

“মাসিক স্বাস্থ্য দিবস-২০২৫” উপলক্ষে বান্দরবান সদর উপজেলার কুহালং ইউনিয়নের কুহালং হেডম্যান পাড়ায় আজ এক বর্ণাঢ্য ও সচেতনতামূলক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। “আসুন সবাই মিল গড়ি মাসিক বান্ধব পৃথিবী” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) আয়োজিত অনুষ্ঠানের মূল লক্ষ্য ছিল মাসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি,সামাজিক কুসংস্কার দূর করা এবং নারীদের স্বাস্থ্য অধিকার বিষয়ে আলোচনার একটি উন্মুক্ত পরিসর তৈরি করা।এসময় দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অনন্যা কল্যাণ সংগঠন (AKS) এর নির্বাহী পরিচালক ডনাইপ্রু নেলী।
ওমেন এক্টিভিস্ট ফোরাম,বান্দরবান এর সভাপতি পাইম্রাউ মারমা এর সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে ডনাইপ্রু নেলী বলেন, “মাসিক একটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া।একে ঘিরে লজ্জা ও ভীতি নয় বরং সচেতনতা প্রয়োজন।সবাইকে একত্রে কাজ করতে হবে যেন প্রতিটি নারী সম্মানজনক ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে জীবনযাপন করতে পারে।” তিনি আরো বলেন, মাজে পুরুষ কার্বারী পাশাপাশি নারী পক্ষ হতে একজন কার্বারী প্রয়োজন।এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে কুহালং পাড়ার পাড়া কার্বারী ক্যসুই প্রু মারমা বলেন,“আমাদের সমাজে মাসিক নিয়ে আজও অনেক ভুল ধারণা প্রচলিত রয়েছে।পাড়ায় সচেতনতামূলক এমন আয়োজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” মহিলা কার্বারী পদপ্রার্থী অংমেপ্রু তাঁর বক্তব্যে বলেন, “নারীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান হওয়া মানে একটি সুস্থ সমাজ গঠন করা। স্থানীয় প্রশাসন ও সংগঠনগুলোকে যৌথভাবে এ বিষয়ে কাজ করতে হবে।একেএস এর কর্মসূচী পরিচালক আখ্যইমং মারমা বলেন,“এই ধরনের উদ্যোগ শুধু সচেতনতা বাড়ায় না, বরং নারীদের আত্মবিশ্বাসও গড়ে তোলে।ভবিষ্যতে প্রতিটি পাড়ায় এমন উদ্যোগ ছড়িয়ে দেওয়া দরকার।”
অনুষ্ঠানের সভাপতি পাইম্রাউ মারমা বলেন, “মাসিক নিয়ে কথা বলার জন্য এই প্ল্যাটফর্ম তৈরিই আমাদের বড় অর্জন।আমরা চাই,প্রতিটি নারী নির্ভয়ে কথা বলুক নিজের শরীর ও স্বাস্থ্য নিয়ে।” দিনব্যাপী কর্মসূচিতে ছিল আলোচনা সভা,খেলাধূলা ও পুরস্কার বিতরণী।কুহালং হেডম্যান পাড়ার নারী,কিশোরী ও অভিভাবকরা এই আয়োজনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।
অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন এবং মাসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন-উত্তরের মাধ্যমে সচেতনতা লাভ করেন।এই কর্মসূচি আয়োজন করে ওমেন এক্টিভিস্ট ফোরাম,বান্দরবান।সহযোগিতায় ছিল অনন্যা কল্যাণ সংগঠন (AKS) এবং আর্থিক সহায়তায় ছিলস বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস)।আয়োজকগণ আশা প্রকাশ করেন,এই ধরনের কর্মসূচি নারীর স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিতকরণ এবং মাসিককে ঘিরে সামাজিক ট্যাবু ভাঙতে বড় ভূমিকা রাখবে।