অশ্লীলতার আরেক নাম বিগো লাইভ,বন্ধে সোচ্চার সরকার


নিউজ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ৩:৪৫ : অপরাহ্ণ 851 Views

অনলাইন দুনিয়ায় মানুষ একের পর এক জড়িয়ে পড়ছে ভয়ঙ্কর নেশায়। যা মানুষকে সামাজিক মূল্যবোধের চেতনা থেকে সরিয়ে নিচ্ছে বহুদূরে। তাই সামাজিক ও মনস্তাত্ত্বিক ক্ষতির হাত থেকে সামাজিক মূল্যবোধকে বাঁচাতে অনলাইন দুনিয়ায় নজর রাখছে সরকার। বন্ধ করা হচ্ছে পর্ন সাইট, টিকটকসহ বিভিন্ন অশ্লীলতা ছড়ানোর মাধ্যমগুলো। এবার বন্ধ করা হচ্ছে অশ্লীলতার আরেকটি মাধ্যম বিগো লাইভ।

বিগো লাইভের মতো অশ্লীল মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে বিগো’র মতো এখন ইমো লাইভেও এসব নোংরামি শুরু করেছে একটি সিন্ডিকেট। যা তরুণ-তরুণীদের মানসিক ও মনস্তাত্ত্বিক চেতনাকে হুমকির মখোমুখি করছে।

বিগো লাইভ একটি ভয়ঙ্কর নেশা। এতে আসক্ত হচ্ছে প্রতিদিন অসংখ্য নারী-পুরুষ। রাত যত বাড়ে, এই নেশায় ততই মগ্ন হতে থাকে তরুণ প্রজন্ম। শুধু তারুণরাই নয়, সব বয়সী মানুষ ভার্চুয়াল জগতের এই নেশায় পা বাড়াতে শুরু করেছে।

বিগো লাইভে চলে নগ্নতার মহোৎসব। বিকাশে টাকা পাঠাও। আমাকে কে কে চাও? আবার কেউ কেউ বলছে, আমাকে পেতে খুব বেশি টাকা লাগবে না, এক হাজার টাকা দিলেই হবে- রাত বাড়ার সাথে সাথে এমন অশ্লীলতা ছড়াচ্ছে বিগো লাইভে। কখনো এই অ্যাপসের মাধ্যমে গানের তালে তালে শরীর প্রদর্শন করছে নারীরা। অনেকের শরীরে নেই কোনো কাপড়। টাকার বিনিময়ে দিচ্ছে সাময়িক উত্তেজনা। আবার কারো কারো মুখে দুর্দান্ত মেকআপ। কণ্ঠে ভয়াবহ সব অশ্লীল কথা।

বিগো লাইভের নামে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি সিন্ডিকেট। বিগো লাইভ অ্যাপ ব্যবহার করে একশ্রেণির মেয়েরা প্রতিদিন রাতে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রবাসী তরুণদের কাছ থেকে। তরুণদের যৌনতার ফাঁদে ফেলে তারা কৌশলে বিকাশের মাধ্যমে টাকা নিচ্ছে।

জানা যায়, সিঙ্গাপুরভিত্তিক ইন্টারনেট কোম্পানি বিগো টেকনোলজি ২০১৬ সালে বিগো লাইভ চালু করে থাইল্যান্ডে। থাইল্যান্ডে বর্তমানে ‘অ্যাপল স্টোর’ও ‘গুগল প্লে স্টোরে’এই অ্যাপসটি র‌্যাংকিং প্রথম স্থানে রয়েছে। থাইল্যান্ডে ভার্চুয়ালি যৌনতার বিস্তারে এই অ্যাপটি ব্যাপকহারে ব্যবহৃত হচ্ছে। থাইল্যান্ডের পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে বিগো লাইভ।

বর্তমানে বাংলাদেশে বিপুলসংখ্যক ব্যবহারকারী এই অ্যাপে সময় কাটাচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত বিগো লাইভের বেশিরভাগ আইডি ফলো করে দেখা গেছে, রাত বাড়লেই অশ্লীল কার্যকলাপে মেতে উঠছেন এসব ব্যবহারকারী। তাদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে শত শত তরুণ-তরুণী। বাসা বাড়িও এখন ডিজিটাল যৌনপল্লী পরিণত হয়েছে এই অ্যাপটির মাধ্যমে। ১ ঘণ্টা কথা বলতে ১ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ করছে অনেকে।

অ্যাপস ব্যবহার করে এ ধরনের প্রতারণার ঘটনায় সরকারের পাশাপাশি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। সামাজিক অবক্ষয় থেকে দেশের তরুণ সমাজকে রক্ষা করতে এই সফটওয়্যারটিও নিষিদ্ধ করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে একজন সমাজ বিজ্ঞানী ড. জিনাত হুদা বলেন, সরকার বর্তমানে সমাজ ও মানুষের মূল্যবোধ জাগ্রত করে একটি সুষ্ঠু সমাজ গঠনে অনলাইন দুনিয়া কেন্দ্রিক যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করছে তা সত্যিই প্রশংসা দাবি রাখে। সরকারের গৃহীত ব্যবস্থার পাশাপাশি এসব নৈতিক অবক্ষয় বন্ধ করতে নানা ধরণের সচেতনমূলক প্রচারণারও তাগিদ দেন এই সমাজ বিজ্ঞানী।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
December 2025
MTWTFSS
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30 
আলোচিত খবর