বান্দরবানের বন্যা,আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে বাড়ছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট


সিএইচটি টাইমস অনলাইন প্রকাশের সময় :১৪ জুলাই, ২০১৯ ১০:৫১ : অপরাহ্ণ 816 Views

বান্দরবানে প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।জেলা শহরের দশটি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৩০০০ বন্যার্ত পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।এসব আশ্রয় কেন্দ্রে জায়গার সঙ্কুলান হচ্ছে না।এদিকে সাংগু-মাতামুহুরী ও বাঁকখালী নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় টানা ছয় থেকে সাত দিন ধরে বন্ধ রয়েছে বান্দরবানের সাথে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ।অন্যদিকে পাহাড় ধ্বসের কারণে সড়কের উপর মাটি পড়ে থাকায় জেলার অভ্যন্তরীন সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।ফলে জরুরী প্রয়োজন থাকলেও জনসাধারন জেলা সদরের সাথে যোগাযোগ করতে পারছে না।সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় রাঙ্গামাটি জেলার সাথেও বান্দরবানের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।জেলা শহরের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি এলাকা এখন পানির নিচে।বাস স্টেশন,ইসলামপুর,ওয়াবদা ব্রিজ,আর্মি পাড়া মেম্বার পাড়া,শেরেবাংলা নগর,বনানি সমিল,হাফেজ ঘোনা,বালাঘাটা একাংশ,বড়ুয়া পাড়া সহ বিভিন্ন এলাকায় সাঙ্গু নদীর পানি প্রবেশ করায় এসব এলাকার তিন হাজারেরও বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।বিশেষ প্রয়োজনে যারা যাতায়াত করছে তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা,ভ্যান,রিক্সায় করে ৫ থেকে ৬ গুন বেশি ভাড়া দিয়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পারাপার হচ্ছে।জেলা শহরে বিদ্যুৎ বিভাগের দুটি উপকেন্দ্রে নদীর পানি প্রবেশ করায় গত দুদিন থেকে জেলা শহর ও রুমা,রোয়াংছড়ি,থানচি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে।তবে জেলা শহরের কিছু কিছু জায়গায় নতুন করে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছে বান্দরবান বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ।যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় জেলা শহর ও উপজেলা গুলোতে নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে পর্যাপ্ত খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি না থাকায় দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।যদিও আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে বান্দরবান সেনা রিজিয়ন তথা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী,জেলা ও উপজেলা প্রশাসন,বান্দরবান পৌরসভা,বিভিন্ন ছোটবড় এনজিও সংস্থা এমনকি ব্যাক্তি পর্যায়ের অনেকেই বিশুদ্ধ বন্যা দুর্গত মানুষের মাঝে বিশুদ্ধ পানি,শুকনো ও রান্না করা খাবার বিতরণ করে দুর্ভোগ কমানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে জায়গার সঙ্কুলান না হওয়ায় অনেকেই বিভিন্ন আবাসিক হোটেল ও আত্মীয় স্বজনদের বাড়ীতে আশ্রয় নিয়েছে।কিন্তু আবাসিক হোটেলগুলোতে হোটেল কতৃপক্ষ বোর্ডারদের সাথে যাচ্ছেতাই ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে।২৪ ঘন্টার লম্বা সময়ে ১ ঘন্টা জেনারেটর সার্ভিস দিতেও অস্বীকৃতি জানাচ্ছে হোটেল কতৃপক্ষ।বোর্ডাররা জেনারেটর এর জন্য যখন বাড়তি টাকা পরিশোধ এর কথা বলছে তখন হোটেল ব্যাবস্থাপকরা বোর্ডারদের সাথে চরম খারাপ আচরণ করছে বলে অনেকেই সিএইচটি টাইমস ডটকম এর সংবাদকর্মীদের জানিয়েছে।অপর দিকে জলাবদ্ধতার কারণে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট।তবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পানি বিশুদ্ধ করণ ট্যাবলেট দূর্গতদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে।বান্দরবান সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নোমান হোসেন জানান,হঠাৎ করে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়ে পড়েছে।আমরা আশ্রয় কেন্দ্রের সংখ্যা আরো বাড়িয়েছি এবং আশ্রয় কেন্দ্রে বন্যাদূর্গতদের শুকনা খাবার ও খিচুড়ি বিতরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।দূর্যোগ কালীন পরিস্থিতি মোকাবেলায় সদর উপজেলা প্রশাসন সার্বক্ষনিক তৎপর রয়েছে।অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃশামীম হোসেন জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে সাতটি উপজেলায় ১২৬ টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হলেও দুর্গত মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে আরও ৫ টি সহ সর্বমোট ১৩১টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ইতিমধ্যে ১০০ মেট্রিক টন চাল ও ৭০০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।জেলা প্রশাসনের শীর্ষ এই কর্মকর্তা আরও জানান,ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ইতিমধ্যে সাড়ে ৪শ’ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য ও নগদ সাত লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে।এদিকে প্রবল বর্ষণে বান্দরবানের মন জয় পাড়া এলাকায় শনিবার সন্ধ্যায় পাহাড়ি ঝিরি পার হতে গিয়ে মংশৈ মারমা নামের এক ব্যক্তি খবর স্রোতে ভেসে গেছে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
December 2025
MTWTFSS
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30 
আলোচিত খবর