শিরোনাম: পর্যটকের মৃত্যুঃ ট্যুর এক্সপার্ট এডমিন বর্ষা ইসলাম বৃষ্টিকে গ্রেফতার ইরান যদি আর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যায় তাহলে পাল্টা হামলায় তেহরানকে জ্বালিয়ে দেয়া হবেঃ ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ সব ধরনের বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীককে বিজয়ী করতে হবেঃ সাচিং প্রু জেরী কাতার রেডক্রস এর আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতায় অসহায়দের মাঝে মাংস বিতরন করলো বান্দরবান রেডক্রিসেন্ট যথাযোগ্য মর্যাদায় ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বান্দরবানে পবিত্র ঈদুল আযহার ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত কুহালং হেডম্যান পাড়ায় নানা আয়োজনে মাসিক স্বাস্থ্য দিবস-২৫ পালিত বান্দরবানে টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন বান্দরবানে ভূমি মেলা-২০২৫ এর উদ্বোধন করলেন জেলা প্রশাসক

পাহাড়ে থমথমে পরিস্থিতি


প্রকাশের সময় :৮ মে, ২০১৮ ১০:১৩ : পূর্বাহ্ণ 688 Views

বান্দরবান অফিসঃ-একের পর এক হত্যাকাণ্ড, সশস্ত্র তৎপরতা, অপহরণ, গুমসহ শতকোটি টাকার চাঁদা আদায়ের কেসিনু পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি ধীরে ধীরে আরো ঘণিভূত হচ্ছে। দুটি আঞ্চলিক রাজনৈতিকদলের দুই শীর্ষনেতাসহ ছয়জনকে প্রকাশ্যে দিবালোকে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যাসহ আরো আটজনকে গুলিবিদ্ধ করে আহতের ঘটনা পরবর্তী সময়ে সহিংস পরিস্থিতির এখনো পর্যন্ত কোনোপ্রকার অগ্রগতি নেই বলে মনে করছেন পাহাড়ের বাসিন্দারা।

এই ধরনের অবস্থায় দিন যত যাচ্ছে ততই আন্দোলনের নতুন নতুন শাখা-প্রশাখা বিস্তৃত হয়ে গত দুদিন পাহাড়ে পালিত হয়েছে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল। চলতি মাসের গত ৪ তারিখে নানিয়ারচরের বেতছড়িতে সশস্ত্র হামলায় প্রতিপক্ষের ব্রাশ ফায়ারে ১২ জন হতাহতের ঘটনায় সজিব নামে একজন বাঙালি মাইক্রোচালক নিহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনদফা দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা হরতাল কর্মসূচির ডাক দেয় পার্বত্য বাঙালি ছাত্রপরিষদ ও পার্বত্য নাগরিক পরিষদ।

এরই আলোকে সোমবার (০৭ মে) সকাল থেকে হরতাল শুরু হয়ে বিকেল পর্যন্ত কোনোপ্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই অনেক শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়। এর আগে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে অপর একটি সংগঠনের ব্যানারে ৭২ ঘণ্টা হরতাল পালনের ডাক দিয়ে রোববার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করে বাঙালিরা। উভয় সংগঠনই তাদের প্রথমদিনের কর্মসূচি পালন শেষে প্রশাসনের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে তাদের ওপর আস্থা রেখে পরবর্তী হরতাল কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেয়। সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

পার্বত্য বাঙালি ছাত্রপরিষদ রাঙামাটি জেলার সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, বাঙালি মাইক্রোচালক সজিবসহ ছয়জনের হত্যাকারী উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার, মাটিরাঙ্গা থেকে অপহৃত তিন বাঙালি ব্যবসায়ীকে উদ্ধারসহ সশস্ত্র তৎপরতার সঙ্গে জড়িত জেএসএস-ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধের দাবিতে তারা ৪৮ ঘণ্টা হরতালের ডাক দিয়েছেন। প্রথমদিন স্বতঃস্ফূর্তভাবে পাহাড়বাসী তাদের হরতাল কর্মসূচি পালন করেন। এসময় আমাদের দাবিগুলো প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে মেনে নিয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিলে জনদুর্ভোগ বিবেচনায় আমরা আপাতত আমাদের হরতাল কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছি।

কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ সত্যজিৎ বড়ুয়া জানিয়েছেন, রাঙামাটিতে হরতালে জনজীবনের কোনো প্রভাব ফেলেনি। তিনি বলেন, আমরা জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তায় অধিকসংখ্যক পুলিশ সদস্যকে শহরজুড়ে নিয়োজিত রেখেছি। সার্বিক পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে।

এদিকে, পার্বত্য চুক্তির সময় বিরোধীতাকারী আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট ইউপিডিএফের মুখপাত্র নিরন চাকমা জানিয়েছেন, সরকারের একটি অংশ পার্বত্য চট্টগ্রামে দমন-পীড়ন চালাচ্ছে।

তিনি বলেন, পাহাড়ের সমস্যা হলো রাজনৈতিক সমস্যা, এটিকে রাজনৈতিকভাবেই সমাধান করতে হবে। কিন্তু এটা না করে নির্মম দুটি হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করে দোষ চাপানো হচ্ছে আমাদের দলের ওপর। এটা মোটেও গণতান্ত্রিক আচরণ নয়।

তিনি বলেন, নানিয়ারচরের উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শক্তিমান চাকমাসহ নব্য মুখোশ বাহিনীর প্রধান বর্মাসহ আরো সকলের ওপর যে হামলা হয়েছে আমরা এই দুই ঘটনার কোনোটার সঙ্গেই জড়িত নাই। এই লক্ষ্যে ওই ঘটনাগুলোর ব্যাপারে আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে ওই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিও জানিয়েছি।

অন্যদিকে, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি জেএসএসের মুখপাত্র সজীব চাকমা বলেছেন, পার্বত্যচুক্তি যথাযথভাবে বাস্তবায়িত না হওয়ায় পাহাড়ে বর্তমান পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এই উত্তরণে সরকারকেই এগিয়ে আসার ওপর গুরুত্বারোপ করে জনাব সজীব চাকমা বলেন, পার্বত্য চুক্তির বাস্তবায়ন হয়ে গেলে পাহাড়ের এইসকল সকল সমস্যা থেকে উত্তরণ সম্ভব।

রাঙামাটির পুলিশ সুপার আলম কবির জানান, সার্বিক পরিস্থিতি এখন অনেকটাই শান্তিপূর্ণ এবং আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তিনি জানান, ছয়জন হত্যার ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি তবে প্রক্রিয়াধীন আছে। মামলা হলে আপনারা জানবেন।

এদিকে ইউপিডিএফর দুই নেত্রী মন্টি ও দয়াসোনা চাকমা অপহরণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরবর্তীতে সশস্ত্র হামলার ঘটনাবহুল সার্বিক পরিস্থিতির অত্যন্ত সতর্ক নজর রাখছে নিরাপত্তা বাহিনী। এমন তথ্য জানিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা জানালেন, আমরা এখনো পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। ওপরমহল পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত আপাতত কোনো পদক্ষেপের তথ্য আপনাদেরকে দিতে পারছিনা।

একদিকে দিনে-দুপুরে সশস্ত্র হামলা, ব্রাশ ফায়ারে হত্যা, বন্দুকযুদ্ধ, অপহরণসহ ব্যাপক চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত আঞ্চলিকদলীয় সন্ত্রাসীদের অভয়াশ্রম পার্বত্যাঞ্চলের বর্তমান পরিস্থিতিতে পাহাড়ের উৎকণ্ঠিত মানুষ এখন বিকেল হলেই নিজেদেরকে লুকিয়ে ফেলেন। অজানা আতঙ্ক নিয়ে কাটছে প্রতিটি মুহূর্ত।(((ভোরের পাতা.কম)))

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
June 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!