এই মাত্র পাওয়া :

ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের হোলিখেলায় মত্ত শান্তিচূক্তি বিরোধী উপজাতি সশস্ত্র সংগঠণ ইউপিডিএফ (প্রসীত) গ্রুপ


প্রকাশের সময় :৫ মে, ২০১৮ ২:১৩ : পূর্বাহ্ণ 1235 Views

বান্দরবান অফিসঃ-১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর তৎকালীন সরকার এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) এর মধ্যে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘ ২১ বছরের সংঘাত এবং রক্তক্ষরণের অবসান ঘটে।শান্তিচুক্তির পর পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিপূর্ণ স্বাভাবিক পরিবেশ আশা করা হলেও পিসিজেএসএস’র (বর্তমানে জেএসএস সন্তু গ্রুপ নামে পরিচিত) কতিপয় সদস্য প্রকাশ্যে শান্তিচুক্তির বিরোধীতা করে ১৯৯৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) এর প্রাক্তন সভাপতি প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) নামে নতুন একটি আঞ্চলিক দলের আত্নপ্রকাশ ঘটায়।তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে পূর্ণ স্বায়ত্বশাসন দাবী করে এবং দাবী আদায়ের লক্ষ্যে সশস্ত্র আন্দোলনসহ সন্ত্রাসের পথ বেছে নেয়।জন্মলগ্ন থেকেই ইউপিডিএফ তাদের শক্তি প্রদর্শন ও প্রভাব বিস্তার করার প্রচেষ্টায় নিয়োজিত থাকে।এরই ধারাবাহিকতায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইউপিডিএফ (প্রসীত গ্রুপ) এর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা প্রতিপক্ষ অন্যান্য আঞ্চলিক দলসমূহের (জেএসএস সন্তু গ্রুপ,জেএসএস এমএন লারমা গ্রুপ ও ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক গ্রুপ) উপর প্রতিশোধমূলক কর্মকান্ড চালাতে থাকে।তারা অন্য দলের সদস্যদেরকে অপহরণের মাধ্যমে মুক্তিপণ দাবী/আদায় অথবা হত্যা,গুম ইত্যাদি জিঘাংসামূলক কার্যক্রম শুরু করে।এমনকি তারা ইউপিডিএফ (প্রসীত গ্রুপ) এর কাছে নতি স্বীকার না করলে কিংবা ইউপিডিএফ (প্রসীত গ্রুপ) এ যোগদান না করে অন্য দল করলে তাকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকিও প্রদান করে থাকে।সশস্ত্র সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়ে শান্তিচূক্তি বিরোধী ইউপিডিএফ (প্রসীত গ্রুপ) নামক এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তাদের দল পরিচালনার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামের নিরীহ যুবসমাজকে অর্থের বিনিময়ে অথবা প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে তাদের সশস্ত্র দলে যোগদান করতে বাধ্য করে থাকে।সেই সাথে তারা সামরিক বাহিনীর আদলে তাদের সশস্ত্র সংগঠণ গড়ে তুলে এইসব যুব সমাজকে প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকে।এভাবে তারা সম্ভাবনাময় যুব সমাজকে স্বাভাবিক জীবন যাপনে বাঁধা দিয়ে তাদেরকে ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে ঠেলে দিচ্ছে।এমনকি ইউপিডিএফ (প্রসীত গ্রুপ) এর সন্ত্রাসীরা পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্যও গোপনে প্রস্তুতি নিচ্ছে।এ লক্ষ্যে তারা সশস্ত্র বাহিনীর আদলে সেনা,নৌ, বিমান,পুলিশ,আনসার ও বিজিবির ন্যায় সামরিক বাহিনী গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।