তুমব্রুর শূন্যরেখায় রোহিঙ্গাদের জন্য হচ্ছে মাচান ঘর


প্রকাশের সময় :১০ মে, ২০১৮ ১১:৪২ : অপরাহ্ণ 823 Views

সিএইচটি নিউজ ডেস্কঃ-বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের জন্য সেখানে মাচান ঘর তৈরীর কাজ শুরু হয়েছে।বর্ষার সময়ে রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়িগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগ কমাতে এসব মাচান ঘর তৈরী করে দিচ্ছেন ঢাকার কিছু ব্যবসায়ী। প্রথম পর্যায়ে সেখানে ৪৫ পরিবারের জন্য ৯টি শেড তৈরীর কাজ শুরু হয়েছে।পরবর্তীতে আরো ৬০ ঘর তৈরী করে দেয়া হবে জিরো লাইনে।বর্তমানে তুমব্রু সীমান্তের জিরো লাইনে এক হাজার সাত পরিবারের প্রায় ৫ হাজার রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ অবস্থান করছেন।জায়গাটি তুমব্রু খাল সংলগ্ন হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে এলাকাটি পানিতে তলিয়ে যায়।আর এতে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন রোহিঙ্গারা।

 

গত বছরের আগষ্টে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক সহিংসতায় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তের জিরো লাইনে ৬ হাজারেও বেশি রোহিঙ্গা এসে অবস্থান নেন।মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের অন্য সব রোহিঙ্গাদের উখিয়ার কুতুপালং শিবিরে সরিয়ে নেয়া হলেও শুধুমাত্র তুমব্রু সীমান্তের জিরো লাইনে অবস্থানকারী রোহিঙ্গারা এখনো সেখানেই রয়ে গেছেন।মিয়ানমার বেশ কয়েকবার জিরো লাইনে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফিরিয়ে নেয়ার আশ্বাস দিলেও তাদেরকে স্বদেশে ফিরিয়ে নেয়া হয়নি।গত ৮ মাসের বেশি সময় ধরে এসব রোহিঙ্গা জিরো লাইনে কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

 

বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে রোহিঙ্গাদের দুর্ভোগ মারাত্মক আকার ধারণ করে।রোহিঙ্গাদের স্থানীয় নেতা দিল মোহাম্মদ জানান,জিরো লাইনের পশ্চিম পাশে যেসব জায়গা ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে সেখানে প্রাথমিক পর্যায়ে ৯টি বড় মাচান ঘর তৈরী করে দেয়া হচ্ছে।প্রতি শেডে ৫ পরিবার করে ৪৫ পরিবার থাকতে পারবে।তবে পর্যাক্রমে সব রোহিঙ্গার জন্য শেড তৈরী করা হবে।ঢাকার কিছু ব্যবসায়ী শেড নির্মাণের জন্য আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে বলে জানান তিনি।ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানান,বর্ষায় রোহিঙ্গাদের দুর্ভোগ নিয়ে প্রশাসন,বিজিবি,ইউএনএইচসিআর,রেডক্রিসেন্ট সোসাইটিসহ সব কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তবে ঢাকার কিছু ব্যবসায়ীর সহায়তায় বাঁশ,বেড়া, টিন দিয়ে সেখানে কিছু মাচান ঘর তৈরী করা হচ্ছে। ফলে কিছুটা হলেও দুর্ভোগ কমবে।জিরো লাইনে ঘরবাড়িগুলো নির্মাণে প্রশাসন ও বিজিবি সহযোগিতা করছে।

 

মঙ্গলবার তুমব্রু সীমান্তের জিরো লাইন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে সেখানে রোহিঙ্গারা তুমব্রু খালের পাড়ে নতুন মাচান ঘর নির্মানে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। বিজিবি সদস্যদের পাহারায় রাত-দিন ঘর নির্মাণের কাজ চলছে।মাটি থেকে ৫ ফুট উঁচু করে মাচান ঘরগুলো তৈরী করছেন রোহিঙ্গারা।রোহিঙ্গা নুরুল আমিন জানান,গত বছর আগষ্টে জিরো লাইনে আসার পর কয়েকবার এই এলাকা তুমব্রু খালের পানিতে তলিয়ে যায়।তখন রোহিঙ্গারা চরম কষ্টের মধ্যে পড়েন।এবার কিছু মাচান ঘর তৈরী করে দেয়ায় রোহিঙ্গাদের জন্য সুবিধা হবে।এদিকে জিরো লাইনে নতুন করে ঘরবাড়ি নির্মাণে মিয়ানমারের বিজিপির পক্ষ হতে এখনো কোনো প্রতিবাদ বা বাধা দেয়া হয়নি।তবে সোমবার রাতে জিরো লাইনের কাছে বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলির আওয়াজ শোনা গেছে।এতে রোহিঙ্গারা আতংকিত হয়ে পড়েন।এ বিষয়ে বিজিবির কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান জানান,জিরো লাইনের রোহিঙ্গারা এখন নিরাপদে রয়েছেন।নতুন করে ঘরবাড়ি নির্মাণে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।তিনি আরো জানান,রাতে যেসব গুলির আওয়াজ শোনা যাচ্ছে তা তাদের দেশের অভ্যন্তরে।সীমান্তে পরিস্থিতি এখন শান্ত।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
December 2025
MTWTFSS
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30 
আলোচিত খবর