লামায় তথ্য গোপন করে বাল্যবিবাহের হিড়িক,জন্মনিবন্ধনে মেয়ের বয়স ১৪,নোটারী পাবলিকের হলফনামায় ১৮


প্রকাশের সময় :১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ১:১৭ : পূর্বাহ্ণ 2280 Views

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধিঃ-বান্দরবানের লামা উপজেলায় তথ্য গোপন করে ৬ষ্ট শ্রেণীর এক ছাত্রীর বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে। মেয়েটি উপজেলার মেওলারচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী।জন্মনিবন্ধনে তার বয়স ১৪ বছর হলেও নোটারী পাবলিক হলফনামায় ১৮ বছর দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।মেয়েটির বাড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড বৈক্ষমঝিরি গ্রামে।স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়,মেয়েটি ২০১৭ সালে ভাল ফলাফল করে ৫ম শ্রেণী হতে ৬ষ্ট শ্রেণীতে উত্তির্ণ হয়।সে লেখাপড়ায় ভাল ছিল।গত ৭ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার এলাকার কাউকে না জানিয়ে গোপনে মেয়েটির সাথে পাশর্^বর্তী জনৈক মতিন মিয়ার ছেলে সমিরের সাথে বিবাহ দেয়া হয়।ছেলেটিও অপ্রাপ্ত বয়স্ক বলে জানায় স্থানীয়রা।বিবাহ হলফনামায় ছেলের বয়স ২৩ বছর দেখানো হলেও তাকে জন্মনিবন্ধন দেখাতে বললে সে দেখাতে রাজি হয়নি।পাশর্^বর্তী জনৈক আব্দুর রাজ্জাক বলেন,ছেলের বয়স এখনো ১৭ বছর পূর্ণ হয়নি।ছেলের বড় ভাই এখনো বিবাহ করেনি।নাম প্রকাশ না করা সত্ত্বে স্থানীয় বাসিন্দা কয়েকজন বলেন, আমাদের সমাজের মৌলভী এই বিবাহ পড়ায়নি।ছেলে ও মেয়ের পরিবার কক্সবাজারের চকরিয়ায় নোটারী পাবলিকের হলফনামা করে বিবাহ সম্পন্ন করে।হলফনামা পড়ে জানা যায়,গত ১৩ এপ্রিল ২০১৫ইং বিবাহ হয়েছে। অথচ তখন মেয়েটি ৪র্থ শ্রেণীতে পড়ত।হলফনামাটিতে তথ্য গোপন ও মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।মেয়ের বাবা জানায়,ছেলে মেয়ে নিজেরা বিবাহ করেছে।আমরা গত বৃহস্পতিবার পারিবারিক অনুষ্ঠান করে মেয়েকে তুলে দিয়েছি।বর্তমানে মেয়ে তার স্বামীর বাড়িতে রয়েছে।মেওলারচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামাল উদ্দিন বলেন, মেয়েটি ৬ষ্ট শ্রেণীতে পড়ে। জন্মনিবন্ধন মতে তার বয়স ১৪ বছর।গত কয়েকদিন যাবৎ সে স্কুলে আসেনি। বিবাহের বিষয়ে আমাদের কেউ বলেনি।স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুর রহমান মনু বলেন,এই বিবাহ সম্পর্কে আমরা কেউ জানিনা।গোপনে ছেলে ও মেয়ের পরিবার বিবাহ সম্পন্ন করেছে।সমাজের কাউকে জানানো হয়নি।এবিষয়ে নিকাহ্ রেজিষ্টার লামা পৌরসভা কাজী মো.ইলিয়াছ বলেন,নোটারী পাবলিকের বিবাহ হলফনামা আইনগত ভিত্তি নেই।এইটা শুধুমাত্র একটি অঙ্গিকার।বৈধ স্বামী স্ত্রী দাবি করতে হলে অবশ্যই নিকাহ্ রেজিষ্ট্রি করতে হবে।বাল্যবিবাহ সম্পর্কে সদর ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন বলেন,মেয়েদের শিক্ষিত করার পিছনে সবচেয়ে বড় বাধা বাল্য বিবাহ।আইনের সঠিক প্রয়োগ করে বাল্যবিবাহ বন্ধ করা অতীব প্রয়োজন।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!