এই মাত্র পাওয়া :

জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী কেকের অকাল মৃত্যুঃ মাথায়-মুখে আঘাতের চিহ্ন,মৃত্যু নিয়ে রহস্য!


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :২ জুন, ২০২২ ১২:৫৪ : পূর্বাহ্ণ 560 Views

‘হাম রাহে না রাহে কাল, কাল ইয়াঁদ আয়েঙ্গে ইয়ে পাল…আমি কাল থাকব,হয়তো বা থাকব না, কাল এই মুহূর্তটা মনে আসবে…।’ —আজ সত্যি কেকে নেই। কিন্তু তাঁকে ঘিরে অজস্র সুন্দর মুহূর্ত সংগীতপ্রেমীদের স্মৃতিতে আমৃত্যু জীবন্ত হয়ে থাকবে।মঙ্গলবার (৩১ মে) রাতে কলকাতার নজরুল মঞ্চের আনাচকানাচে কেকের গাওয়া এই গান শোনা যাচ্ছিল।

মঙ্গলবার বলিউডের জনপ্রিয় গায়ক কৃষ্ণ কুমার কুন্নাথ ওরফে কেকের অকাল মৃত্যুতে সারা বিনোদন দুনিয়ায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।নজরুল মঞ্চে গান গাইতে গাইতে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। এরপর তাঁকে তড়িঘড়ি মধ্য কলকাতার এক হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। এই হোটেলেই উঠেছিলেন তিনি। হোটেলে যাওয়ার পর কেকের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। তারপর তাঁকে হোটেল থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। প্রাথমিকভাবে কেকে হৃদরোগে মারা গেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের পরই এই গায়কের মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।

তবে কেকের মৃত্যুকে ঘিরে কিছু প্রশ্ন উঠেছে। ৫৩ বছর বয়সী এই গায়ক একদম সুস্থ এবং ফিট ছিলেন। ধূমপান এবং মদ্যপান থেকে তিনি দূরে থাকতেন। শৃঙ্খল জীবনযাপনে বিশ্বাসী ছিলেন কেকে। তাহলে এমন কী ঘটল যে মুহূর্তের মধ্যে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েলেন এই গায়ক? তাঁর মাথায় এবং মুখে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। তাই কেকের মৃত্যু স্বাভাবিক নয় বলে অনেকের ধারণা। জানা গেছে, কলকাতার নিউমার্কেট থানায় কেকের স্বাভাবিক মৃত্যু নয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ হোটেলের কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে বলে জানা গেছে।

কলকাতার গুরুদাস কলেজের বার্ষিক অনুষ্ঠানে গান গাইতে গিয়েছিলেন কেকে। জানা গেছে, দুই দিন ধরে তিনি কলকাতাতে ছিলেন। এর আগে পুনের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন এই জনপ্রিয় গায়ক। গতকাল সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ মঞ্চে উঠেছিলেন কেকে। প্রায় নয়টা পর্যন্ত তিনি মঞ্চে ছিলেন বলে খবর। শুরু থেকে একের পর এক তাঁর গাওয়া হিট গান গেয়ে আসর মাতিয়ে রেখেছিলেন তিনি। কেউ কল্পনাও করেনি যে কিছু সময় পর সংগীতদুনিয়ায় ঘন অন্ধকার নেমে আসবে। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে এসে অতিরিক্ত ঘামতে শুরু করেন কেকে। বারবার তোয়ালে দিয়ে মাথা এবং মুখ মুছছিলেন তিনি। আর একটু একটু করে পানি পান করছিলেন।

এ রাতে নজরুল মঞ্চ ভিড়ে ঠাসা ছিল। তার ওপর ছিল অসহনীয় গরম। অনেকের অভিযোগ যে নজরুল মঞ্চের শীতাতপ ঠিকমতো কাজ করছিল না। আর অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে গুমোট পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। তাই অনুষ্ঠানের আয়োজকদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়েছে। কেকে একসময় ফ্ল্যাশ লাইট বন্ধ করতে বলেন। তাঁকে নজরুল মঞ্চ থেকে সোজা হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। হোটেলে যাওয়ার পর কেকে বলেন যে বুকটা চিনচিন করছে। তাই তাঁকে সিএমআরআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

কেকের অকাল প্রয়াণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, মমতা বন্দোপাধ্যায় থেকে সংগীত এবং চলচ্চিত্রজগতের তারকারা শোক জ্ঞাপন করেছেন।

টুইটারে প্রধানমন্ত্রীর শোকবার্তায় লিখেছেন, ‘জনপ্রিয় গায়ক কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকের অকালমৃত্যুর খবরে মর্মাহত। সব প্রজন্মের শ্রোতাদের আবেগ-অনুভূতি ছুঁয়ে যেত তাঁর গান। শিল্পীর গানেই তাঁকে চিরকাল মনে রাখব আমরা। তাঁর পরিবার ও অনুরাগীদের সমবেদনা জানাই। ওম শান্তি।’

জনপ্রিয় এই গায়কের মৃত্যুর খবর পেয়ে পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন। কেকে সপরিবার মুম্বাইয়ের আন্ধেরিতে থাকতেন। গতকাল রাতেই তাঁর মৃত্যুর খবর পরিবারের কাছে পৌঁছে। আজ সকালে প্রথম বিমানে করে কেকের স্ত্রী আর ছেলে কলকাতায় এসে পৌঁছেছেন। ময়নাতদন্তের পর কেকের মরদেহ তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। তিনি রেখে গেছেন ছেলে নকুল, মেয়ে তামারা আর স্ত্রী জ্যোতিকে। খবর প্রথম আলো

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
November 2025
MTWTFSS
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
আলোচিত খবর