শিরোনাম: ধর্ষণের দায়ে আপুই মং মারমা নামে এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন বান্দরবান সদর থানা পুলিশের প্রচেষ্টায় ২২ স্মার্ট ফোন উদ্ধারপূর্বক মালিকদের হাতে তুলে দিলো পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত ৯ ভূমি মালিক পেলেন এমআইসিআর চেক আলীকদমে ঈদুল ফিতরের উপহার সামগ্রী বিতরন করলো সেনাবাহিনী বান্দরবানে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত বান্দরবান সেনা জোন আয়োজিত ভলিবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ও পুরষ্কার বিতরন অনুষ্ঠিত স্বাধীনতা দিবসে সেনাবাহিনীতে ৫১ জনকে অনারারি কমিশন পবিত্র আল কোরআন স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ,স্পষ্ট ও সুন্দরঃ হলিউড অভিনেতা উইল স্মিথ

সামাজিক মাধ্যমে অপরাধ দমনে সাইবার প্যাট্রোলিং টিম


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :৩০ জুলাই, ২০২১ ৯:১৬ : অপরাহ্ণ 278 Views

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সাইবার প্যাট্রোলিং টিম গঠন করে নজরদারি করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। সারাদেশের জেলা ও মেট্রোপলিটন ইউনিটে সাইবার টিম গঠনসহ মনিটরিং করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। করোনায় ইউটিউব, টিকটক, লাইকি, ফেসবুক গ্রুপ, ফেসবুক পেজসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপরাধ বাড়ছে। দেশের মাঠ পর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ১০ দফা নির্দেশনা পাঠিয়েছে পুলিশ সদর দফতর। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে এ খবর জানা গেছে।

করোনাকালীন ঘরবন্দী কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীদের মাদকের মতো ভয়াবহ আসক্তি, পেশাদার অপরাধীদের নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়া, গুজব-মিথ্যাচার ছড়িয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো, সমাজে অস্থিরতার সৃষ্টির মতো অপরাধ সংগঠিত করানো হচ্ছে। দেশের মাটি ছাড়া ও বিদেশের মাটিতে বসে এই ধরনের সাইবার অপরাধ সংগঠিত করতে তৎপর এক শ্রেণীর ষড়যন্ত্রকারীরা। সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন, সামরিক-বেসামরিক আমলা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে দেশে ও বিদেশের মাটিতে বসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া এ্যাকাউন্টস খুলে অপপ্রচার ছড়ানো ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে আইনের কাঠ গড়ায় দাঁড় করানোর জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কঠোর নিয়ন্ত্রণ নিতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

পুলিশ সদর দফতর থেকে মাঠ পর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যে ১০ দফা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মনিটরিং করতে প্রতিটি জেলা ও মেট্রোপলিটন ইউনিটে সাইবার পেট্রোলিং টিম গঠন করতে হবে। জেলায় একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ বিভিন্ন পদের প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ে এই টিম করা হবে। মেট্রোপলিটন এলাকার ক্ষেত্রে একজন উপ-পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে অনুরূপ টিম গঠন করতে হবে। বিশ্বে টিকটকের সর্বোচ্চ ব্যবহারকারীদের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। দেশে প্রায় ৫ কোটি মানুষ টিকটক ব্যবহার করে। দেশে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ নেই। দেড় বছর ধরে স্কুল বন্ধ। এ কারণে মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ছে উঠতি কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীরা।

