শান্তি ও সম্প্রীতির জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে এক সুরে কথা বলতে হবেঃ-(পার্বত্য মন্ত্রী)


বান্দরবান অফিস প্রকাশের সময় :৫ জুলাই, ২০১৯ ৬:৪৪ : অপরাহ্ণ 738 Views

বান্দরবান পার্বত্য জেলার বিভিন্ন উপজেলা অন্তর্গত ইউনিয়নের নারীদের আর্থ সামাজিক অবস্থা ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে বিভিন্ন ফলজ চারা,গবাদী পশু,মৎস্য পোনা,বাদ্য যন্ত্র,ক্রীড়া সামগ্রী ও কৃষি উপকরন বিতরণ করা হয়েছে।আজ শুক্রবার (৫ জুলাই) সকাল ১০টায় বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চত্বরে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে এসব উন্নয়ন সামগ্রী ও কৃষি উপকরণ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর হাতে তুলে দেয়া হয়।এসময় ক্রীড়া সামগ্রী ও কৃষি উপকরণ বিতরণ উপলক্ষে বান্দরবান জেলা পরিষদের উদ্যোগে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা এর সভাপতিত্বে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এম,পি।আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুদত্ত চাকমা,বান্দরবানের জেলা প্রশাসক মো:দাউদুল ইসলাম,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো:কামরুজ্জামান,পৌর মেয়র মোঃইসলাম বেবী,বান্দরবান জেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এ.টি.এম.কাউসার হোসেন, ইউএনডিপি’র কেন্দ্রীয় প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রশেঞ্জিত চাকমা।আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এম,পি বলেন,যারা সন্ত্রাসী-সন্ত্রাস করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে তাদের কোনও জাত নেই,ধর্ম নেই,বর্ণও নেই।তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, “বর্তমান সরকার শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে অঙ্গীকারাবদ্ধ,শান্তি চুক্তির পুর্ন বাস্তবায়ন চলমান বিষয়,চুক্তি বাস্তবায়নে দেরী হচ্ছে বলে দুই-চারটা লোক খুন করলেই কি শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন হয়ে যাবে”? শান্তি চুক্তি হয়েছে,চুক্তি বাস্তবায়নের কাজও চলছে,গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,জননেত্রী শেখ হাসিনা পাহাড়ে শান্তির সুবাতাস উপহার দেয়ার জন্যই শান্তি চুক্তি করেছিলেন।তিনি আরো বলেন,পাহাড়ী কি আর বাঙালি কি এটা আমি জানিনা,আমি শুধু এটাই জানি পাহাড়ী-বাঙালির সকল জনগোষ্ঠীকে সহাবস্থান করতে হবে।শান্তি ও সম্প্রীতির জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে এক সুরে কথা বলতে হবে।পাহাড়ে যারা সন্ত্রাস করছে-চাঁদাবাজি করছে তাদের প্রতিহত করতে হবে,এসব সন্ত্রাসী আর চাঁদাবাজকে প্রতিহত করতে হলে পাহাড়ী-বাঙালি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।পাহাড়ে এসব দুষ্ট লোকদের প্রয়োজন নাই।আগামীতে বৃহৎ এই পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসরত জনগণের জানমাল রক্ষায় সরকারের যা-যা করা প্রয়োজন তা-তা করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রভাবশালী এই মন্ত্রী।এসময় পার্বত্য মন্ত্রী আরও বলেন,আপনাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে গবাদি পশু,পোলট্রি সামগ্রী,কমলা চারা,বাঁশের চারা,মিশ্র ফলের চারা,সেলাই মেশিন,ঢেউ টিন,পাওয়ার টিলার,পাম্প মেশিন থেকে শুরু করে যা যা দেয়ার দরকার বর্তমান সরকার তথা বান্দরবান জেলা পরিষদ ও ইউএনডিপি যৌথভাবে তা দিচ্ছে এবং আগামীতেও এটা অব্যাহত থাকবে।ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য নিজে যদি উদ্যেগী না হন,তাহলে ভাগ্য উন্নয়ন কিভাবে হবে।আজকে কৃষি সরঞ্জাম দিলাম,এক-দুই মাস পর নষ্ট হয়ে গেলো তাহলে ভাগ্য পরিবর্তন হবে না।এসব কৃষি যন্ত্রপাতির যত্ন নিতে হতে,পরিশ্রম করতে হবে।তখনই ভাগ্য পরিবর্তন সম্ভব।এসময় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য কাজল কান্তি দাশ, বান্দরবান সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ.কে.এম জাহাঙ্গীর,জেলা পরিষদ সদস্য লক্ষীপদ দাশ,মোজাম্মেল হক বাহাদুর,জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ শহিদুল ইসলাম,জেলা পরিষদ সদস্য জুয়েল বম,সিয়ং ম্রো,ফিলিপ ত্রিপুরা,ম্রাসা খেয়াং,ম‌হিলা সদস্য তিং‌ তিং ম্যা মারমা,ম‌হিলা সদস্য ফা‌তেমা ফারুল প্রমুখ।এছাড়াও বান্দরবা‌নের ৭টি উপ‌জেলার বিভিন্ন ইউ‌নিয়‌নের দূর্গম গ্রাম অঞ্চলের উপকারভূ‌গী কৃষক-কৃষানীরা উপ‌স্থিত ছি‌লেন।আলোচনা সভা শেষে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এম,পি ইউনিয়ন পর্যায়ে নারীদের আর্থসামাজিক ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কৃষি উপকরণ বিতরণ করেন।এসময় বান্দরবানের বি‌ভিন্ন উপ‌জেলার ইউ‌নিয়ন পর্যা‌য়ের ৩ শত ৪২ জন কৃষক‌দের মা‌ঝে ৪০ হাজার ৯ শত ৪০টি আম্র পালি সহ বি‌ভিন্ন মিশ্র ফলজ চারা,না‌রি‌কেল,লিচু চায়না-৩,আ‌পেল কুল,তেজ পাতা,দারু‌চি‌নি,লেবু কল‌ম্বো,লটকন,জলপাই, আমলকী ও আমড়ার চারা বিতরণ করা হয়।অন্য‌ দি‌কে বান্দরবান সদর উপ‌জেলার রাজ‌বিলা, আ‌লীকদম উপ‌জেলা,রোয়াংছ‌ড়ি ও রুমা উপ‌জেলার ১ শত ৩০টি পাড়ায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে ৯১টি পাওয়ার টিলার ও ৯১‌টি পাম্প মে‌শিন তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বীর বাহাদুর উশৈসিং এম,পি।এছাড়াও এসব এলাকার ৬০ জন মৎস‌জীবীর মা‌ঝে ৩০০ কে‌জি বি‌ভিন্ন প্রজা‌তির মা‌ছের পোনা বিতরণসহ বান্দরবা‌ন জেলার ১৫টি শিক্ষা প্র‌তিষ্ঠান ও ১৫টি সাংস্কৃ‌তিক ও ক্রীড়া সংগঠন‌কে বি‌ভিন্ন ধর‌নের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সামগ্রী তুলে দেয়া হয়।স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠান প্রধান ও প্রতিনিধিরা এসব সামগ্রী গ্রহণ করেন।বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ ও ইউএনডিপি বাংলাদেশের যৌথ উদ্দ্যোগে এসব কৃষি উপকরণ ও ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
April 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!