

অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর স্রষ্টার কৃপার এক অনিন্দ্য সুন্দর লীলাভূমি পার্বত্য চট্টগ্রাম। প্রাকৃতিক সম্পদ, পর্যটন সম্ভাবনা আর কৃষিক্ষেতের সাফল্যসহ সকল সম্ভাবনা ম্লান হয়ে যাচ্ছে পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর ঘাড়ে চেপে বসা এক সিন্দাবাদের ভূতের জন্য। এই সিন্দাবাদের ভূত হলো চাকমা সম্প্রদায়। পাহাড়ে বাঙ্গালীসহ ১২টি জাতি সত্ত্বার বসবাস হলেও বহু প্রাচীনকাল হতে অহংকারী, দাম্ভিক ও চতূর চাকমা সম্প্রদায় সুকৌশলে সকলের উপর তাদের কর্তৃত্ব স্থাপন করেছে। স্বাধীনতার পূর্বে চাকমা রাজা ত্রিদিব রায় পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠীর পদলেহন করে সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করেন। এমনকি তিনি পাকিস্তানের মোহে এতই মত্ত ছিলেন যে স্বাধীনতার পরেও পাকিস্তান সরকারের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় যখন সমস্ত দেশ বিধ্বস্ত, অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত তখনই চাকমা সম্প্রদায় অযাচিতভাবে স্বার্থপরের মত সমগ্র জাতি তথা দেশের কথা চিন্তা না করে বঙ্গবন্ধুর কাছে নিজেদের দাবী দাওয়া তুলে ধরে। বঙ্গবন্ধু শত প্রতিকূলতার মাঝেও সমস্ত দাবী দাওয়া পূরণের আশ্বাস দেন। কিন্তু চাকমা জনগোষ্ঠী অন্যান্য সম্প্রদায়কে প্ররোচিত করে এবং ভূল বুঝিয়ে এক সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এ সংঘাতে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ ও বাস্তুচ্যুত হয় ত্রিপুরা, মার্মাসহ অন্যান্য সম্প্রদায়। কিন্তু শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পর চুক্তির সবচেয়ে বেশী সুফল ভোগ করে চাকমারা। শিক্ষা, সরকারী চাকরি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, এনজিওসহ সকল ক্ষেত্রে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জনসংখ্যার অনুপাতে সুযোগ সুবিধা পাওয়ার কথা থাকলেও সকল সুযোগ সুবিধা একচ্ছত্রভাবে ভোগ করে চাকমারা। ১৯৯৭ সালে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পর হতে অদ্যাবধি আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যানের পদটি দখলে রেখে সকল সুযোগ সুবিধা চাকমা সম্প্রদায়কে ভোগ করাচ্ছেন তাদের নেতা জনাব সন্তু লারমা। তাইতো তিনি পাহাড়ের নেতা হয়ে উঠতে পারেন নাই। হয়েছেন চাকমাদের নেতা। পদ হারানোর ভয়ে বিভিন্ন কৌশলে ভোটার তালিকার অজুহাত দেখিয়ে যুগের পর যুগ আঞ্চলিক পরিষদের নিবার্চনকে স্থগিত করে রেখেছেন।
পাহাড়ে বর্তমান চলমান সন্ত্রাসের মূল চালিকা শক্তি চাকমা সম্প্রদায়। মাসিক ৩০০ কোটি টাকার এক বিশাল বাণিজ্য যার যোগানদার মার্মা, ত্রিপুরাসহ ১২টি সম্প্রদায় আর ভোগকারী চতুর চাকমা সম্প্রদায়। সশস্ত্র গ্রুপ, চাঁদা আদায়সহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে অন্যান্য সম্প্রদায়ের সন্তানদের ব্যবহার করা হয়। আর সেই টাকায় চাকমা নেতাদের ছেলেরা দেশে বিদেশে ডাক্তারী, ইঞ্জিনিয়ারিং আর ব্যারিস্টারি পড়ে। অন্যান্য সম্প্রদায় দিন কে দিন এভাবেই আরো পিছিয়ে পড়ছে।
সময় এসেছে পাহাড়ের সকল জনগোষ্ঠীর সচেতন হওয়ার। সকলের সচেতনতায়, ঐক্যবদ্ধ হয়ে পাহাড়ের শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নতির লক্ষ্যে পাহাড়ের ঘাড়ে চেপে বসা এ সিন্দাবাদের ভূত ঝেড়ে ফেলতে হবে, গড়ে তুলতে হবে এমন এক ব্যবস্থা যেখানে সকল সম্প্রদায় শিক্ষা, উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবাসহ সমস্ত ক্ষেত্রে পাবে সমান সুযোগ-সুবিধা।