্ত পরিমাণে বই নেই।যা আছে তাও পাশ্ববর্তী কোন এক প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে সংগ্রহিত পুরাতন বই।চেয়ার-টেবিল ও বেঞ্চ নেই বললে চলে,যা আছে তাও পাহাড়ে গাছ-পালার ডাল কেঁটে বানানো।তারপরও অনেক কষ্ট করে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পাঠদান করানো হচ্ছে।আমার মনে হয় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস হতে বইয়ের সংকট মিটানো গেলেই ও স্থানীয় প্রশাসন হতে বিদ্যালয় ভবন টিন সেট নির্মাণ করা গেলেই স্কুলগামী হবে ছেলে-মেয়েদেরা।রমজাম মাসে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও সাইবাও থারবা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলছে পাঠদান কার্যক্রম।ম্রোদের উৎসবের দিনে বিদ্যালয় বন্ধ থাকেই।কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বই,বিদ্যালয়টি টিন সেট ভবন নির্মাণ,পর্যাপ্ত পরিমাণে আসবাবপত্র সরবরাহ এবং অন্যান্য সকল সমস্যা নিরসনের জন্য বান্দরবান জেলা পরিষদ,জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দফতর,উপজেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নে ইউপি চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানিয়েছে ৪টি ম্রো পাড়ার সহজ-সরল মানুষ ও সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!