

পার্বত্য চট্টগ্রামের অবহেলিত ও সাংবিধানিক অধিকারবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ের লক্ষ্য নিয়ে গঠিত ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ’ (পিসিএনপি) এর ৬ষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে। রোববার (৭ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টায় বান্দরবানের মুসাফির পার্কস্থ জেলা কার্যালয়ে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করা হয়।
২০১৯ সালের ৫ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষের অধিকার রক্ষায় এই সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল। সেই থেকে প্রতি বছর রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান—এই তিন পার্বত্য জেলায় সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এই দিনটি পালন করে আসছেন।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান কাজী মোঃ মজিবর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন সিএইচটি সম্প্রীতি জোটের আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার থোয়াইচিং মং শাক, মুখপাত্র পাইশিখই মার্মা। প্রধান অতিথি সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে কেক কাটার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন।
প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান কাজী মোঃ মজিবর রহমান। আরো উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান জেলা পিসিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, সহ-সভাপতি আবদুল আলিম মনু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ, সহসাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহজালাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ নুরুল আবছার, পৌর পিসিএনপি’র সভাপতি শামছুল হক সামু, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মনিরুল ইসলাম, সুয়ালক ইউনিয়ন পিসিএনপি’র সভাপতি আবদুল আজিজ, সাধারণ সম্পাদক রফিক উল্লাহ ভূইয়া, জেলা পিসিএনপি’র সদস্য মোঃ কবির হোসেন, কেন্দ্রীয় যুব পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ইবরাহীম, ছাত্র পরিষদের জেলা সহ-সভাপতি মোঃ জমির উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ মেজবাহ উদ্দিন সহ নাগরিক পরিষদ, ছাত্র পরিষদ ও যুব পরিষদের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী মোঃ মজিবর রহমান পার্বত্য চট্টগ্রামের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে দেশি-বিদেশি নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে। পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো সাধারণ মানুষের মনে ত্রাস সৃষ্টি করে এই অঞ্চলে একটি অরাজক পরিস্থিতি কায়েম করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।”
তিনি আরও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে যদি এখনই নির্মূল করা না যায়, তবে আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়বে। পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত সকল জাতিগোষ্ঠীর সমান সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করতে এবং দেশের অখণ্ডতা রক্ষায় আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”
বক্তারা তাদের বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ জন্মলগ্ন থেকেই পাহাড়ের সাধারণ মানুষের ভূমি অধিকার, শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ এবং জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই দিনে তারা পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং সন্ত্রাসমুক্ত শান্তিময় পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন সময় সন্ত্রাসী হামলায় নিহত সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। মোনাজাতে দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি এবং পার্বত্য অঞ্চলের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করা হয়।