ইউপিডিএফ (প্রসীত গ্রুপ) যে সামরিক শাখা পরিচালনা করে তা আরো স্পষ্ট করতে নীচের ছবিটি ভালমত লক্ষ্য করুন।গত ১৩ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে খাগড়াছড়ি জেলাতে ইউপিডিএফ (প্রসীত গ্রুপ) এর সামরিক শাখার প্রধান উজ্জল স্মৃতি চাকমা আগ্নেয়াস্ত্রসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক হয়।ইউপিডিএফ (প্রসীত গ্রুপ) নামক এই সশস্ত্র সংগঠণ সশস্ত্র আন্দোলনের পাশাপাশি সরাসরি দেশ ও স্বাধীনতা বিরোধী কার্যক্রমও পরিচালনা করে আসছে।তাদের জন্মই হয়েছিলো পার্বত্য চট্টগ্রামে পূর্ণ স্বায়ত্ব শাসন দাবী আদায়ের লক্ষ্যে।তারা তাদের সেই দাবীকে আরেকমাত্রা উপরে তুলে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে “স্বাধীন জুম্মল্যান্ড” নামে আলাদা দেশ গঠনের নীল নকশায় মেতে উঠেছে।এমনকি তারা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় দিবসগুলো অমান্য ও তা বর্জন করে থাকে।বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় দিবসগুলোতে তারা জাতীয় পতাকাকে সম্মান না দেখিয়ে নিজ দলের পতাকা উড়িয়ে তাতে সম্মান দেখায়।প্রিয় পাঠকগণ,নীচের ছবিগুলোর দিকে তাকালে এর সত্যতা পেয়ে যাবেন।বর্তমানে শান্তিচূক্তি বিরোধী এই সশস্ত্র উপজাতি সংগঠণ ইউপিডিএফ (প্রসীত গ্রুপ) পার্বত্য চট্টগ্রামে এক ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞে নেমেছে।তারা রীতিমত বলে কয়ে একের পর এক হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে।গত ২ জানুয়ারী ২০১৮ তারিখে “জুম্ম মুক্তি বাহিনী” নামক এক ফেসবুক আইডি থেকে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক দলের প্রধান তপন জ্যোতি চাকমা ওরফে বর্মাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়।যার প্রতিফলনে গত ৪ মে তারিখে ইউপিডিএফ (প্রসীত গ্রুপ) গুলি করে তপন জ্যোতি চাকমা ওরফে বর্মাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।এমনকি তারা টার্গেট করে রাঙামাটি জেলার নানিয়াচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও খাগড়াছড়ি জেলা আইনজীবি সমিতির সদস্য এডভোকেট শক্তিমান চাকমাকেও গত ৩ মে তারিখে হত্যা করে।তবে ইউপিডিএফ (প্রসীত গ্রুপ) তাদের এই কিলিং মিশন এখানেই শেষ না করে বরং প্রকাশ্যে তাদের পরবর্তী টার্গেটের নাম সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ঘোষনা দিয়েছে।নীচের ছবিতে তা দৃশ্যমান।তাদের ঘোষণামতে পরবর্তী কিলিং টার্গেট তাতিন্দ্র লাল পেলে এবং সুদর্শন চাকমা।শান্তির পাহাড়ে অশান্তি সৃষ্টিকারী এবং রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ডে নিয়োজিত উপজাতি সশস্ত্র সংগঠণ ইউপিডিএফ (প্রসীত গ্রুপ) এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেবার জন্য বাংলাদেশ সরকার এবং প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।জাতি, ধর্ম,বর্ণ নির্বিশেষে আমরা শান্তিপ্রিয় সাধারণ পাহাড়ি জনগণ পাহাড়ে শান্তি চাই।সবুজে ঘেরা নির্মল পাহাড়ে আমরা লাশের গন্ধ চাই না।আমরা শান্তির পাহাড়ে বুক ভরে শান্তির সুবাতাস নিতে চাই।লিখেছেনঃ-(সন্তুষ বড়ুয়া,রাঙ্গামাটি থেকে)।

 

 

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
November 2025
MTWTFSS
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
আলোচিত খবর