পুলিশের রেঞ্জের অধীন জেলাগুলোর সমন্বয়ে রেঞ্জ কনফারেন্স ও মেট্রোপলিটন ইউনিটগুলোর অপরাধ সভায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মনিটরিং সংক্রান্ত বিষয় পর্যালোচনা করে দিক-নির্দেশনা দিতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মনিটরিংয়ে প্রাপ্ত অপরাধজনক বিষয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের স্থানীয়ভাবে শনাক্ত করা সম্ভব না হলে সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিআইডি) অথবা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন-এর সহায়তা নিতে হবে। কোন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে অপরাধ সংঘটন করা হলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির মাধ্যমে অভিযোগ গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের সাইবার ক্রাইম সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্তের দায়িত্ব দিতে হবে। অনলাইনে নারীদের হয়রানি প্রতিরোধে আইজিপির উদ্যোগে পরিচালিত পুলিশ হেডকেয়ার্টার্সের এলআইসি শাখার সেবা পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে অবহিত করতে হবে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে বিট পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশের সভা, ওপেন হাউস ডে, চৌকিদারি প্যারেড, সচেতনতামূলক সমাবেশ প্রভৃতিতে সাধারণ জনগণকে সচেতন করতে হবে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম আয়োজন করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে শিশু-কিশোররা গ্যাং গঠন করে অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ার তথ্য পাওয়া গেলে গ্যাং সদস্যদের ধারাবাহিকভাবে নজরদারির আওতায় আনতে হবে। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্টদের নিয়ে কাউন্সেলিং করতে হবে এবং অপরাধ সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে যথাযথ প্রক্রিয়ায় আইনের আওতায় আনতে হবে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে কাজ করেন এমন সংগঠন ও সংস্থাগুলোর বিভিন্ন জরিপে জানা গেছে, উঠতি তরুণ-তরুণী, কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ৮৫ ভাগ মোবাইল ফোনকে অনিষ্টকর কাজে ব্যবহার করে। বিভিন্ন এলাকায় টিকটক গ্রুপ, কিশোর গ্যাং কালচার শুরু হয়েছে। ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া বাদ দিয়ে মাদকাসক্তসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। টিকটকের মাধ্যমে নারী ও অর্থ পাচার হচ্ছে। অশ্লীল ভিডিও তৈরিতে জড়িত লাইকি ও টিকটক ব্যবহারকারীদের তালিকা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

সমীক্ষা বলছে, এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আমাদের আধুনিক জীবনে এক নতুন বাস্তবতা। তার বদলে এসেছে স্মার্টফোন ও আইফোন নির্ভরতা। চারপাশে, দেশে-বিদেশে কী ঘটছে, সেগুলো ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, গুগলসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে পেয়ে যাচ্ছে সবাই। সারাবিশ্বে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ৭০ শতাংশ মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংযুক্ত রয়েছে। তরুণদের মধ্যে এ হার আরও বেশি, প্রায় ৯০ শতাংশ। বাংলাদেশে যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করে তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশ মানুষের রয়েছে ফেসবুক এ্যাকাউন্ট। ইন্টারনেটের মাধ্যমে এ সুযোগে সামাজিক যোগাযোগের মাত্রা অতীতের তুলনায় অনেকগুণ বেড়েছে। সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটগুলো মানবীয় যোগাযোগের সর্বাধুনিক পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে মানুষ মানবীয় যোগাযোগের ক্ষেত্রে ভৌগোলিক দূরত্বকে পুরোপুরি দূর করে দিচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হচ্ছে কম্পিউটার, স্মার্টফোন ও আইফোন। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে যে কোন ব্যক্তি তথ্য, মতামত, ছবি, ভিডিও ইত্যাদি আদান-প্রদান করতে পারে। এগুলো হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রাণ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অনলাইন সামাজিক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে সহায়তা করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে থাকে অনেক উৎস ও অনেক প্রাপক। ১৩-১৭ বছরের ছেলেমেয়েদের মধ্যে ৬০ শতাংশের বেশি অন্তত একটি সামাজিক যোগাযোগ প্রোফাইল রয়েছে। তারা দিনে দু’ঘণ্টার বেশি সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যয় করে। তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে আমাদের দেশের খুব কমসংখ্যক মানুষই ফেসবুক ব্যবহার করেন। তারপরও ছাত্র-শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিশু-কিশোর, গৃহিনী, পেশাজীবী-কে নেই ফেসবুকে ? ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসের জরিপ অনুযায়ী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল মিলিয়ে প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ সক্রিয়ভাবে ফেসবুক ব্যবহার করছে, যা এখন আরও অনেক বেড়ে গেছে।

সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিপদজনক জঙ্গী সংগঠনগুলো তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও নিজেদের সংগঠিত করার কাজে ব্যাপকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবহার করে থাকে। আইএস তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও তরুণদের সংগঠনে রিক্রুট করার কাজে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্য নিচ্ছে। তাদের রয়েছে অনলাইন ম্যাগাজিন, অনেক অনলাইন ম্যাটেরিয়াল তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়। এভাবে তারা তরুণদের উদ্বুদ্ধ করে তাদের সঙ্গে যোগ দিতে। অনেক তরুণ-তরুণী অনলাইন বক্তব্য দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে তাদের সঙ্গে যোগ দিতে গোপনে দেশত্যাগ করেছে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
March 2024
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
26272829  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!